1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আদালতে পরাজয়, ভয়াবহ রিপোর্ট, বিপাকে জনসন

১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯

সংসদের চাপে চুক্তিহীন ব্রেক্সিট সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রকাশ করে ব্রিটিশ সরকার আরও সমালোচনার মুখে পড়েছে৷ এদিকে স্কটল্যান্ড হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী সংসদ মুলতুবি রাখার পদক্ষেপ আইনসিদ্ধ নয়৷

https://p.dw.com/p/3PRpk
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন
ছবি: AFP/T. Akmen

বরিস জনসনের দিনকাল ভালো যাচ্ছে না৷ ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে শুধু একের পর এক পরাজয়ের মুখ দেখতে হচ্ছে তাঁকে৷ বিশেষ করে সংসদের সঙ্গে সংঘাতের যে মূল্য তাঁকে দিতে হচ্ছে, তা মোটেই সুখকর নয়৷ অধিবেশন মুলতুবি হবার আগে সংসদ এক প্রস্তাব পাশ করে সরকারকে চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের প্রস্তুতি সংক্রান্ত গোপন নথিপত্র প্রকাশ করতে বাধ্য করেছিল৷ বুধবার রাতে প্রকাশিত ছয় পৃষ্ঠার সেই ‘অপারেশন ইয়েলোহ্যামার' নথিপত্র পড়ে এমন পরিস্থিতির ভয়াবহ চিত্র সম্পর্কে জানতে পারছেন ব্রিটেনের মানুষ৷

সরকারের নিজস্ব পূর্ববাণী অনুযায়ী কোনো বোঝাপড়া ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ করলে ব্রিটেনের জনজীবন নানা ক্ষেত্রে ব্যাহত হবে৷ ইংলিশ চ্যানেল পেরোতে গেলে শুল্ক ও অন্যান্য জটিলতার কারণে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হবে৷ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য ও ওষুধের সরবরাহ থমকে যাবার ফলে বিশাল মূল্যবৃদ্ধি হতে চলেছে৷ বিদ্যুতের মাশুলও আচমকা বেড়ে যাবে৷ সামাজিক অস্থিরতা, প্রতিবাদ-বিক্ষোভ পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলবে৷ আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে৷ গত দোসরা আগস্ট এই নথি প্রস্তুত করা হয়েছে৷ এর আগে দ্য সান্ডে টাইমস সংবাদপত্র তার কিছু অংশবিশেষ প্রকাশ করেছিল৷ সমালোচকদের মতে, এই রিপোর্টের ফলে সরকারের প্রস্তুতির অভাবও স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে৷ সরকার অবশ্য দাবি করছে, যে রিপোর্ট লেখার পর থেকে প্রস্তুতি আরও জোরদার করা হয়েছে৷

এমন পরিস্থিতির আশঙ্কা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী ‘যে কোনো মূল্যে' ৩১শে অক্টোবর ব্রেক্সিট কার্যকর করার যে আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন, সেই মনোভাবের তীব্র সমালোচনা শোনা যাচ্ছে৷ এমনকি তিনি সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছেন বলে বিরোধীরা অভিযোগ করছে৷ লেবার দলের ব্রেক্সিট বিশেষজ্ঞ কির স্টার্মার বলেন, সরকার এমন সব হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে ও মানুষকে অন্ধকারে রেখে অত্যন্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ করেছে৷ তিনি সংসদের জরুরি অধিবেশন ডেকে এই সব নথিপত্র খতিয়ে দেখে চুক্তিহীন ব্রেক্সিট থামাতে যাবতীয় পদক্ষেপ নেবার ডাক দিয়েছেন৷

প্রায় এক মাস সংসদ মুলতুবি রেখে বরিস জনসন আইন ভেঙেছেন বলে রায় দিয়েছে স্কটল্যান্ড হাইকোর্ট৷ সরকার এই রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন করায় আগামী সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্ট এ বিষয়ে চূড়ান্ত রায় দেবে৷ সেই রায়ও যদি সরকারের বিপক্ষে যায়, সে ক্ষেত্রে আবার সংসদের অধিবেশন ডাকতে হবে৷ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বরিস জনসন মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে রানিকে এত দীর্ঘ সময়ের জন্য সংসদ মুলতুবি রাখার পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করেছিলেন, এমন অভিযোগ আরও জোরদার হচ্ছে৷

এদিকে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল জার্মান সংসদে বলেছেন, ব্রিটেন এখনো চুক্তিসহ ইইউ ত্যাগ করতে পারে৷ সেই লক্ষ্যে জার্মান সরকার সবরকম উদ্যোগ নিতে প্রস্তুত৷ তবে সেটা সম্ভব না হলেও জার্মানি চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের জন্য প্রস্তুত, বলেন ম্যার্কেল৷ তাঁর মতে, ব্রিটেনের বিদায়ের ফলে ইউরোপ কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়লেও নতুন করে শক্তিবৃদ্ধির সময় এসে গেছে৷

এসবি/কেএম (ডিপিএ, এএফপি, রয়টার্স)