1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিতর্কিত কপিরাইট সংস্কার অনুমোদন করল ইইউ

২৬ মার্চ ২০১৯

ইউরোপীয় ইউনিয়নের কপিরাইট আইনের সংস্কার কি ডিজিটাল যুগের পতনের সূচনা করবে? নাকি এটা শুধু শিল্পীদের প্রাপ্য সম্মানী নিশ্চিত করবে? এই বিতর্কের মধ্যেই মঙ্গলবার প্রস্তাবিত সংস্কার অনুমোদন করেছে ইউরোপীয় সংসদ৷

https://p.dw.com/p/3Ffav
Stuttgart  Proteste gegen EU-Urheberrechtsreform
ছবি: picture-alliance/dpa/S. Gollnow

ইন্টারনেট পিটিশনের জন্য বিখ্যাত প্ল্যাটফর্ম ‘চেঞ্জ ডটঅর্গ'-এ একটি পিটিশনে পঞ্চাশ লাখের বেশি স্বাক্ষর জমা হয়েছে৷ ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বর্তমান কপিরাইট আইনের যে সংস্কার করতে চাচ্ছে, সেই সংস্কারের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন এই বিশাল সংখ্যক মানুষ৷ যদিও এসব ভোট ঠিক কারা দিয়েছেন কিংবা কম্পিউটারের মাধ্যমে সেখানে কারচুপি করা হয়েছে কিনা, তা স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি৷ তবে এই পিটিশনের উদ্দেশ্য হচ্ছে, ইউরোপীয় সংসদের আইনপ্রণেতাদের (এমইপি) উপর এই বিষয়ে চাপ প্রয়োগ করা, যাতে তারা প্রস্তাবিত সংস্কার প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দেন৷

সংস্কার প্রস্তাবের যে সুনির্দিষ্ট অংশটি নিয়ে ডিজিটাল দুনিয়ায় উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে সেটি প্রথম ‘আর্টিকেল ১৩'-তে উত্থাপিত হয়েছিল৷ এখন সেটি ‘আর্টিকেল ১৭'-তে রয়েছে৷ এই আইন অনুযায়ী, ভবিষ্যতে অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোকে কপিরাইট আইনে অবৈধ হিসেবে বিবেচিত সব ভিডিও এবং মিউজিক সরিয়ে ফেলতে হবে৷

সমালোচকরা বলছেন, এই আইন পাস হলে সেটি মানতে গিয়ে অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলো স্বয়ংক্রিয় ফিল্টার বসাতে পারে৷ দেখা যাবে ইউটিউব এমন এক ফিল্টার প্রয়োগ করবে যেটি কোনো ভিডিও আপলোড হওয়ার সময়ই সেটিতে কপিরাইট আইন অমান্য হওয়ার মতো কিছু আছে কিনা, তা পরীক্ষা করবে এবং প্রয়োজনে আপলোডে বাধা দেবে৷ সমস্যা হচ্ছে, এধরনের স্বয়ংক্রিয় ফিল্টারের ভুল করার আশঙ্কা অনেক বেশি৷ যদিও এমন ফিল্টার বসানোর কথা প্রস্তাবিত সংস্কারে নেই, তথাপি এই ব্যবস্থা ছাড়া  ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোর  কাছে বাস্তবসম্মত আর কোনো উপায়ও নেই৷ ইন্টারনেট নীতি বিশেষজ্ঞ এবং অ্যাক্টিভিস্টরা মনে করছেন, এই ফিল্টারের কারণে বৈধ ভিডিও আপলোড করাও বাধার মুখে পড়বে৷

আপলোড ফিল্টার নিয়ে শঙ্কা

বিতর্কিত সংস্কার প্রস্তাবের সমালোচকরা এমনটাও বলছেন যে আইনটি পাস হলে ইন্টারনেট বর্তমানে যে অবস্থায় আছে সেই অবস্থায় আর থাকতে পারবে না৷ তবে জার্মানির রক্ষণশীল খ্রিষ্টীয় গণতন্ত্রী দল সিডিইউ'র এমইপি আক্সেল ফস সমালোচকদের এই যুক্তিকে বিষয়টি অতিরঞ্জিত করা হচ্ছে বলে উড়িয়ে দিয়েছেন৷

ইউরোপীয় কমিশনের কপিরাইট আইন সংস্কারের প্রস্তাব ইউরোপীয় ইউনিয়নে উত্থাপনের উপযোগী করেছেন ফস৷ বিভিন্ন সময়ে দেয়া সাক্ষাৎকারে সংস্কার প্রস্তাবের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেছেন তিনি৷

Axel Voss CDU Europäisches Parlament
কপিরাইট আইন সংস্কারের উদ্দেশ্য আপলোড ফিল্টার চালু করা নয়: আক্সেল ফসছবি: picture-alliance/dpa

জার্মান রেডিও ডয়েচল্যান্ডফুঙ্ক নোভাকে তিনি বলেন, ‘‘কপিরাইট আইন সংস্কারের উদ্দেশ্য আপলোড ফিল্টার চালু করা নয়, বরং শিল্পীদের কাজের ব্যবহার অনুযায়ী প্রাপ্য মজুরি নিশ্চিত করা৷'' এক্ষেত্রে প্লাটফর্মগুলো চাইলে ‘ফ্ল্যাটরেট' অর্থাৎ শিল্পীদের তাঁদের কাজের জন্য নির্দিষ্ট মেয়াদে অর্থ পরিশোধও করতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি৷

জার্মানিতে প্রতিবাদ

প্রসঙ্গত, আর্টিকেল ১৩ নিয়ে জার্মানিতেও ব্যাপক বিতর্ক চলছে৷ গত সপ্তাহান্তে জার্মানির চল্লিশটি শহরে সংস্কার প্রস্তাবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হয়েছে৷ সিডিইউ এমইপি ডানিয়েল কাস্পার অবশ্য দাবি করেছেন, বিভিন্ন লবি ফার্মের ইন্ধনে রাস্তায় নেমেছিল বিক্ষোভকারীরা৷ আর সেসব লবি ফার্ম নাকি বিভিন্ন মার্কিন ইন্টারনেট কোম্পানির স্বার্থ রক্ষা করছে৷

বলাবাহুল্য, কাস্পারের এই মন্তব্য ইন্টারনেটে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে এবং অনেকেই তাঁর এই বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন৷ অন্যদিকে, ফস হত্যার হুমকি পেয়েছেন৷ এমনকি বন শহরে তাঁর কার্যালয়ও বোমা হামলার হুমকি পেয়েছে৷

জার্মানির মধ্যবামপন্থি সামাজিক গণতন্ত্রী দল (এসপিডি) অবশ্য প্রতিবাদকারীদের পক্ষ নিয়েছে এবং মঙ্গলবার ইউরোপীয় সংসদে প্রস্তাবটির বিরুদ্ধে মত দিয়েছে৷ যদিও তাতে শেষরক্ষা হয়নি৷  মঙ্গলবার ভোটাভুটিতে কপিরাইট আইন সংস্কারের পক্ষে মত দিয়েছে ইইউ সংসদ৷ এখন ফেসবুক এবং ইউটিউবের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো এই আইন মানতে কী ধরনের উদ্যোগ নেয় সেটাই দেখার বিষয়৷   

ব্যার্নড রিগার্ট/এআই

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য