জার্মানিতে করোনা আবারো ‘বিপদজনক’ মাত্রায়
২১ মার্চ ২০২১পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গেল এক সপ্তাহে জার্মানিতে প্রতি লাখে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১০৩ জনেরও বেশি৷ রোববার দেশটির স্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্থা রবার্ট কখ ইনস্টিটিটিউট এই পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে৷ সংক্রমণের হার ১০০ ছাড়ালে কড়া লকডাউন আরোপ করার বিষয়ে সরকারের আগের একটি সিদ্ধান্ত ছিল৷ সে অনুযায়ী, শুক্রবার হামবুর্গে স্থানীয় সরকার শহরটিতে কড়া লকডাউন ফিরিয়ে এনেছে৷
সোমবার চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের সঙ্গে ১৬টি রাজ্যের প্রধানমন্ত্রীদের পূর্বনির্ধারিত বৈঠক রয়েছে৷ সেখানে লকডাউন বিষয়ে নতুন কিছু সিদ্ধান্ত আসতে পারে৷ ম্যার্কেল আগেই জানিয়ে রেখেছেন সংক্রমণের হার বাড়তে থাকলে প্রয়োজনে আবারো কড়া লকডাউনে ফিরতে সরকার দ্বিধা করবে না৷
বিদেশ থেকে আগতদের বাধ্যতামূলক কোয়ারান্টিন
বিদেশ থেকে কেউ জার্মানিতে আসলে তাদেরকে বাধ্যতামূলক কোয়ারান্টিনে পাঠানোর কথা ভাবছে জার্মানির সরকার৷ এই সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবনা দেখেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স৷ সামনের ছুটিতে বিদেশে ভ্রমনে যেতে ইচ্ছুক নাগরিকদের নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে খসড়া প্রস্তাবে৷ পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের সংস্পর্শে সহজে করোনার নতুন ধরনে তারা আক্রান্ত হতে পারেন৷ তাদের কথা মাথায় রেখে তাই ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে৷
পরিকল্পনায় কোম্পানিগুলোর উপরও নতুন নির্দেশনার প্রস্তাব থাকছে৷ সে অনুযায়ী কোন প্রতিষ্ঠান কর্মীদের ঘর থেকে অফিস করার সুযোগ দিতে ব্যর্থ হলে সপ্তাহে দুই দিন তাদেরকে করোনার .ব্যাপিড টেস্ট করাতে হবে৷
লকডাউন বিরোধী প্রতিবাদ
দীর্ঘদিনের লকডাউনে এরইমধ্যে হতাশ হয়ে পড়েছেন দেশটির অনেক মানুষ৷ নতুন কড়াকড়ি তো নয়ই বরং বিদ্যমান নিয়ম কানুনও তুলে দেয়ার দাবিতে শনিবার বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ করেছেন অনেকে৷
জার্মানির শহর কাসেল-এ জড়ো হন ২০ হাজার মানুষ৷ তাদের অনেকে স্বাস্থ্যবিধি মানেননি৷ এক পর্যায়ে কিছু প্রতিবাদকারী পুলিশের ব্যারিকেড অতিক্রমের চেষ্টা করেন৷ সেখানে লকডাউনের পক্ষে-বিপক্ষের সমর্থকদের মধ্যেও সংঘাত হয়৷ পরে জলকামান ব্যবহার করে পুলিশ৷ বিক্ষোভকারীরা কয়েকজন সাংবিদেকের উপরও হামলা চালিয়েছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা ডিপিএ৷ কাসেল থেকে বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তারের কথা উল্লেখ করেছে বার্তা সংস্থা এপি৷
টিকা প্রদানে গতি
এদিকে জার্মানিতে করোনার টিকা দেয়ার ধীরগতি নিয়েও অসন্তোষ রয়েছে৷ রবার্ট কখ ইনস্টিটিউট এর হিসাবে ৩০ লাখ মানুষ এরইমধ্যে দুই ডোজ টিকা পেয়েছেন৷ প্রথম ডোজ নিয়েছেন ৭০ লাখ৷
তবে টিকা প্রদানে আরো গতি আনতে বেশি কিছু নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার৷ শুক্রবার ফেডারেল সরকার ও রাজ্য সরকারের বৈঠক অনুযায়ী, ইস্টারের পরে পারিবারিক ও সাধারণ চিকিৎসকদেরও টিকা বিতরণের অনুমতি দেয়া হবে৷ এপ্রিলের মধ্যে দ্রুত ও আরো বিস্তৃত পরিসরে টিকার কার্যক্রম শুরু হবে৷
রোববারের হিসাবে, ২৪ ঘণ্টায় জার্মানিতে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৩,৭৩৩ জন, যেখানে আগের সপ্তাহে শনাক্ত হয়েছেন ১০,৭৯০ জন৷ বেড়েছে মৃত্যুর সংখ্যাও৷ এক সপ্তাহ আগে ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণ করেছিলেন ৭০ জন৷ সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় প্রাণ হারিয়েছেন ৯৯ জন৷
এফএস/জেডএ (ডিপিএ, এপি, রয়টার্স)