স্বাস্থ্যভবনের সামনে রাতভর জুনিয়র ডাক্তারদের অবস্থান

জুনিয়র ডাক্তাররা সারারাত ধরে স্বাস্থ্যভবনের কাছে রাস্তায় বসে প্রতিবাদ জানালেন। সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, বিকেল পাঁচটার মধ্যে তাদের কাজে যোগ দিতে হবে। ওই সময়সীমা না মানলে, এরপর রাজ্য সরকার তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিলে সর্বোচ্চ আদালত তা ঠেকাতে পারবে না। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মানেননি আন্দোলনকারীরা।

রাতে বৃষ্টি পড়েছে। তা সত্ত্বেও অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়ে গেছেন তারা। ঘটনাস্থলে নির্যাতিতার পরিবারের মানুষরা এসেছেন। তারা বলেছেন, ''প্রশাসন কোথায় এনে দাঁড় করিয়েছে আপনাদের। আশা করছি, এবার তাদের শুভবুদ্ধি হবে।''

জুনিয়র ডাক্তাররা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাদের দাবি মানা না হলে তারা রাস্তাতেই বসে থাকবেন। প্রতিবাদ জানাবেন। তারা তাদের সিদ্ধান্তে অনড় থেকেছেন। রাস্তায় বসে অবস্থান বিক্ষোভে রাত কেটেছে তাদের।

জুনিয়র ডাক্তারদের সংগঠন জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টরস, ওয়েস্ট বেঙ্গল জানিয়েছে, প্রতিবাদী কণ্ঠস্বরকে চিরতরে স্তব্ধ করে দেয়ার কোনো প্রক্রিয়া কোনো দেশের শাসক আবিষ্কার করতে পারেনি, পারবেও না। মতপ্রকাশের অধিকার, প্রতিবাদ বিক্ষোভ দেখানোর অধিকার নিয়ে রাজ্য সরকারের মনোভাবের নিন্দা করা হয়েছে।

বিক্ষোভরত চিকিৎসকদের খাবার দিচ্ছেন সাধারণ মানুষ। তারা তাদের সাধ্যমতো খাবার দিচ্ছেন তাদের। বুঝিয়ে দিচ্ছেন, তারা এই আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের পাশে আছেন

মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটা নাগাদ আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের কাছে স্বাস্থ্যসচিবের ই-মেল বার্তা আসে। বলা হয়, নবান্ন আলোচনার জন্য তৈরি। ১০ জন প্রতিনিধি নবান্নে যেতে পারবেন। সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, সাড়ে সাতটা পর্যন্ত জুনিয়র ডাক্তারদের পক্ষ থেকে কোনো বার্তা আসেনি। মুখ্যমন্ত্রী তাদের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। তিনি তারপর চলে যান।

জুনিয়র ডাক্তাররা বলেন, যার পদত্যাগ চেয়ে তারা আন্দোলন করছেন, তার কাছ থেকে এই বার্তা আসাটা তারা অপমানজনক মনে করছেন। শীর্ষস্তর থেকে বার্তা আসলে তারা আলোচনা করবেন। আর 'স্যর' সম্বোধন করা হয়েছিল। এটাও অপমানজনক। ভবিষ্যতে 'স্যার' ও 'ম্যাম' দুটোই লিখতে হবে।

জুনিয়র ডাক্তারদের এই অবস্থানে রাতে বেশ কয়েকজন সিনিয়র ডাক্তারকেও দেখা যায়। তারা জুনিয়র ডাক্তারদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। তারা জানিয়ে দিয়েছেন, যে কারণে জুনিয়র ডাক্তাররা পথে নেমেছেন, তা তারা সমর্থন করেন। তারা আরজি কর কাণ্ডের ন্যায় চান।

আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তাররা বিধাননগরে স্বাস্থ্যভবনের কাছে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। দাবিপূরণ না হলে তারা আন্দোলন থেকে সরবেন না। তাদের জন্য বায়ো টয়লেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে।