1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সারা বিশ্ব যখন মাথা ঘামায়

গেরো শ্লিস/এসি৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৪

একের পর এক ‘আন্তর্জাতিক সংঘাত’ জাতিসংঘের সাধারণ সম্মেলনকে প্রায় সুবৃহৎ এক সংকটকালীন শীর্ষবৈঠকে পরিণত করেছে৷ ফলে ভবিষ্যতের জন্য জরুরি কিছু বিষয় অবহেলিত হচ্ছে৷ এ কথাই মনে করেন ডিডাব্লিউ-র গেরো শ্লিস৷

https://p.dw.com/p/1DNBS
ছবি: Getty Images/Spencer Platt

ইসলামিক স্টেট (আইএস বা আইসিস) জঙ্গি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সংগ্রাম কিংবা আফ্রিকায় এবোলা মহামারী সামাল দেওয়া – সাধারণ পরিষদে এই দু'টিই ছিল মূল আলোচ্য বিষয়৷ আলোচনা চলাকালীন উভয়সংকট চরমে ওঠে৷ এবং সামগ্রিকভাবে জাতিসংঘ নয়, যে বিশ্বনেতা আইসিস এবং এবোলার বিরুদ্ধে সক্রিয় অভিযানের কথা ঘোষণা করেন, তিনি হলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা৷

সাধারণ সম্মেলন শুরু হবার আগের দিন সন্ধ্যায় ওবামা তাঁর সিদ্ধান্ত জানান৷ তিনি জানান, ইরাকের পর সিরিয়াতেও মার্কিন বিমান হামলা শুরু হবে৷ এটা একটা সুচতুর পদক্ষেপ, কেননা এই সিদ্ধান্ত থেকে যে গতিবেগের সৃষ্টি হয়, তার কল্যাণে ওবামা আইসিস-এর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক জোট সৃষ্টির প্রচেষ্টাতেও নতুন গতিবেগ আনতে সমর্থ হন৷ শেষমেষ শুধু ব্রিটেনই নয়, বেলজিয়াম ও ডেনমার্কের মতো অপেক্ষাকৃত ছোট ইউরোপীয় দেশও ওবামার আইসিস-দমন অভিযানে যোগদান করেছে৷

হাওয়া বদলায়

তার চেয়ে বড় কথা: হাওয়া বদলে গেছে৷ সাধারণ সম্মেলনের এক সপ্তাহব্যাপী অধিবেশনে স্পষ্ট বোঝা গেছে যে, রাজনৈতিক আবহাওয়ায় একটা বড় পরিবর্তন এসেছে৷ বিশ্বের রাষ্ট্রসমাজ আইসিস-এর অপরিমিত সন্ত্রাস ও সহিংসতাকে একটি নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখতে শিখেছে – যে চ্যালেঞ্জের অবিলম্বে মোকাবিলা করা দরকার৷ যে সব আরব দেশগুলি এ যাবৎ নীরব ছিল কিংবা দ্বিধা করছিল, তারাও এবার তাদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছে৷ এমনকি রাশিয়া পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আনীত প্রস্তাবটি সমর্থন করেছে – যার উদ্দেশ্য হলো ‘‘বিদেশি যোদ্ধাদের'' আইসিস-এ যোগদানের জন্য সিরিয়া ও ইরাক যাত্রা থেকে বিরত করা৷

Deutsche Welle Gero Schließ
গেরো শ্লিসছবি: DW/P. Henriksen

জার্মানির কাছে প্রত্যাশা

জার্মানি উত্তর ইরাকের কুর্দ যোদ্ধাদের অস্ত্র সরবরাহ করছে – সেটা জার্মানির দৃষ্টিকোণ থেকে পর্যাপ্ত মনে হতে পারে, কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কিংবা অপরাপর মিত্রদের দৃষ্টিকোণ থেকে কিছুই নয়৷ তারা চায় আইসিস-এর বিরুদ্ধে বিমান হানায় জার্মানির সক্রিয় অংশগ্রহণ৷ জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রাংক-ভাল্টার স্টাইনমায়ার তবুও জার্মানির বিশ্বাসযোগ্যতা অনেকটা ফিরিয়ে আনেন বার্লিনে একটি আন্তর্জাতিক উদ্বাস্তু সম্মেলন আহ্বানের অভিপ্রায় ঘোষণা করে – কেননা মানবিক সাহায্যে জার্মানির কর্মক্ষমতা সুবিদিত, তা সে সিরিয়া অথবা উত্তর ইরাকে আইসিস-বিতাড়িত উদ্বাস্তুদের ক্ষেত্রেই হোক, আর পশ্চিম আফ্রিকায় এবোলার বিরুদ্ধে সংগ্রামেই হোক৷

অপরদিকে ইউক্রেন সংকটে প্রসঙ্গে স্টাইনমায়ার তাঁর ভাষণে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গের অভিযোগ করেন, রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ যার জবাবে পশ্চিমা দেশগুলির বিরুদ্ধে সিরিয়ায় আইসিসের উপর বিমান হানার মাধ্যমে সিরিয়ার সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ণ করার অভিযোগ তোলেন৷ পশ্চিমি বিশ্ব নাকি ঠান্ডা লড়াইয়ের দিনগুলির অনুকরণে আন্তর্জাতিক আইনের স্বেচ্ছাকৃত সংজ্ঞা দিয়েছে৷

পূর্ব-পশ্চিম বোঝাপড়া

তবে রাশিয়া এবং পশ্চিমি দুনিয়া যে অন্তত দু'টি গুরুত্বপূর্ণ সংঘাতে সহযোগিতা করতে সম্মত হয়েছে, সেটা একটা ভালো খবর৷ আইসিস-এর বিরুদ্ধে সংগ্রাম ছাড়া ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সংক্রান্ত বিরোধের ক্ষেত্রেও দু'পক্ষ একমত৷ তবে কথা হচ্ছে জাতিসংঘের সাধারণ সম্মেলন নিয়ে, এবং এই সাধারণ সম্মেলন বিশ্বের সমস্যাবলী নিয়ে আলোচনা করার প্রশস্ত সুযোগ দিলেও, সেই সব সমস্যার বাস্তবিক সমাধান ঘটে জাতিসংঘের তাঁবে নয়, বরং অন্যান্য রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানে৷ যার অর্থ, জাতিসংঘের সংস্কারের সময় এসেছে – স্টাইমায়ার তাঁর ভাষণে যার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেছেন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য