আফগানিস্তান থেকে তেত্রিশ হাজার ‘সার্জ ফোর্স’ ফিরিয়ে নেব - ওবামা
২৩ জুন ২০১১বক্তৃতার সারমর্ম কী ছিল
এক কথায় সারমর্ম বলতে গেলে অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে আফগানিস্তান থেকে অতিরিক্ত সেনাবাহিনী ফিরিয়ে নেওয়ার দিনক্ষণ৷ ২০০৯ সালে অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্টের দায়িত্বভার হাতে নিয়ে ওবামা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, ইরাক থেকে সেনা সরিয়ে আফগানিস্তানে পাঠানোর৷ সেই অনুযায়ী অতিরিক্ত ৩৩ হাজার মার্কিন সেনা পাঠানো হয়েছিল আফগানিস্তানে৷ বুধবারের ভাষণে সেই অতিরিক্ত সেনাবাহিনীর দেশে ফেরার দিনক্ষণ জানালেন তিনি৷ বললেন, এ বছরের শেষের মধ্যেই এই অতিরিক্ত সেনা বা তথাকথিত সার্জ ফোর্সের মধ্যে দশ হাজার ফিরে যাবে স্বদেশে৷ এরপর বাকি ২৩ হাজার সেনা ফিরে আসবে ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে৷ ওবামা একথাও বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর আফগানিস্তানে এই অতিরিক্ত বাহিনী পাঠানোর সিদ্ধান্তটাই নাকি ছিল তাঁর কাছে সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত৷
লাদেন প্রসঙ্গ দিয়েই তো বক্তৃতার শুরু
আল কায়েদার শীর্ষ জঙ্গি ওসামা বিন লাদেনকে বিশেষ অপারেশনের মাধ্যমে খতম করতে পারার বিষয়টি স্বভাবতই ওবামার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণের প্রথম বিষয় ছিল৷ কারণ, এই সাফল্য যে আল কায়েদার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সবচেয়ে তুঙ্গমুহূর্ত সেটা আবার মনে করিয়ে দিতে ভুল করেন নি বারাক ওবামা৷ পাশাপাশি একথাও বলেছেন, ৯/১১-র পর আল কায়েদা এতটা চাপের মুখে আর কোনদিনই ছিল না৷ যতটা এখন রয়েছে৷ তাদের ভাবভঙ্গিও বুঝিয়ে দিচ্ছে যে সবদিক থেকেই তারা এখন বেশ কোণঠাসা৷ পাকিস্তানের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে এ প্রসঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাবি, আল কায়েদার শীর্ষ জঙ্গিদের অর্ধেককেই এখন জেলে ভরতে পারা গেছে৷ লাদেন খোদ খতম৷ ৯/১১-র জঙ্গি হামলার যারা শিকার হয়েছেন, তাঁদের সেই মৃত্যুর মস্তবড় একটা বদলা নেওয়া গেছে এই সময়টাতে৷ এর জন্য অবশ্য নিরাপত্তাবাহিনী এবং গোয়েন্দাবাহিনীর সেইসব বিশেষ কর্মীদের ধন্যবাদ জানাতে ভোলেন নি ওবামা, যাদের প্রত্যক্ষ তৎপরতায় এই দুরূহ কাজটি সম্ভবপর হয়েছে৷
অ্যামেরিকাকে গড়ার কথাও বলেছেন প্রেসিডেন্ট
আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনাদের ফিরিয়ে নেওয়ার কাজ সম্পন্ন হলে আফগানিস্তানকে নিজেদের দায়িত্ব নিজের হাতেই নিতে হবে বলে জানিয়েছেন ওবামা৷ বলেছেন, যেভাবে আফগান সেনা ও নিরাপত্তা বাহিনীকে দীর্ঘ সময় ধরে প্রশিক্ষণ এবং অন্যান্য কৃৎকৌশলগত সহায়তা দেওয়া হয়েছে তাতে এরপরে বাকি কাজটা তারা সামলে নিতে পারবে বলেই তাঁর বিশ্বাস৷ ভবিষ্যতে অবশ্য যেকোন রকম সহায়তার ক্ষেত্রে অ্যামেরিকা সবসময়েই হাত বাড়িয়ে দেবে বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন৷ পাশাপাশি একথাও বলেছেন, বিদেশে কঠিন কাজ শেষ করে যে বিশাল সেনাবাহিনী দেশে ফিরছে, তাদের জন্য এখন অপেক্ষা করে রয়েছে স্বদেশকে ভালো করে গড়ার কাজে অংশগ্রহণ করা৷ প্রেসিডেন্ট নিজে মনে করেন, অ্যামেরিকার এখন নিজের ঘরে নিজের জাতকে ভালো করে গড়ে তোলাটা আশু প্রয়োজন৷
প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়
সম্পাদনা: হোসাইন আব্দুল হাই