হলোকস্ট স্মরণ দিবসে নাৎসি নিধনযজ্ঞে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা
২৭ জানুয়ারি ২০১২জার্মান সংসদের এই অধিবেশনে মূল বক্তা হিসেবে যিনি উপস্থিত হন, তিনি জার্মান সাহিত্যের একজন শীর্ষস্থানীয় সমালোচক, বর্তমানে ৯১ বছর বয়স্ক, মার্সেল রাইশ-রানিৎস্কি৷ হিটলার জার্মানির দখলিত পোল্যান্ডের ওয়ারস শহরের যে এলাকায় ইহুদিদের একসঙ্গে ধরে রাখা হয়েছিল, সেখানে ছিলেন তিনিও৷ দেখেছেন কীভাবে আবালবৃদ্ধবনিতা ইহুদিদের সেখান থেকে স্থানান্তরিত করার নামে পাঠিয়ে দেয়া হতো নিধন শিবির ত্রেবিয়াংকায়৷ সেকথাই বললেন তিনি বুন্ডেসটাগে সাংসদ ও দেশের বিশিষ্টজনদের উপস্থিতিতে৷ এই অধিবেশনে ছিলেন প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিয়ান ভুল্ফ, চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল, জার্মানির শীর্ষ সংবিধানিক আদালতের প্রধান এবং অন্যান্যরা৷
মূল বক্তা রানিৎস্কি পোল্যান্ডে এক ইহুদি পরিবারে বড় হন৷ ওয়ারস ঘেটোতে বন্দি ছিলেন তিনিও৷ কিন্তু তিনি প্রাণে বেঁচে যান৷ তিনি বলেন, সন্ত্রাস আর ভয়ের এক পরিবেশে দিন কাটাতে হতো সেই সময় ওয়ারস ঘেটোতে৷ নির্বিচারে তুলে নেয়া হতো যাদের অন্যত্র স্থানান্তরিত করার নামে, তাদের পাঠিয়ে দেয়া হতো নিশ্চিত মৃত্যুর গর্ভে৷
সংসদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন বুন্ডেস্টাগগের স্পিকার নরব্যার্ট লাম্যার্ট৷ তিনি দেশের সেইসব নাগরিকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান যাঁরা কিনা উগ্রদক্ষিণপন্থা আর নব্যনাৎসিদের অপকর্মের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে সচেষ্ট৷ তিনি বলেন, ‘‘এরা হলেন এমন মানুষ যারা দৃষ্টান্ত তুলে ধরছেন, সাহস দেখাচ্ছেন৷'' স্পিকার লাম্যার্ট জার্মানিতে একটি নব্যনাৎসি গ্রুপের হত্যাকাণ্ডের ঘটনার কথাও উল্লেখ করতে ভোলেননি৷ একই সঙ্গে তিনি খেদ প্রকাশ করে বলেন যে, সাম্প্রতিক এক জনমত সমীক্ষার ফল অনুযায়ী জার্মান নাগরিকদের ২০ শতাংশের মাঝে ইহুদিবিদ্বেষ সুপ্ত রয়েছে৷
১৯৪৫ সালের এই দিনেই মুক্ত হয়েছিল পোল্যান্ডে অবস্থিত নাৎসি নিধন শিবির আউশভিৎস৷ জীবিত বন্দিদের মুক্ত করেছিল তখনকার সোভিয়েত সেনারা৷ ষাট লক্ষ ইহুদি নিহত হয়েছিল নাৎসিদের হাতে৷ প্রাণ হারিয়েছিল আরো বহু মানুষ৷ আউশভিৎস হয়ে আছে গণনিধনযজ্ঞেরই এক প্রতীক৷ ১৯৯৬ সাল থেকে বুন্ডেসটাগ এক বিশেষ অধিবেশনে স্মরণ করে আসছে নিহত সেই মানুষদের৷
প্রতিবেদন: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন