1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

৭ দিনের মধ্যে সরকার পতনের চূড়ান্ত কর্মসূচি

৮ জুলাই ২০২৩

ছোট-বড় ৩৬টি রাজনৈতিক দল নিয়ে সরকার পতনের চূড়ান্ত আন্দোলনে যাচ্ছে বিএনপি৷ বিএনপি এবং তার যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে দেয়া হবে যৌথ কর্মসূচি৷

https://p.dw.com/p/4TccP
Bangladesch, Dhaka | BNP Konferenz
ছবি: Mortuza Rashed/DW

তারা একই সঙ্গে নির্বাচনকালিন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার এবং নির্বাচন পরবর্তী সরকারের রূপরেখাও ঘোষণা করবেন৷ তাদের এক দফা দাবি হলো, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন৷

যদি সরকার নিজে থেকে পদত্যাগ না করে,তাহলে তারা সরকারের পতন ঘটিয়ে দাবি আদায়ের কথা জানিয়েছেন৷ ঢাকায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দ্রুত নিজেদের দাবি এবং আন্দোলন পরিকল্পনা ঘোষণা করবেন তারা৷

বিএনপি এরইমধ্যে তাদের সমমনা দল ও শরিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করার কাজটি অনেকটা শেষ করে এনেছে৷ ১০ জুলাই গণতন্ত্র মঞ্চের সঙ্গে তাদের সর্বশেষ বৈঠকটি হওয়ার কথা রয়েছে৷ গণতন্ত্র মঞ্চের শরিক গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি জানান, ‘‘আমরা বিএনপির সঙ্গে দীর্ঘদিন বৈঠকের পর এক দফার আন্দোলন নিয়ে একমত হয়েছি৷''

তিনি আরো বলেন, ‘‘এই সরকার আদালতের রায়কে বিকৃত করে সংবিধান সংশোধন করে ক্ষমতায় আছে৷ এটা তো হতে দেয়া যায়না৷ আওয়ামী লীগের জন্য সহজ পথ হলো, আদালতের রায়কে রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে আনা৷ তাদের কাছে ক্ষমতা দিয়ে বিদায় নেয়া৷ সেটা না করলে জনগণ এই সরকারকে বিদায় করবে৷''

তার কথা, ‘‘আন্দোলনের জন্য পর্যাপ্ত সময় আছে৷ এখনো হাতে ছয় মাস আছে৷ আমরা ১০ জুলাই বিএনপির সঙ্গে বৈঠক করব৷ এরপর সবকিছু চূড়ান্তভাবে ঘোষণা করা হবে৷''

গণতন্ত্র মঞ্চ সাতটি রাজনৈতিক সংগঠনের একটি জোট৷ গণঅধিকার পরিষদ এই জোট থেকে বের হয়ে গেছে৷ তবে তারা যুগপৎ আন্দোলনে আছে৷

জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটে আছে ১১টি রাজনৈতিক দল৷ এই জেটের শরিক ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, ‘‘বিএনপির সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে গতমাসের ৮ তারিখে৷ আমরা শেখ হাসিনা সরকারের পতন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে একমত হয়েছি৷''

চলতি মাসের ১৫ তারিখের চূড়ান্ত যৌথ কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘এই সরকারকে আমরা আর সময় দিতে চাইনা৷''

জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী মোস্তফা জামাল হায়দারের নেতৃত্বে আছে ১২ দলীয় জোট৷ যুগপৎ আন্দোলনে আরো আছে গণফোরাম, বাংলাদেশ পিপলস পার্টি, কিছু ইসলামি রাজনৈতিক দল এবং পেশাজীবীদের একটি জোট৷

গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, ‘‘আমরা সবাই এক দফার দাবিতে একমত৷ এখন চূড়ান্ত আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণার অপেক্ষা৷ আমাদের মূল দাবি এই সরকারের পদত্যাগ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন৷ আমরা দ্রুতই যৌথ বা আলাদা আলাদা সংবাদ সম্মেলন অথবা ঢাকায় একটি বড় সমাবেশের মাধ্যমে আমাদের যুগপৎ চূড়ান্ত কর্মসূচি ঘোষণা করব৷''

সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনে যাচ্ছি: শামসুজ্জামান দুদু

জানা গেছে, এই দলগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের জন্য একটি সমন্বয় কমিটি গঠনের কাজ চলছে৷ দলগুলোর নেতারা বলছেন, তাদের কর্মসূচির মধ্যে ঘেরাও, অবরোধ ও হরতালের মতা কর্মসূচি নিয়েও ভাবা হচ্ছে৷

সরকারের অবস্থান অনুযায়ী মাঠের কর্মসূচিকে কঠোর করবেন বলে জানান তারা৷ নেতারা আরো বলছেন, তারা একই কর্মসূচি যুগপৎ ভাবে যার যার অবস্থান থেকে পালন করবেন৷ তবে তারা এক পর্যায়ে গিয়ে একই মঞ্চে কর্মসূচি পালন করবেন৷

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘‘আমাদের যুগপৎ আন্দোলনে যারা আছেন তাদের সবার সঙ্গেই আমাদের মেটামুটি কথা বলা হয়েছে৷ এখন পর্যন্ত আমাদের যা সিদ্ধান্ত, তা হলো ১৫ জুলাইর মধ্যে আমরা যুগপৎ চূড়ান্ত কর্মসূচি ঘোষণা করব৷''

আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আমরা এক দফার আন্দোলনে যাচ্ছি৷ এক দফার আন্দোলন মানে সরকারের পতনের আন্দোলন। সরকার পদত্যাগ করলে আমাদের অন্য দাবি এমনিতেই পূরণ হবে৷’’

হরতাল, অবরোধ, ঘেরাও ছাড়া আর কোনো কর্মসূচির কথা ভাবা হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘এগুলো গণতান্ত্রিক আন্দোলনের কর্মসূচি৷ এর বাইরে আরো নতুন কোনো কর্মসূচি আসবে কিনা তা সময়ই বলে দেবে৷''

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের আগের সমাবেশের কর্মসূচির সময় দেখেছি আওয়ামী লীগ পাল্টা কর্মসূচি দেয়৷ আমরা কর্মসূচির দিনও পরিবর্তন করে দেখেছি, তারাও পরিবর্তন করে৷ তারা তো বলেছে যে তারা পাহারা বসিয়েছে৷ আমরা এবারো শান্তিপূর্ণভাবেই কর্মসূচি পালনের চেষ্টা করব৷ তবে সরকারের মনোভাবের ওপর নির্ভর করবে সেটা কেমন হয়৷''

বিএনপির এক দফা আন্দোলনে আওয়ামী লীগ ভীত নয়: এস এম কামাল হোসেন

এসবের জবাবে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, ‘‘বিএনপির এই এক দফার আন্দোলনে দেশের মানুষ ভীত নয়, আওয়ামী লীগও ভীত নয়৷ তবে বিএনপি আন্দোলনের নামে যদি কোনো সহিংসতা করে, যদি ২০১৩-১৪ সালের মতো গান পাউডার দিয়ে সাধারণ মানুষকে পুড়িয়ে মারার ষড়যন্ত্র করে জনগণ তাদের প্রতিরোধ করবে৷''

কামাল হোসেন বলেন, ‘‘আওয়ামী লীগও শান্তি সমাবেশ নিয়ে মাঠে থাকবে৷ আমরা আমাদের দলীয় কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকব৷ আমাদের উন্নয়ন কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকব৷ দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী দেশি-বিদেশি শক্তির বিরুদ্ধে আমরা দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করব৷''

২০২২ সালের ডিসেম্বরে ঢাকার গোলাপবাগে বিএনপির সমাবেশে নিয়ে বানানো ছবিঘর: