রাশিয়ার উপর চাপ বাড়িয়ে চলেছে ইউক্রেন
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩রাশিয়ার হাত থেকে অধিকৃত এলাকা পুনরুদ্ধার এবং ২০১৪ সালে দখল করা ক্রাইমিয়া উপদ্বীপে হামলা চালানোর ক্ষেত্রে ইউক্রেন কিছু সাফল্য দাবি করছে৷ রোববার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি তাঁর দৈনিক ভিডিও বার্তায় বলেন, বাখমুত শহরের দক্ষিণে ক্লিশচিভকা গ্রাম ইউক্রেনের সৈন্যদের নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে৷ তাঁর মতে, ধাপে ধাপে গোটা বাখমুত শহরও আবার শত্রুমুক্ত করা হবে৷ ইউক্রেনের স্থলবাহিনীর প্রধান ওলেক্সান্ডার সিরস্কি সেই গ্রামে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের একটি ভিডিও প্রকাশ করেন৷ নিরপেক্ষভাবে সেই দাবি যাচাই করা এখনো সম্ভব হয় নি৷ মস্কোও বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করে নি৷
রাশিয়ার বিরুদ্ধে পালটা অভিযানে ইউক্রেন এখনো তেমন উল্লেখযোগ্য সাফল্য না পেলেও বাখমুত শহরের কাছে কিছু এলাকা পুনর্দখলের মাধ্যমে দেশের দক্ষিণে রুশ হানাদার বাহিনীকে তাড়ানোর কাজ সহজ হবে বলে অনেক সামরিক বিশ্লেষক মনে করছেন৷ ইলিয়া ইভলাশ নামের এক সামরিক মুখপাত্র বলেন, এই সংঘাতে রুশ বাহিনীর এয়ারবোর্ন ইউনিট এবং চেচেন নেতা রামজান কাদিরভের ‘আখমাত' বাহিনীর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে৷ সেইসঙ্গে রুশ অপরাধীদের ইউনিট ‘স্টর্ম জেড', সামরিক গোয়েন্দা বাহিনী ও মোটোরাইজড রাইফেল ইউনিটও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷ টেলিগ্রাম চ্যানেলে সেই দাবি করে ইভলাশ লেখেন, যে এই সাফল্যের ফলে হানাদার বাহিনীর হাত থেকে দেশের অনেক অংশ পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে আরও সুবিধা হবে৷
রোববারই ক্রাইমিয়া উপদ্বীপে কমপক্ষে নয়টি ড্রোন হামলার কথা জানিয়েছে রাশিয়া৷ মস্কোর উপকণ্ঠে ও দুটি সীমান্ত এলাকায়ও এমন হামলা ঘটেছে৷ রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় টেলিগ্রাম চ্যানেলে অবশ্য সব ড্রোন হামলা বানচাল করা হয়েছে বলে দাবি করেছে৷ মোট ১৩টি হামলার উল্লেখ করেছে রাশিয়া৷ তবে কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের উল্লেখ করে নি মস্কো৷ শুধু ইউক্রেনের পূর্বে খারকিভ শহরে এক সামরিক যান মেরামতির কারখানায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ক্ষতির কথা স্বীকার করা হয়েছে৷
ইউক্রেন ও রাশিয়ার সংঘাত শুধু যুদ্ধক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ নেই৷ জাতিসংঘের মানবাধিকার আদালতেও সোমবার থেকে দুই দেশ নিজস্ব অবস্থান তুলে ধরছে৷ গত বছর ইউক্রেনের উপর হামলার অজুহাত হিসেবে রাশিয়া ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে গণহত্যার দাবি তুলেছিল৷ দুই পক্ষের বক্তব্য শুনে আদালতের রাশিয়ার চলমান সামরিক পদত্রেপ বন্ধ করার নির্দেশ দেবার এক্তিয়ার আছে কিনা, সে দিকে সবার নজর থাকবে৷ ২০২২ সালের ২৪শে ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার হামলা শুরু হবার দুই দিন পর ইউক্রেন জাতিসংঘের আদালতের দ্বারস্থ হয়৷ সে বছর মার্চ মাসে আদালত ইউক্রেনের পক্ষে অবস্থান নিয়ে অবিলম্বে সামরিক অভিযান বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিল৷ কিন্তু সেই ‘প্রাথমিক রায়' সত্ত্বেও আদালতের এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন ওঠে৷ তাছাড়া জাতিসংঘের রায় কার্যকর করা বাধ্যতামূলক হলেও সেটি নিশ্চিত করতে আদালতের হাতে কোনো পুলিশ বাহিনী নেই৷ রাশিয়ার মতে, এ ক্ষেত্রে আদালতের কোনো এক্তিয়ার নেই৷
এসবি/কেএম (রয়টার্স, এএফপি)