সেনার বিরুদ্ধে বিক্ষোভে উত্তাল মিয়ানমার
২২ ফেব্রুয়ারি ২০২১মিয়ানমার সেনার একটি পেজ বন্ধ করে দিল ফেসবুক। রোববার ফেসবুকের তরফে জানানো হয়েছে, ওই পেজের মাধ্যমে সহিংসতার বার্তা ছড়ানো হচ্ছিল। সে কারণেই ওই পেজটি বন্ধ করা হয়েছে। রোববার ফের জার্মানি সেনা সরকারকে আলোচনায় বসার আবেদন জানিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাতিসংঘও সেনাকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে। কিন্তু তাতে অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি। শনিবারের পর রোববারেও দেশ জুড়ে প্রতিবাদীদের উপর আক্রমণ চালিয়েছে পুলিশ এবং সেনা। চালানো হয়েছে গুলি। প্রতিবাদীরা জানিয়েছেন, সোমবারও বিক্ষোভ অব্যাহত থাকবে। সেনা জানিয়েছে, প্রতিবাদীরা রাস্তায় নামলে প্রাণের দায়িত্ব সেনা নেবে না।
তিন সপ্তাহ হয়ে গেছে মিয়ানমারে গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করে সেনা ক্ষমতা নিজেদের হাতে নিয়েছে। বন্দি করা হয়েছে অং সান সু চি সহ দেশের একাধিক নির্বাচিত প্রতিনিধি এবং রাজনৈতিক কর্মীকে। তারই প্রতিবাদে দেশ জুড়ে প্রবল বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। প্রতিবাদের নেতৃত্বে যুবসমাজ। তাদের দাবি, যে প্রক্রিয়ায় সেনা বিদ্রোহ করে ক্ষমতা নিজেদের হাতে নিয়েছে, তা গণতান্ত্রিক নয়। ফলে অবিলম্বে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মুক্তি দিতে হবে এবং পরিস্থিতি আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
স্বাভাবিক ভাবেই সেনা এই বক্তব্য মেনে নিতে রাজি নয়। গোটা দেশে বিক্ষোভের উপর সহিংস আক্রমণ চালাচ্ছে সেনা। কাঁদানে গ্যাস, জল কামান, লাঠির পাশাপাশি রবার বুলেট এবং সত্যিকারের গুলি ছোড়া হচ্ছে। শনিবার তেমনই এক বিক্ষোভে সেনার গুলিতে দুই প্রতিবাদীর মৃত্যু হয়। আহত হন বহু। তারপরেই রোববার দেশ জুড়ে আরো বড় বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হয়। সোমবারও প্রতিবাদ চলবে বলে প্রতিবাদীরা জানিয়েছেন।
এ দিকে সেনার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যে ভাবে প্রতিবাদীরা রাস্তায় নামছেন তা বেআইনি। অবিলম্বে বিক্ষোভকারীরা যেন ঘরে ফিরে যান। রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ দেখালে প্রাণের দায়িত্ব সেনা নেবে না। অর্থাৎ, গুলি ছোড়ার আগাম হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে সেনা। পাশাপাশি হাজার হাজার বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। লম্বা সময়ের জন্য তাঁদের জেলে রাখার হুমকিও দেওয়া হয়েছে সেনার তরফে।
রোববার জার্মানির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতি জারি করে ফের মিয়ানমারের সেনাকে বলেছে, সহিংসতা বন্ধ করে তারা যেন আলোচনার রাস্তায় আসে। গণতান্ত্রিক ভাবে যাঁরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, তাঁদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাতিসংঘের তরফেও একই আবেদন জানানো হয়েছে। অন্য দিকে, বিশ্বের একাধিক দেশ ইতিমধ্যেই মিয়ানমারের একাধিক সেনা জেনারেলের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। গণতন্ত্র ফিরে না এলে আরো বড় পদক্ষেপ গ্রহণের কথাও সেনাকে জানানো হয়েছে।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি, এএফপি)