হিজড়াদের প্রেমের ছবি
৮ জুলাই ২০১২ছবির নাম ‘কমন জেন্ডার'৷ ‘ট্রান্সজেন্ডার' মানুষ, যারা হিজড়া নামে পরিচিত, তাদের গল্প নিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে ছবিটি৷ বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ইতিহাসে এধরনের ছবি এটিই প্রথম৷ সপ্তাহ দুয়েক আগে বাছাইকৃত ছয়টি প্রেক্ষাগৃহে চলচ্চিত্রটি প্রদর্শন শুরু হয়৷ মুক্তির পর ছবিটি নির্মাতাদের প্রত্যাশার চেয়ে অনেক বেশি সাড়া জাগায়৷ প্রেক্ষাগৃহগুলো দর্শক পূর্ণ থাকে কয়েকদিন৷ এই ব্যাপক সাড়া দেখে মালিকপক্ষ সারা দেশে চলচ্চিত্রটি প্রদর্শনের সিদ্ধান্ত নেয়৷
‘কমন জেন্ডার' ছবির পরিবেশক এনামুল করিম এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘আমরা প্রথম সপ্তাহে ছবিটি ছয়টি প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি৷ কেননা এতে বড় কোন তারকা অভিনয় করেনি, তাছাড়া কেউ কেউ এটিকে ‘আর্ট-হাউস মুভি' হিসেবে আখ্যা দিয়েছিল৷''
করিম জানান, মুক্তির পর ছবিটি ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে৷ অনেক দর্শক প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে ছবিটি দেখছেন৷ ভারতীয় একজন প্রযোজকও ছবিটির স্বত্ত্ব কিনে নিতে চাচ্ছেন৷ এই বিষয়ে আলোচনা চলছে৷
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার বলাকা প্রেক্ষাগৃহের ম্যানেজার সৈয়দ রাজফাতুর রহমান এই ছবি প্রদর্শন করে সন্তুষ্ট৷ তিনি বলেন, ‘‘আমাদের প্রদর্শনীগুলোতে অনেক দর্শকের সমাগম হয়েছে এবং এই ধারা অব্যাহত রয়েছে৷ আমরা এখন আগস্টের শেষ অবধি ছবিটির প্রদর্শনী অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি৷''
ছবির মূল কাহিনী হচ্ছে, সুস্মিতা নামক একজন হিজড়া এক হিন্দু তরুণের প্রেমে পড়ে৷ কিন্তু ছেলেটির পরিবার সুস্মিতাকে মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায়৷ এরপর সুস্মিতা আত্মহত্যা করে৷
বলাবাহুল্য, গোটা দক্ষিণ এশিয়ার রক্ষণশীল সমাজে ঐতিহ্যগতভাবেই হিজড়া সম্প্রদায়কে প্রান্তিক গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করা হয়৷ হিজড়াদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন নয় সাধারণ মানুষ৷ তথাকথিত ভদ্র সমাজে তাদের স্থান হয় না৷ ফলে একরকম ভিক্ষা করে জীবনযাপন করতে হয় এই সম্প্রদায়কে৷ সংঘবদ্ধভাবে নির্দিষ্ট জায়গায় বসবাসে বাধ্য হয় তারা৷
‘কমন জেন্ডার' ছবিটির প্রেক্ষাপট প্রসঙ্গে পরিচালক নোমান রবিন বলেন, ‘‘আমি একটি শপিং মলে দেখেছিলাম একজন ‘ট্রান্সজেন্ডার' ব্যক্তিকে শতাধিক মানুষের সামনে মারধর করা হচ্ছে৷ মহিলাদের টয়লেট ব্যবহার করাটা ছিল তাঁর অপরাধ৷''
এই ঘটনা রবিনকে ব্যাপক নাড়া দেয়৷ এরপর হিজড়াদের নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন তিনি৷
এআই / এএইচ (এএফপি)