ডেল্টা মোকাবিলায় টিকা নেয়ার আহ্বান জার্মান স্বাস্থ্যমন্ত্রীর
২ জুলাই ২০২১বিশ্বের অনেক প্রান্তের মতো জার্মানিতেও করোনা ভাইরাসের চরম ছোঁয়াচে ডেল্টা ভেরিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়েন্স স্পান৷ সংক্রমণের সার্বিক হার কমে চললেও ডেল্টার কারণে সেই সাফল্য হুমকির মুখে পড়েছে৷ এই অবস্থায় তিনি সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে দ্রুত করোনা টিকার দুটি ডোজ নেবার আবেদন করেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘ডেল্টা জার্মানিতে ছড়িয়ে পড়ার সুযোগ পাবে কিনা, তা আমাদের উপর নির্ভর করছে৷’’ তাঁর মতে, জার্মানির মানুষ আগামী হেমন্ত কালের করোনা পরিস্থিতি সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন৷
জার্মানির রবার্ট কখ ইনস্টিটিউটের অনুমান অনুযায়ী বর্তমানে দেশে করোনায় আক্রান্ত মানুষের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি ডেল্টা সংস্করণ বহন করছেন৷ তবে আশার কথা এই যে, করোনা টিকার সবকটি ডোজ পেলে সংক্রমণের ঝুঁকি নগণ্য৷ করোনা টিকার সরবরাহে আপাতত কোনো ঘাটতি নেই৷ জার্মানিতে অর্ধেকেরও বেশি মানুষ টিকার প্রথম ডোজ পেয়ে গেছেন৷ অনেকে ঠিক সময়ে দ্বিতীয় ডোজ নিচ্ছেন না বলে সম্পূর্ণ সুরক্ষা থেকে তারা বঞ্চিত হচ্ছেন৷ তাই করোনা টিকা সম্পর্কে সচেতনতা আরও বাড়াতে প্রশাসন উদ্যোগ নিচ্ছে৷ আগামী বছরগুলিতেও করোনা টিকার সরবরাহ নিশ্চিত করতে জার্মান সরকার পদক্ষেপ নিচ্ছে৷
এদিকে জার্মানির ভ্যাকসিন কমিটি অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা সম্পর্কে নতুন পরামর্শ দিয়েছে৷ যারা এই টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছেন, তাদের দ্বিতীয় ডোজ হিসেবে বায়োনটেক-ফাইজার অথবা মডার্না কোম্পানির টিকা নেওয়া উচিত বলে মনে করছে এই কমিটি৷ অ্যাস্ট্রাজেনেকার মতো ভেক্টর প্রযুক্তির টিকার সঙ্গে মেসেঞ্জার আরএনএ টিকার সমন্বয় ঘটালে করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় আরও প্রতিরোধ গড়ে তোলা সম্ভব৷ শুধু অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার দুটি ডোজ সেই সুরক্ষা দিতে পারে না বলে মনে করছে জার্মানির ভ্যাকসিন কমিটি৷ দুটি ডোজের মাঝে চার সপ্তাহের বিরতি যথেষ্ট বলে কমিটি মনে করে৷ উল্লেখ্য, খোদ জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল প্রথম ডোজ হিসেবে অ্যাস্ট্রাজেনেকা এবং দ্বিতীয় ডোজ হিসেবে মডার্না কোম্পানির টিকা নিয়েছেন৷
জার্মানি একা ডেল্টা সংস্করণের বিরুদ্ধে সংগ্রামে কতটা সফল হবে, সে বিষয়ে সংশয় দেখা দিচ্ছে৷ বিশেষ করে গ্রীষ্মের ছুটির মরসুমে ইউরোপের অন্যান্য দেশে ভ্রমণের পর পর্যটকরা দেশে ফিরলে করোনা ভাইরাসের ডেল্টা সংস্করণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে৷ জার্মানির স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্পান বলেন, সর্বোচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার তালিকায় এই মুহূর্তে পর্তুগাল ও ব্রিটেনকে রাখা হলেও অদূর ভবিষ্যতে ঝুঁকি কমার সম্ভাবনা রয়েছে৷
পর্তুগালের করোনা পরিস্থিতির সামান্য উন্নতির লক্ষণ দেখা দিলেও প্রতিবেশী দেশ স্পেনে সংক্রমণের হার আবার দ্রুত বেড়ে চলেছে৷ এপ্রিল মাসের পর বৃহস্পতিবার আবার বারো হাজারেরও বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন৷ প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে সাপ্তাহিক গড় সংক্রমণের হার ১৩৪ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ জার্মানিতে সেই হার আপাতত প্রায় পাঁচ৷ অথচ স্পেনে টিকাদান কর্মসূচি যথেষ্ট গতি পাচ্ছে৷ ইউরোপে সার্বিকভাবে ডেল্টা সংস্করণের কারণে করোনা সংক্রমণের হার বাড়বে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷
এসবি/জেডএইচ (ডিপিএ, এএফপি)
২৬ মের ছবিঘরটি দেখুন...