1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জর্জ ফ্লয়েডের দৃশ্য এবার কলকাতায়

৮ নভেম্বর ২০২১

রাস্তার উপর যুবকের বুকের উপর পা তুলে দাঁড়িয়ে পুলিশ। কলকাতা পুলিশের কাজে স্তম্ভিত মহানগরী। ক্ষমা চাইলেন কমিশনার।

https://p.dw.com/p/42hvm
লালবাজার
ছবি: DW/Payel Samanta

কলকাতার ব্যস্ত এলাকা রবীন্দ্রসদন এক্সাইড মোড়। রোববার সন্ধ্যায় সেখানেই ঘটেছে এই ভয়াবহ ঘটনা। এক যুবককে রাস্তায় ফেলে প্রথমে মারা হয়। তারপর তার বুকের উপর পা তুলে দাঁড়িয়ে থাকে এক পুলিশকর্মী। সবুজ রঙের জামা পরিহিত ওই পুলিশকর্মী পুলিশের ভাষায় সিভিক ভল্যান্টিয়ার বা গ্রিন পুলিশ। বেশ কিছুক্ষণ ওই অবস্থায় যুবককে রাস্তায় ফেলে রাখে সে। পাশে অন্য পুলিশকর্মীরা থাকলেও ওই সিভিক ভল্যান্টিয়ারকে বাধা দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। নেটনাগরিকরা ওই দৃশ্যের সঙ্গে অ্যামেরিকায় জর্জ ফ্লয়েডের ঘটনা তুলনা টেনেছেন। জর্জ ফ্লয়েড অবশ্য মারা গিয়েছিলেন। কলকাতার যুবক বেঁচে আছেন।

রোববার সন্ধ্যায় ওই ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়ার পরে দ্রুত ব্যবস্থা নেয় লালবাজার। পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্র রাতে বলেন, ‘‘আমি ঘটনাটি দেখে বিব্রত। দুঃখ প্রকাশ করছি। ওই সিভিক ভলান্টিয়ারকে বরখাস্ত করা হয়েছে। ওই সময়ে ওখানে ডিউটিতে থাকা সমস্ত অফিসারদের সোমবার সকালে আমার অফিসে ডেকে পাঠিয়েছি। তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও কী করে এই অমানবিক ঘটনা ঘটল, তা জানতে চাওয়া হবে।''

অভিযুক্ত গ্রিন পুলিশ তন্ময় বিশ্বাস অবশ্য কৃতকর্মের জন্য দুঃখিত নন। সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, ওই যুবক এক নারীর ব্যাগ ছিনতাই করে পালানোর চেষ্টা করছিল। কিন্তু জনতা তাকে ধরে ফেলে। শুরু হয় মারধর। ঘটনাস্থলে পৌঁছে জনতার হাত থেকে ওই যুবককে তিনিই উদ্ধার করেন বলে দাবি তন্ময়। এরপর ওই যুবককে রাস্তাতেই বসতে বলা হয়। স্থানীয় পুলিশ অফিসররা তাকে ঘিরে ধরে। তন্ময়ের অভিযোগ, নেশাগ্রস্ত ওই যুবকের গায়ে খুব জোর। সে বার বার পালানোর চেষ্টা করছিল। সে জন্যই তার বুকে পা তুলে আটকে রাখার চেষ্টা হচ্ছিল।

স্থানীয় মানুষের অবশ্য অভিযোগ, তন্ময় রাস্তায় ফেলে মারছিলেন ওই যুবককে। পেটে বুকে পিঠে বুট দিয়ে লাথি মারার পরে তার বুকে পা তুলে দেওয়া হয়। ওই যুবক তখন বার বার ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করতে থাকে। কিন্তু তন্ময় তাকে আটকে রাখে।

স্থানীয় থানার এক পুলিশ অফিসারের বক্তব্য, ওই যুবকের পকেট থেকে একটি চোরাই মোবাইল ফোন পাওয়া গেছে। যে নারীর ব্যাগ সে চুরি করেছিল, সেটিও উদ্ধার করা গেছে। মোবাইল বা ব্যাগের মালিক কেউই থানায় অভিযোগ জানাননি। তবে থানা চাইলে ওই যুবকের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে।

নেটিজেনদের প্রশ্ন, ওই যুবককে ধরে কেন শেক্সপিয়র সরণি থানায় নিয়ে যাওয়া হলো না? কেন তার বিরুদ্ধে আইন মেনে ব্যবস্থা নেওয়া হলো না? রাস্তায় কোনো ব্যক্তির বুকের উপর পা তুলে দেওয়ার অধিকার আদৌ কি পুলিশের আছে? পুলিশ যে এ কাজ করতে পারে না, তা পুলিশ কমিশনারের কথাতেই স্পষ্ট।

এসজি/জিএইচ (আনন্দবাজার)