ব্রিটেনকেও বিচ্ছিন্ন করতে চায় জার্মানি?
২৮ জুন ২০২১করোনা সংকটের মোকাবিলায় প্রায় যে কোনো সাফল্যই যে সাময়িক থেকে যাচ্ছে, বার বার তা স্পষ্ট হয়ে উঠছে৷ করোনা ভাইরাসের নিত্য-নতুন ভেরিয়েন্ট সেই সাফল্যকে ম্লান করে দিচ্ছে৷ করোনা টিকাদান কর্মসূচির ক্ষেত্রে অগ্রগতি সত্ত্বেও বিশ্বের অনেক প্রান্তে আরও ছোঁয়াচে ও কিছু ক্ষেত্রে আরও মারাত্মক ডেল্টা সংস্করণ মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে৷ ইসরায়েল ও অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশও করোনা মোকাবিলায় প্রার্থমিক সাফল্য সত্ত্বেও দুশ্চিন্তায় ভুগছে৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নেও অপেক্ষাকৃত ‘স্বাভাবিক' গ্রীষ্মের আশা প্রশ্নের মুখে পড়ছে৷
এমনই প্রেক্ষাপটে ডেল্টা সংস্করণের দ্রুত প্রসার নিয়ন্ত্রণে আনতে জার্মানি সীমান্তে আরও কড়া পদক্ষেপের কথা ভাবছে৷ মঙ্গলবার থেকে পর্তুগাল ও রাশিয়া ভ্রমণের উপর কড়া নিয়ন্ত্রণ চাপানো হচ্ছে৷ সোমবারের মধ্যে পর্তুগাল থেকে জার্মান নাগরিক ও জার্মানিতে বসবাসরত বিদেশিদের দেশে ফেরার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে৷ তারপর পর্তুগালের সঙ্গে যোগাযোগ কমপক্ষে দুই সপ্তাহের জন্য প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবার কথা৷ এর পর পর্তুগাল থেকে জার্মানিতে প্রবেশ করলে এমনকি টিকাপ্রাপ্তদেরও দুই সপ্তাহের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে৷
এবার ব্রিটেনের ক্ষেত্রেও কড়া বিধি আরোপের সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে৷ ‘দ্য টাইমস' সংবাদপত্রের সূত্র অনুযায়ী, ব্রিটেনের ভ্রামণিকদের আগমন নিষিদ্ধ করার পথে এগোচ্ছে জার্মানি৷ এমনকি টিকাপ্রাপ্তদের ক্ষেত্রেও সেই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হতে পারে৷ সেই রিপোর্ট অনুযায়ী জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ব্রিটেনকে ‘কান্ট্রি অফ কনসার্ন' হিসেবে ঘোষণা করে এমন কড়া পদক্ষেপ নিতে চান৷ ইইউ স্তরে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবার কথা৷
গ্রিস, স্পেন, সাইপ্রাস, মাল্টা ও পর্তুগালের মতো দেশ পর্যটন শিল্পের স্বার্থে ডেল্টা ভেরিয়েন্টের দাপট সত্ত্বেও ব্রিটিশ পর্যটকদের আগমনের উপর এতকাল তেমন কোনো কড়া নিয়ন্ত্রণ চাপায় নি৷ গোটা ইউরোপীয় ইউনিয়নে সে দেশের পর্যটকদের উপর ঢালাও নিষেধাজ্ঞা চাপানোর বিরোধিতা করতে পারে এই দেশগুলি৷ ইইউ স্তরে বিষয়টি নিয়ে মতপার্থক্যের কারণে ডেল্টা ভেরিয়েন্ট আরও ছড়িয়ে পড়বে বলে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন৷
জার্মানিতে করোনা সংক্রমণের হার ধারাবাহিকভাবে কমে চলেছে৷ সর্বশেষ হিসেব অনুযায়ী প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে সংক্রমণের গড় সাপ্তাহিক হার মাত্র পাঁচ দশমিক ছয়৷ তবে আক্রান্তদের মধ্যে ডেল্টা সংস্করণের অনুপাত বেড়ে চলায় কর্তৃপক্ষ দুশ্চিন্তায় রয়েছে৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে তাই সংক্রমণের হার যতটা সম্ভব কম রাখার চেষ্টা চলছে৷ টিকাদান কর্মসূচির গতি বাড়ায় কিছুটা স্বস্তির কারণ রয়েছে৷ জার্মানির অর্ধেকেরও বেশি মানুষ টিকার প্রথম ডোজ পেয়ে গেছেন৷ প্রায় ৩৫ শতাংশ মানুষ দুটি ডোজই পেয়ে গেছেন৷ আগামী দুই মাসে টিকার সরবরাহ আরও বাড়ার ফলে আরও বেশি মানুষ টিকা পেয়ে যাবেন বলে আশা করা হচ্ছে৷ তবে ডেল্টার তাণ্ডবের আগেই যত বেশি সম্ভব মানুষকে টিকা দেবার জন্য চাপ বাড়ছে৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, রয়টার্স, এএফপি)