1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
সমাজইউক্রেন

এই 'যুদ্ধ' জেতার নয়: গুতেরেস

২৩ মার্চ ২০২২

এ লড়াই জেতা যাবে না। রাশিয়াকে 'যুদ্ধ' শেষের পরামর্শ জাতিসংঘ প্রধানের। রাশিয়া অবশ্য এখনো একে 'যুদ্ধ' মানতে নারাজ।

https://p.dw.com/p/48tkz
ইউক্রেন
ছবি: Mikhail Tereshchenko/TASS/dpa/picture alliance

ফের সরব হলেন জাতিসংঘের প্রধান আন্তোনিও গুতেরেস। মঙ্গলবার তিনি বলেছেন, এই 'যুদ্ধ' কেউ জিততে পারবে না। রাশিয়ার উচিত এবার লড়াই বন্ধ করা। তার কথায়, ''মারিউপল যদি রাশিয়া জিতেও নেয়, তাহলেও ইউক্রেনের শহরের পর শহর, রাস্তার পর রাস্তা রাশিয়া দখল করতে পারবে না। এ এক অযৌক্তিক লড়াই চলছে।'' জাতিসংঘের প্রধানের বক্তব্য, এ লড়াই চলতে থাকার অর্থ, সাধারণ মানুষের আরো বেশি দুর্ভোগ। আরো প্রাণহানি। আরো ভয়াবহতা। রাশিয়াকে লড়াই থামানোর পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি গুতেরেস জানিয়েছেন, দুই দেশের মধ্যে যে আলোচনা চলছে, তা আগের চেয়ে ফলপ্রসূ হয়েছে। কথা এগোচ্ছে।

যুদ্ধই নয়

গুতেরেস যখন যুদ্ধ থামানোর কথা বলছেন, তখন সিএনএন-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে একে যুদ্ধ বলতেই রাজি হলেন না ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ। তার বক্তব্য, ''কেউই ভাবেননি ইউক্রেনে রাশিয়ার স্পেশাল মিলিটারি অপারেশন কয়েকদিনেই শেষ হয়ে যাবে। সময় হাতে নিয়েই রাশিয়া এ কাজে নেমেছে।'' একই সঙ্গে তার বক্তব্য, রাশিয়া কখনোই একে যুদ্ধ হিসেবে দেখছে না। যদি যুদ্ধ হয় এবং রাশিয়ার নিরাপত্তা যদি বিঘ্নিত হয়, তাহলে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করা হবে বলে এদিন সতর্ক করেছেন পেসকভ। তবে রাশিয়ার এই 'স্পেশাল মিলিটারি অপারেশন' কবে শেষ হবে, তা নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত জানাতে পারেননি ক্রেমলিনের মুখপাত্র।

জেলেনস্কির বক্তব্য

তিন সপ্তাহ পরেও তীব্র লড়াইচলছে ইউক্রেনের বন্দর শহর মারিউপলে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি মঙ্গলবার বলেছেন, মারিউপল শহরে আর কিছু বেঁচে নেই। দীর্ঘ লড়াইয়ে সবকিছু ধ্বংস হয়ে গেছে। এখনো সেখানে অন্তত লাখখানেক সাধারণ মানুষ আটকে আছেন বলে তার অভিযোগ। ভেঙে যাওয়া থিয়েটারে এখনো সাধারণ মানুষ ধ্বংসাবশেষের নীচে আটকে আছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। মারিউপলে কোনো খাবার নেই, জল নেই। এই পরিস্থিতিতে ফের রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনের সঙ্গে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছেন জেলেনস্কি। ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার দাবি থেকে তিনি কিছুটা সরে আসতে পারেন বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। অর্থাৎ, রাশিয়া যে শর্তগুলি সামনে রেখেছে, তার মধ্যে অন্তত একটি নিয়ে ইউক্রেন খানিকটা আপস করতে তৈরি বলে এদিন আবার ইঙ্গিত দিয়েছেন জেলেনস্কি।

ইউক্রেন ছেড়ে বিপাকে বিদেশিরা

কিয়েভ নিয়ে দুই তরফের দাবি

মারিউপলের পাশাপাশি তীব্র লড়াই চলছে কিয়েভে। কিয়েভের শহরতলিতে দুইপক্ষই দাবি করেছে, তারা কিছুটা জমি পুনরুদ্ধার করেছে। রাশিয়ার দাবি, কিয়েভের শহরতলি এখন অনেকটাই তাদের সেনার দখলে। অন্যদিকে ইউক্রেনের দাবি, রাশিয়ার সেনাকে শহরতলি থেকে কিছুটা হলেও পিছনে ঠেলে দিতে পেরেছে তাদের সেনা এবং সাধারণ মানুষের ফৌজ। বিবিসি-সহ একাধিক সংবাদমাধ্যম দাবি করেছে, কিয়েভের শহরতলিতে ইউক্রেন কিছুটা হলেও জমি ফেরাতে পেরেছে।

রাশিয়ার সেনার সংকট

মার্কিন গোয়েন্দারা দাবি করেছেন, ইউক্রেনে লড়তে যাওয়া রাশিয়ার সেনার মনোবল আগের চেয়ে অনেকটাই কমেছে। তাদের মনোবল ৯০ শতাংশের নীচে নেমে গেছে বলে জানানো হয়েছে। সেনাবাহিনীর খাবার কমে গেছে। তেলের সংকট দেখা দিয়েছে। একইসঙ্গে তীব্র ঠান্ডায় বহু সেনা ফ্রস্টবাইটের মতো সমস্যায় ভুগছেন বলে দাবি করা হয়েছে। বরফে চামড়ার নীচে রক্ত জমে ফ্রস্টবাইট হয়। দ্রুত চিকিৎসা না করলে ওই জায়গা কেটে বাদ দিয়ে দিতে হয়।

বসন্তের ফসল

গোটা বিশ্ব জুড়ে খাদ্যসংকট হতে পারে বলে বিভিন্ন সংগঠন সতর্ক করেছে। পূর্ব আফ্রিকায় খাদ্য সংকট শুরু হয়ে গেছে বলে অক্সফ্যাম রিপোর্ট দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের কৃষিমন্ত্রী রোমান লেশচেঙ্কো জানিয়েছেন, ইউক্রেনে এবার অর্ধেকরও কম জমিতে বসন্তের ফসল লাগানো সম্ভব হয়েছে। গত বছরেও ইউক্রেন ১৫ মিলিয়ন হেক্টর জমিতে বসন্তের ফসল চাষ করেছিল। এবার সব মিলিয়ে সাত মিলিয়ন হেক্টরেও ফসল লাগানো যায়নি। এর ফলে বিশ্ব জুড়ে সংকট আরো বাড়বে বলেই মনে করছেন তিনি।

এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি, এএফপি, ডিপিএ, বিবিসি)