হলিউডের জার্মান ভাষী তারকা
৩ এপ্রিল ২০১৩৮৫ বছরের অস্কারের ইতিহাসে জার্মান ভাষীরা অনেকবার মনোনয়ন পেলেও সফল হয়েছেন মাত্র তিনজন৷ ক্রিস্টফ ভালৎস সেই তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন৷ এ বছর দ্বিতীয়বারের মতো অস্কার জয় করলেন তিনি৷
অস্কারে জার্মান ভাষীদের সাফল্য
চলচ্চিত্রের সবচেয়ে বড় পুরষ্কার অস্কার৷ সেখানে ১৯২৯ সালের প্রথম আসরের বিজয়ী কিন্তু জার্মান অভিনেতা এমিল ইয়েনিংস৷ সেবার নির্বাক ‘দ্য ওয়ে অফ অল ফ্লেশ অ্যান্ড দ্য লাস্ট কমান্ড' ছবিতে অভিনয় করে এ স্বীকৃতি পেয়েছিলেন তিনি৷ সবাক ছবির যুগ শুরুর পর ইংরেজিতে খুব দক্ষ ছিলেন না বলে ফিরে এসেছিলেন জার্মানিতে৷ ইয়েনিংসের পরও অনেক জার্মানভাষী প্রতিভা দেখেছে অস্কার৷ মূখ্য এবং পার্শ্ব অভিনেতা-অভিনেত্রীর ক্যাটাগরি মিলিয়ে এ পর্যন্ত অনেক জার্মান ভাষীই মনোনয়ন পেয়েছেন অস্কারে৷ অভিনয়ের বাইরের ক্যাটাগরিগুলোও হিসেবে ধরলে তালিকাটা আরো দীর্ঘ হবে৷ তবে অনেকে মনোনীত হলেও ক্রিস্টফ ভালৎসের আগে ইয়েনিংস ছাড়া অভিনেতা হিসেবে মাত্র একজনই পেয়েছেন অস্কারে চূড়ান্ত সাফল্য৷ সেটা ১৯৬১ সালের ঘটনা৷ সেবার ‘জাজমেন্ট অ্যাট নুরেমবার্গ' ছবির জন্য সেরা অভিনেতা হয়েছিলেন মেক্সিমিলিয়ান শেল৷ এ বছর এক হিসেবে ইয়েনিংস এবং মেক্সিমিলিয়ানকেও ছাড়িয়ে গেলেন ক্রিস্টফ ভালৎস৷
বর্ণময় কেরিয়ার
জার্মান বাবা ও অস্ট্রিয়ান মায়ের সন্তান ক্রিস্টফ ভালৎসের জন্ম ভিয়েনায়, ১৯৫৬ সালের ৪ঠা অক্টোবর৷ থিয়েটার ও ফিল্ম নিয়ে পড়াশোনা করেছেন ভিয়েনা ও নিউ ইয়র্কে৷ জার্মান, ফরাসী ও ইংরেজি জানেন দারুণ৷ প্রায় ত্রিশ বছরের অভিনয় জীবনে হলিউডে সাফল্য পাবার বাসনা তাঁর মনে উঁকি দিতো প্রায়ই৷ এবার হলিউড উষ্ণ আলিঙ্গনে বরণ করলো তাঁকে৷
২০০৯ সালের ‘ইনগ্লোরিয়াস বাস্টার্ডস' ছায়াছবিতে জার্মান নাৎসি সরকারের অফিসার ‘ইহুদি শিকারী ' হান্স লাণ্ডা'র চরিত্রে রুপ দিয়েছেন ক্রিস্টফ ভালৎস৷ হান্স লাণ্ডা,একদিকে চতুর, বিনয়ী এবং একাধিক ভাষায় পারদর্শী, অন্যদিকে ধূর্ত, কৃপাহীন ও নিষ্ঠুর৷ ছবির পরিচালক ও চিত্রনাট্যকার কুয়েন্টিন টারান্টিনো বলেছিলেন ‘ভেবেছিলাম আমি হয়তো এমনই একটা চরিত্র রচনা করেছি যার রুপায়ণ সম্ভবই হবেনা৷' ক্রিস্টফ ভালৎস নিখুঁতভাবে সেই অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন৷ কান চলচ্চিত্র উৎসবে শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার, পেলেন গোল্ডেন গ্লোব ও আরো কত স্বীকৃতি৷ ২০১০ সালে শ্রেষ্ঠ সহঅভিনেতা হিসেবে জয় করেন অস্কার৷ এ বছর আবার শ্রেষ্ঠ সহঅভিনেতা হিসেবে অস্কার জিতেছেন ওয়েস্টার্ণ ছবি ‘জাঙ্গো আনচেইন্ড'-এ অসাধারণ অভিনয়ের জন্য৷ তুখোড় চলচ্চিত্র তারকা রবার্ট ডি নিরো,অ্যালান আর্কিন, টোমি লি জোনস আর ফিলিপ সেমর হফমানও মনোনয়ন পেয়েছিলেন ওই ক্যাটাগরিতে৷ তাঁদের পেছনে ফেলে এমন স্বীকৃতি, ক্রিস্টফ ভালৎসের অভিনয় দক্ষতা বুঝতে পারছেন তো!
আরো সাফল্য
এই দুটি ছবি ছাড়াও গত কয়েক বছরে হলিউডের একাধিক বক্স-অফিস হিট ছবিতে অভিনয় প্রতিভার পরিচয় রেখেছেন ক্রিস্টফ ভালৎস৷ পেয়েছেন অনেক সাফল্য৷ তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য রোমান পোলানস্কি'র ‘কার্ণেগ'৷ পরবর্তী ছবি ‘রেইকিয়েভিক'৷ ১৯৮৬ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সাবেক সোভিয়েট ইউনিয়নের শান্তি আলোচনার উপর ভিত্তি করে এই ছায়াছবি৷ রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট মিখায়েল গর্বাচেভের ভুমিকায় অভিনয়ের জন্য বেছে নেয়া হয়েছে ক্রিস্টফ ভালৎসকেই৷