প্রতিবাদের ঢেউ থামছেনা সিরিয়ায়
৮ জুলাই ২০১১সাধারণত জুম্মার নামাজকে কেন্দ্র করে প্রতিবাদ বিক্ষোভ জোরদার হয়৷ আজও সেটাই হয়েছে৷ বিক্ষোভ নগরী বলে পরিচিত হামায় হাজার হাজার প্রতিবাদী মানুষ সমবেত হন৷ প্রেসিডেন্ট আসাদের বিরুদ্দ্ধে সবচেয়ে বড় বড় বিক্ষোভগুলো এ পর্যন্ত হয়েছে এই শহরেই৷ এবং তা ভাঙতে শহরের বাইরে ট্যাঙ্ক বসিয়ে রাখা হয়েছে৷ আসাদের বাবা হাফেজ আল-আসাদ ৩০ বছর আগে এই শহরের প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধেই নিষ্ঠুর দমন অভিয়ান চালান৷ ইন্টারনেটের লাইভ ফুটেজে দেখা গেছে, শহরের ওরোন্টেস চত্বরে বিরাট জনতা৷ তাদের কারও কারও হাতে সিরিয়ার বিশাল পতাকা৷
মার্কিন আর ফরাসি রাষ্ট্রদূতদের হামা সফরের কারণ
সিরিয়ায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত রবার্ট ফোর্ড বৃহস্পতিবার হামা সফর করার পর আজ শুক্রবার সেখানে গেলেন ফরাসি রাষ্ট্রদূত এরিক শেভালিয়ে৷ বলা হয়েছে, গণতন্ত্রকামী প্রতিবাদকারীদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করতেই এই সফর৷ মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সিরিয়ায় যারা পরিবর্তনের পক্ষে নিজেদের অধিকার প্রকাশ করছে, তাদের পাশেই রয়েছে ওয়াশিংটন - এটা তাঁর উপস্থিতির মধ্য দিয়ে স্পষ্ট করে তুলে ধরাটাই মূল লক্ষ্য৷ হামার বাসিন্দারা জানান, রাষ্ট্রদূত ফোর্ড হামার হুরানি হাসপাতাল ঘুরে দেখেন৷ চলতি সপ্তাহে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা বাহিনীর সহিংস হামলায় আহতদের কেউ কেউ এই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন৷ হামলায় অন্ত ২৬ জন নিহত হয়৷
সিরিয়া সরকারের প্রতিক্রিয়া
সিরিয়া এই সফরের কঠোর নিন্দা করেছে৷ সিরিয়া সরকার মনে করে, এটা পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটানোর প্ররোচনা মাত্র৷ সিরিয়ার বর্তমান ঘটনাবলির সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্টতা যে রয়েছে, এটা তারই প্রমাণ দেয়, অভিযোগ দামেস্ক সরকারের৷ তারা বলছে, এই সফর ঘটেছে কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই৷ মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর অবশ্য বলেছে, মার্কিন দূতাবাস সিরিয়া সরকারকে জানিয়েছিল যে দূতাবাসের একটি টিম হামা যাচ্ছে৷
মিসরে আবার নতুন করে বিক্ষোভ কেন
প্রেসিডেন্ট হোসনি মুবারককে সরিয়ে দিতে পারলেও মিসরের প্রতিবাদী জনগণ অন্তর্বর্তী সামরিক শাসকদের সংস্কারের মন্থর গতিতে ক্রুদ্ধ হয়ে উঠছে৷ তারই প্রকাশ ঘটে আজ জুম্মার নামাজকে সামনে রেখে৷ ঐতিহাসিক তাহরির স্কোয়ারে সমবেত হয় হাজার হাজার মানুষ ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা উপেক্ষা করে৷ একটি ব্যানারে লেখা ছিল: ‘‘আমাদের বিপ্লব চলছে, চলবে৷''
বিক্ষোভকারীদের একজনের মন্তব্য: ‘‘বিপ্লব কিছু স্বাধীনতা এনে দিয়েছে৷ কিন্তু আরো দরকার৷'' আর একজন জানান, ‘‘বদলায়নি কিছুই৷ মুবারক ক্ষমতাচ্যুত হবার পাঁচ মাস পরেও আমাদের লক্ষ্য আমরা অর্জন করতে পারিনি৷ আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়, বিচার বিভাগ সহ সব কটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান থেকে সাবেক শাসক গোষ্ঠীর অনুগত লোকদের বের করে দেয়া হোক৷'' এছাড়া, আলেকজান্দ্রিয়া আর সুয়েজ শহরেও মানুষ প্রতিবাদ জানান আজ৷
প্রতিবেদন: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন