পুটিনকে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করতে বললেন শলৎস
২৩ নভেম্বর ২০২৩ইউক্রেনের উপর হামলার কারণে পশ্চিমা বিশ্বে একঘরে হয়ে পড়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন৷ আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতের শমনের কারণে সহজে বিদেশ সফরও করতে পাচ্ছেন না তিনি৷ ইন্দোনেশিয়া ও ভারতে জি-টোয়েন্টি বৈঠকে পুটিনের বদলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ রাশিয়ার প্রতিনিধিত্ব করেছেন৷ বুধবার জি-টোয়েন্টি গোষ্ঠীর ভার্চুয়াল শীর্ষ বৈঠকে তিনি যোগ দিয়ে সরাসরি একাধিক বিশ্বনেতার রোষের মুখে পড়লেন রুশ প্রেসিডেন্ট৷
জি-টোয়েন্টি ভার্চুয়াল সম্মেলনে যোগ দিয়ে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস বলেন, তিনি পুটিনকে সরাসরি ইউক্রেনের উপর হামলা বন্ধ করে সেখান থেকে সব রুশ সৈন্য প্রত্যাহারের ডাক দিয়েছেন৷ অবশেষে এই যুদ্ধ শেষ করার উপর জোর দেন তিনি৷ বার্লিনে এক সংবাদ সম্মেলনে শলৎস আরো বলেন, একাধিক জি-টোয়েন্টি নেতা পুটিনকে একই বার্তা দিয়েছেন৷ তাঁকে সে সব কথা শুনতে হয়েছে৷ উল্লেখ্য, এই লোকচক্ষুর আড়ালে এই ভার্চুয়াল বৈঠক সম্পর্কে জানতে অংশগ্রহণকারী নেতাদের বিবৃতির উপর নির্ভর করতে হচ্ছে৷
বার্লিন সফররত ইটালির প্রধানমন্ত্রী জর্জা মেলোনি শলৎসের বক্তব্যের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেন, মস্কো ত্যাগ করতে না হওয়ায় পুটিনের পক্ষে এই সম্মেলনে যোগ দেওয়া সহজ হয়েছে৷ পুটিন ইউক্রেনে শান্তির যে প্রস্তাব দিয়েছেন, তাকে স্বাগত জানিয়ে মেলোনি বলেন, এটা ভুলে গেলে চলবে না ইউক্রেন সংকটে এক পক্ষ হামলাকারি এবং অন্য পক্ষ আক্রান্ত হয়েছে৷ মেলোনির মতে, দখল করা ভূখণ্ড থেকে সেনা প্রত্যাহার করা রাশিয়ার জন্য সহজ৷
আরো পড়ুন-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব
রাশিয়াও জি-টোয়েন্টি বৈঠক সম্পর্কে বিবৃতি দিয়েছে৷ বেশ কয়েকজন নেতা যে তাদের বক্তব্যে ইউক্রেনে রাশিয়ার লাগাতার হামলা সম্পর্কে উষ্মা প্রকাশ করেছেন, ক্রেমলিন তা অস্বীকার করে নি৷ পুটিন নিজেও বলেন, যে যুদ্ধ সব সময় ট্র্যাজিডি বহন করে আনে৷ তার দাবি, রাশিয়া কখনো শান্তি আলোচনার পথ বন্ধ না করলেও ইউক্রেনই অনড় অবস্থান দেখিয়ে চলেছে৷
তিনি ২০২৪ সালে কিয়েভে ইউরোপ-পন্থি বিক্ষোভকে ‘রক্তাক্ত অভ্যুত্থান' হিসেবে বর্ণনা করে সেই ঘটনাকেই বর্তমান সংকটের জন্য দায়ী করেন৷ বর্তমানে বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক সমস্যা ও বেড়ে চলা মূল্যস্ফীতির জন্য তিনি পশ্চিমা বিশ্বকে দায়ী করেন৷ পুটিনের মতে, করোনা সংকটের সময়ে কয়েক হাজার কোটি মার্কিন ডলার ও ইউরো বিশ্ব অর্থনীতিতে ঢালার কারণে বিশেষ করে খাদ্য ও জ্বালানির দাম বেড়ে গেছে, যার ফলে বিশেষ করে দরিদ্র দেশগুলির সমস্যা হচ্ছে৷ তিনি রাশিয়ার উপর পশ্চিমা বিশ্বের কড়া নিষেধাজ্ঞাকেও বিশ্ব অর্থনীতির বর্তমান সংকটের জন্য দায়ী করেন৷ তবে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করে সেখান থেকে সেনা প্রত্যাহারের ডাক সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেন নি রুশ প্রেসিডেন্ট৷
এসবি/কেএম (এএফপি, ডিপিএ)