1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস

১২ জুন ২০১২

১২ই জুন বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস৷ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শিশুরা জীবিকার তাগিদে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে৷ বিশেষ করে শিশুদেরকে যৌন ব্যবহারের জন্য পাচার কিংবা ঋণ শোধ করতে জোরপূর্বক কাজে লাগানো হচ্ছে এখনও৷

https://p.dw.com/p/15CB0
ছবি: picture-alliance/dpa

বেঁচে থাকার তাগিদে বিশ্বের কয়েকশ মিলিয়ন ছেলে-মেয়ে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে৷ কাজের কারণে তারা তাদের সাধারণ অধিকার যেমন, শিক্ষা, চিকিৎসা, অবসর এবং সাধারণ স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত৷ এই শিশুশ্রমিকদের একটি বড় অংশ আবার সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত৷ বিশেষ করে বিপজ্জনক পরিবেশে কাজ করছে শিশুরা৷ তাছাড়া দাসত্ব কিংবা জোরপূর্বক শ্রমিক, এমনকি দেহ ব্যবসায়ও বাধ্য হচ্ছে শিশুরা৷

শিশুশ্রম প্রতিরোধে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ২০০২ সাল থেকে বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস পালন করছে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)৷ সংস্থাটির মহাপরিচালক ইয়ান সোমাভিয়া এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘সারা বিশ্বে ২১৫ মিলিয়ন শিশু যখন বেঁচে থাকার জন্য এখনো শ্রমিক হিসেবে কাজ করছে তখন আত্মপ্রসাদের কোনো সুযোগ নেই৷ এই শিশুদের মধ্যে অর্ধেকের বেশি শিশুশ্রমের মধ্যে সবচেয়ে বিপজ্জনক কাজগুলো করছে৷ কেউ কেউ আবার সশস্ত্র সংগ্রামেও জড়িয়ে পড়ছে৷''

Kinderarbeit Flash-Galerie
ছবি: AP

বলাবাহুল্য, উন্নয়নশীল দেশগুলোতে শিশুশ্রম এক বড় সমস্যা৷ বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো দেশগুলো থেকে রাতারাতি শিশুশ্রম তুলে দেওয়া এক বড় চ্যালেঞ্জ৷ তবে শিশুদের জন্য হালকা কাজ এবং স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ, সেই সঙ্গে কাজের পাশাপাশি তাদের জন্য শিক্ষা, চিকিৎসাসহ অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিত করা যেতে পারে বলে মনে করেন জাগো ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা করভি রাখসান্দ৷ বাংলাদেশে শিশুদের বিভিন্ন অধিকার নিয়ে কাজ করছে এই সংগঠনটি৷

শিশুশ্রমের বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট সম্পর্কে জানতে চাইলে করভি বলেন, ‘‘২০১০ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশে শিশুশ্রমিকের সংখ্যা ৮০ লাখের মতো৷ বর্তমানে এই সংখ্যা খুব একটা পরিবর্তন হয়েছে বলে আমার মনে হয় না৷ আমরা মুখে বলি যে, শিশুশ্রম আমরা বন্ধ করতে চাই৷ কিন্তু কিছু গবেষণা করে দেখা গেছে, শিশুশ্রম যদি আমরা রাতারাতি বন্ধ করে দেই বা যখন আমরা বলি কোনো জায়গায় বাচ্চারা কাজ করতে পারবে না, তাহলে সেই বাচ্চাগুলো কোথায় যাবে? ওরা চুরি করা শুরু করবে৷ এখন আমরা যেটা করতে পারি, এদেরকে দিয়ে ভারি কাজ না করিয়ে, আমরা চেষ্টা করব তাদেরকে হালকা কোনো কাজ দেওয়ার জন্য৷''

Kinderarbeit Flash-Galerie
ছবি: AP

জাগো ফাউন্ডেশন একটু ভিন্নভাবে শিশুদের সহায়তায় এগিয়ে আসছে৷ শিশুদেরকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ইংরেজি মাধ্যমে শিক্ষা দিচ্ছে সংগঠনটি৷ একইসঙ্গে শিশুদের অভিভাবকদের জন্যও ক্ষেত্রবিশেষে কাজের সংস্থান করা হচ্ছে, যাদেরকে সংগঠনটির তত্ত্বাবধানে শিক্ষা নেওয়া শিশুটির উপর বাড়তি চাপ না থাকে৷ এই প্রসঙ্গে করভি বলেন, ‘‘ আমরা বিশ্বাস করি শিশুশ্রম বন্ধ করার জন্য, দেশকে গড়ার জন্য একটাই হাতিয়ার আমাদের কাছে আছে, সেটি হচ্ছে শিক্ষা৷ আমরা এখন শিশুদের শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছি৷''

তিনি বলেন, ‘‘আমরা দেখেছি, এই বাচ্চারা যখন ক্লাস ফাইভে ওঠে, তখনই আসলে ওদের অভিভাবকরা ওদের উপর চাপ সৃষ্টি করে৷ মেয়ে হলে ওদেরকে বিয়ে দিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে, তাতে কিছু যৌতুকের টাকা পাওয়া যায়৷ ছেলে হলে কাজে লাগিয়ে দেওয়া হয়৷ তাই আমরা শিক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে কম্পিউটার এবং ইংলিশ অনেকটা ফোকাস করি৷ এতে করে ভবিষ্যতে তারা কলসেন্টারে কাজ করতে পারবে বা গ্রাফিক্সের কাজ করতে পারবে, ছোটছোট ডেটা এন্ট্রি করতে পারবে৷ এভাবে করে কিছু ভোকেশনাল ট্রেনিং এবং ইংরেজিতে মূল ধারার শিক্ষা আমরা দিচ্ছি৷''

উল্লেখ্য, শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের জনসচেতনতামূলক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে জাগো ফাউন্ডেশন এবং অন্যান্য সংস্থা৷ এছাড়া সরকারি পর্যায়েও জাতীয় শিশুশ্রম প্রতিরোধ নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে৷

প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য