হাটহাজারী মাদ্রাসার কবরস্থানে শায়িত আল্লামা শফী
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০বাংলাদেশে ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানিয়েছে, ‘‘জানাজার সময় সড়কে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল৷ এই সময় খাগড়াছড়ি, ফটিকছড়ি, রাউজান, রাঙ্গুনিয়াগামী বাসগুলোকে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়৷’’
দুপুর ২টায় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়৷ আহমদ শফীর বড় ছেলে পাখিয়ারটিলা কওমি মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা মোহাম্মদ ইউসুফ জানাজা পড়িয়েছেন৷ স্থানীয় সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন, র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেনেন্ট কর্নেল মশিউর রহমান, চট্টগ্রামে পুলিশ সুপার রাশেদুল হক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বদিউল আলম জানাজায় অংশ নেন বলে উল্লেখ করেছে বিডিনিউজ৷
মাদ্রাসার ভেতরের কবরস্থানেই আহমদ শফীকে দাফন করা হয়৷ টানা ৩৪ বছর তিনি এই মাদ্রাসার মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করে এসেছেন৷
জানাজাকে ঘিরে পুলিশ, র্যাবের পাশাপাশি মোতায়েন করা হয় বিজিবি সদস্যদের৷ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে হাটহাজারী, রাঙ্গুনিয়া ও পটিয়া উপজেলায় সাতজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে নিয়োগ দেয়া হয় বলেও জানিয়েছে সংবাদ মাধ্যমটি৷
শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে পুরান ঢাকার আজগর আলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ হেফাজতে ইসলামের সর্বোচ্চ এই নেতা৷ চিকিৎসার জন্য শুক্রবার বিকালে হেলিকপ্টারে করে তাকে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় আনা হয়েছিল৷ তিনি ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, শ্বাসকষ্টসহ বার্ধক্যজনিত দুর্বলতায় ভুগছিলেন৷ ইসলামি ঐক্যজোটের মহাসচিব ও হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ জানান, আহমদ শফীর বয়স হয়েছিল ১০৩ বছর৷
আল্লামা শফী রাঙ্গুনিয়ার সরফভাটা মাদ্রাসা, পটিয়ার আল জামিয়াতুল আরাবিয়া মাদ্রাসা এবং হাটহাজারীর দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেন৷ এরপর ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দ মাদ্রাসাতেও চার বছর শিক্ষা নেন৷ ১৯৮৬ সালে হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক পদে যোগ দেন তিনি৷ হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক হিসেবে কওমি মাদ্রাসাগুলোর নেতৃত্ব দিয়ে আসা আহমদ শফী ‘বড় হুজুর’ নামে পরিচিত৷ কওমি মাদ্রাসা বোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশেরও (বেফাক) সভাপতি ছিলেন তিনি৷
তারা আল্লামা শফীর অব্যাহতি এবং তার ছেলে মাদ্রাসার সহকারী পরিচালক আনাস মাদানির বহিষ্কারের দাবিতে হাটহাজারী বড় মাদ্রাসায় কয়েকশ শিক্ষার্থী বুধবার বিক্ষোভ শুরু করেন৷ বৃহস্পতিবার রাতে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির বৈঠকে আল্লামা শফী পদত্যাগ করেন বলে জানা যায়৷ তার ছেলেসহ দুই শিক্ষককেও অব্যাহতি দেয়া হয়৷ বৈঠকের পর আহমদ শফীকে মাদ্রাসাটি থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে চট্টগ্রাম শহরের একটি হাসপাতালে পাঠানো হয়৷ একদিন পরই ঢাকায় হাসপাতালে মারা যান তিনি৷
বাংলায় ১৩টি ও উর্দুতে নয়টি বইয়ের রচয়িতা শফী নারীবিরোধী নানা বক্তব্যের জন্য বিভিন্ন সময় সমালোচিত হয়েছেন৷ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে ২০১৩ সালে গণজাগরণ আন্দোলন শুরুর পর হেফাজতে ইসলামের নেতৃত্বে তিনি বেশি আলোচনায় আসেন৷
এফএস/এডিকে (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)