কোন দিকে যাচ্ছে বাংলাদেশ?
৫ জানুয়ারি ২০১৬সেই সময় আওয়ামী লীগ নির্বাচনকে সংবিধান রক্ষার নির্বাচন বলেছিল৷ বিএনপি একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসলেও মধ্যবর্তী সেই নির্বাচনের আর সম্ভাবনা দেখছেন না বিশ্লেষকরা৷
এবার ৫ জানুয়ারিতে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি দুই দলই কর্মসূচি পালন করেছে৷ আওয়ামী লীগ ‘গণতন্ত্রের বিজয়' নামে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর এবং বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে দু'টি সমাবেশ করেছে৷ তবে কোনো সমাবেশেই ছিলেন না প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনা৷ ওদিকে বিএনপি ‘গণতন্ত্র হত্যা' নামে সমাবেশ করেছে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে৷ বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া এই সমাবেশে যোগ দিয়ে সরকারের সমালোচনা এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবি করলেও তিনি সরকার বিরোধী নতুন কোন কর্মসূচি ঘোষণা করেননি৷
এবার বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের সমাবেশকে ‘সমঝোতার' সমাবেশই বলছেন বিশ্লেষকরা৷
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনে ৩০০টি আসনের মধ্যে ১৫৩টি আসনেই কোনো নির্বাচন হয়নি৷ একক প্রার্থী থাকায় তারা বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয় লাভ করেন৷ আওয়ামী লীগ দুই তৃতীয়াংশ আসন পায়৷ এরশাদের জাতীয় পার্টি হয় সংসদে বিরোধী দল৷
এই নির্বাচনের প্রথম বর্ষপূর্তিকে ঘিরে গত বছর চলা বিভিন্ন সহিংস ঘটনায় কমপক্ষে ৯৫ জন প্রাণ হারান৷ প্রায় তিন মাস ধরে আন্দোলন করার পর সেই অবস্থা থেকে সরে আসে বিএনপি৷ তারা সবশেষ পৌর নির্বাচনে দলীয় প্রতীক নিয়ে অংশ নেয়৷ বিএনপি নেতারা বলছেন, তাঁরা এখন আন্দোলনের চেয়ে দল গোছানোর কাজেই বেশি মনোযোগী৷ আর নির্বাচনে অংশ নেয়াই এখন তাদের আন্দোলনের কৌশল৷
জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষক পরিষদ (জানিপপ) এর প্রধান এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এটা স্পষ্ট যে বিএনপি তাদের রাজনৈতিক কৌশল পরিবর্তন করেছে৷ তারা নির্বাচনে ফিরছে৷ তবে বাংলাদেশে নির্ধারিত সময়ের আগে মধ্যবর্তী নির্বাচনের সম্ভাবনা আমি দেখছি না৷ কারণ বিএনপি তাদের দাবি প্রতিষ্ঠিত করতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি৷''
অধ্যাপক কলিমুল্লাহ নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেও নির্বাচনের সম্ভাবনা দেখেন না৷ তিনি মনে করেন, এই সরকারের মেয়াদপূর্তির পর তাদের অধীনেই নির্বাচন হবে৷ বাংলাদেশে দলীয় সরকারের অধীনে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘সবদেশে সম্ভব হলে আমাদের দেশেও সেটা সম্ভব করতে হবে৷''
তিনি মনে করেন, ‘‘সামনে রাজনীতিতে ইতিবাচক ধারার সৃষ্টি হতে পারে৷ নির্বাচমুখীতাই তার ইঙ্গিত দেয়৷''
তাঁর মতে, ভিতরে ভিতরে রাজনৈতিক সংলাপ চলছে৷ আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতারা কথা বলছেন৷ বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের এবারের ৫ জানুয়ারির নমনীয় কর্মসূচি দেখলেই তা বোঝা যায়৷
আপনি কি ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ সাহেবের সঙ্গে একমত? জানান নীচে, মন্তব্যের ঘরে৷