নেদারল্যান্ডসে আশ্রয় চাইলেন আসিয়ার আইনজীবী
৭ নভেম্বর ২০১৮ব্লাসফেমি আইনে প্রায় এক দশক জেলে থাকার পরআসিয়া বিবি মৃত্যুদণ্ড থেকে রেহাই পান৷ তাঁর হয়ে মামলাটি লড়ছিলেন আইনজীবী সাইফ-উল-মুলুক৷ অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট আসিয়ার মৃত্যুদণ্ডাদেশ খারিজ করে৷
এই রায়ের প্রতিবাদে কট্টর ইসলামপন্থিরা লাহোর ও ইসলামাবাদের মূল সড়ক অবরোধ করে ও এই মামলার সাথে যুক্ত বিচারকদের এবং যাঁরা আসিয়াকে মুক্ত করতে সহযোগিতা করেছেন, প্রকাশ্যে তাঁদের মৃত্যু কামনা করেন৷ রায় ঘোষণার আগে, কট্টরপন্থি মৌলভী খাদিম হুসেইন রিজভি রাস্তায় নেমে লাখো মানুষকে বিক্ষোভে অংশ নিতে আহ্বান জানিয়েছিলেন৷ প্রতিটি বড় শহরে লোকজনকে জমায়েত হওয়ার নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, যাঁরা মহানবীকে (সা.) ভালোবাসেন তাঁদের উচিত আসিয়া বিবির মুক্তির বিরোধিতা করা৷
এই মামলা ঘিরে বর্তমানে পাকিস্তান বিভাজিত৷ সুপ্রিম কোর্টের রায় আসিয়ার পক্ষে৷ কিন্তু কট্টরপন্থিদের সাথে হাত মিলিয়ে সরকার ইতিমধ্যে এই রায়ের পুনর্বিবেচনা করতে দিচ্ছে৷ শুধু তাই নয়, আসিয়ার দেশ ছেড়ে কোনো নিরাপদ দেশে যেতে পারার সম্ভাবনাও কমে যাচ্ছে দ্রুত৷
ডয়চে ভেলেকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে আসিয়ার স্বামী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে ও ক্যানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর কাছে এ বিষয়ে সাহায্য চেয়েছেন৷
যদিও আসিয়াকে জেল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে, তবুও তাঁর ওপর সর্বক্ষণ নজর রাখা হচ্ছে বলে ডয়চে ভেলেকে জানান পাকিস্তানের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরি৷
তিনি বলেন, ‘‘আসিয়ার জন্য কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ পাকিস্তানে তিনি সম্পূর্ণ নিরাপদ৷''
মন্ত্রীর আশ্বাস সত্ত্বেও আসিয়া বা আইনজীবী সাইফ-উল-মুলুকের ভয় কমছে না৷
ব্লাসফেমি আইনে অভিযুক্ত আসিয়ার আইনজীবী নেদারল্যান্ডসের একটি সংবাদ মাধ্যমকে ইতিমধ্যে জানিয়েছেন তাঁর প্রাণের ঝুঁকির কথা৷ সেখানে তিনি নেদারল্যান্ডসে রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য আবেদন করার কথাও উল্লেখ করেছেন৷
এর আগে ডয়চে ভেলেকে সাইফ বলেন যে, তাঁর নিরাপত্তা এখন সারা বিশ্বের দায়িত্ব৷ কারণ এখন তিনি আক্রান্ত হলে ভবিষ্যতে পাকিস্তানে ব্লাসফেমি আইনের বিরুদ্ধে আর কোনো আইনজীবীই লড়তে রাজি হবেন না৷
এসএস/ডিজি (রয়টার্স)