কলের জলে প্লাস্টিক!
৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭ওয়াশিংটন ভিত্তিক নন-প্রফিট ডিজিটাল নিউজরুম ‘অর্ব মিডিয়া'-র গবেষণা অনুযায়ী নিউ ইয়র্ক থেকে নতুন দিল্লি অবধি কলের জলে মাইক্রোপ্লাস্টিকের ফাইবার পাওয়া গেছে৷
২০০৬ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস এই নতুন তথ্যকে একটি বিপদ সংকেত বলে অভিহিত করেছেন: ‘‘এ থেকে আমাদের সচেতন হওয়া উচিৎ৷ গলায় ফাঁসটা ক্রমেই ছোট হয়ে আসছে৷''
জরিপের জন্য পাঁচটি মহাদেশের বিভিন্ন শহর থেকে কলের পানির ১৫০টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়৷ দেখা যায়, গড়ে ৮৩ শতাংশে প্লাস্টিক রয়েছে৷ কলের জলে যদি প্লাস্টিক থাকে, তবে তা পাউরুটি কিংবা বেবিফুডে থাকার সম্ভাবনা কম নয়৷
কলের পানিতে প্লাস্টিক ফাইবার কিভাবে এলো – বা তা থেকে স্বাস্থ্যজনিত ঝুঁকি কতটা, তাও পরিষ্কার নয়৷ এই প্লাস্টিক ফাইবার সিন্থেটিক জামাকাপড়, সিন্থেটিক পদার্থের তৈরি কার্পেটিং বা সোফার কাপড় থেকে এসেছে, বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা৷
প্লাস্টিক ফাইবার পানির সাথে শরীরে ঢোকে৷ এর ফলে বাইরের পরিবেশ থেকে বিভিন্ন বিষাক্ত পদার্থ মানবদেহে প্রবেশ করতে পারে, বলে বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, যা জীবজন্তুর ক্ষেত্রে ইতিমধ্যেই প্রমাণিত হয়েছে৷
ধনি-দরিদ্রের ফারাক নেই
ধনি-দরিদ্র সব দেশের কলের জলেই প্লাস্টিক ফাইবারপাওয়া গিয়েছে৷ নিউ ইয়র্কের ‘ট্রাম্প গ্রিল'-এর হাত ধোয়ার বেসিনের পানিতে যে পরিমাণ প্লাস্টিক ফাইবার পাওয়া গিয়েছে, জাকার্তা থেকে আসা নমুনাগুলিতেও সেই পরিমাণ প্লাস্টিক পাওয়া গিয়েছে৷ বোতলের পানি ও ফিল্টার করা পানিতেও প্লাস্টিক পাওয়া গিয়েছে৷
প্লাস্টিক সর্বত্র৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আর বৈরুতে নেওয়া নমুনার ৯৪ শতাংশে প্লাস্টিক ফাইবার পাওয়া গিয়েছে৷ অন্যান্য শহরেও একই অবস্থা: নতুন দিল্লিতে ৮২ শতাংশ, কাম্পালায় ৮১ শতাংশ, জাকার্তায় ৭৬ শতাংশ, কুইটোয় ৭৫ শতাংশ ও ইউরোপে ৭২ শতাংশ৷
পরিমাণটা খেয়াল রাখা দরকার৷ উগান্ডায় ভিক্টোরিয়া হ্রদের কাছের একটি গ্রামের কলের জলেও চারটি প্লাস্টিক ফাইবার পাওয়া গিয়েছে৷ সেখানে ওয়াশিংটনে ক্যাপিটল ভবনের কল থেকে নেওয়া ৫০০ মিলিলিটার পানিতে ১৬টি ফাইবার পাওয়া গিয়েছে৷
ওয়াশিং মেশিন ভর্তি করে সিন্থেটিক জামাকাপড় ধোয়ার সময় প্রতি বার সাত লাখ ফাইবার নির্গত হয়৷ ময়লা পানি পরিশোধনে তার সবটা দূর হয় না ও সরকারি পানি সরবরাহ বা খাল-বিল নালা-নর্দমায় ছড়িয়ে পড়ে৷
টাইরি/মরিসন/এসি