তৈরি খাবার থেকে সাবধান
১৫ অক্টোবর ২০১৩ক্যালিফোর্নিয়ার বায়োকেমিস্ট এবং অ্যামেরিকান সোসাইটি ফর রিপ্রোডাকটিভ মেডিসিন এএসআরএম-এর প্রেসিডেন্ট ড. লিন্ডা গিউডিস জানান, টিনজাত খাদ্যে রাসায়নিক পদার্থ বা বিপিএ থাকার কারণে স্বাস্থ্যের যে সব সমস্যা হতে পারে, সেগুলি প্রমাণ করার জন্য যথেষ্ট কাজ এখনো হয়নি৷ তবে যেটুকু কাজ হয়েছে, তাতে বলা যায় যে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিপিএ গর্ভধারণ এবং স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে থাকে৷ গত মাসে এএসআরএম প্রাকৃতিক রাসায়নিক পদার্থ এবং গর্ভবতী নারীদের উপর এর প্রভাব নিয়ে কাজ করেন৷
বিসফেনল-এ এর সংক্ষিপ্ত রূপ বিপিএ৷ এটি এমন একটি প্রাকৃতিক রাসায়নিক পদার্থ যা হরমোনকে প্রভাবিত করে৷ পরীক্ষায় দেখা গেছে, প্রত্যেকের প্রস্রাবেই এই বিপিএ রয়েছে৷ গত কয়েক বছরে শিশুদের দুধের বোতল এবং পানীয়ের বোতল থেকে বিপিএ সরিয়ে ফেলা হয়েছে৷ তবে কেন্দ্রীয় খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন বলছে যে, অন্যান্য টিনজাত খাদ্যে এখনও এটি রয়ে গেছে৷
অধিকাংশ ক্ষেত্রে গর্ভপাত হয় ডিম্বানু এবং ক্রমোজোমের কারণে৷ স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের রিপ্রোডাক্টিভ এন্ডোক্রিনোলজিস্ট ড. রুথ লাথি জানিয়েছেন, ইদুঁরের উপর করা এক পরীক্ষায় দেখা গেছে যে বিপিএ-র প্রভাবে গর্ভপাতের সম্ভাবনা বেড়ে যায়৷
লাথি এবং আরো কয়েকজন গবেষক ১১৫ জন গর্ভবতী নারীর উপর পরীক্ষা চালিয়েছেন, যাঁরা অল্প কয়েকদিনের গর্ভবতী৷ এসব নারীদের জীবনে দীর্ঘদিন বন্ধ্যাত্ব ও গর্ভপাতের ঘটনা ছিল৷ পরে এঁদের মধ্যে ৬৮ জনের গর্ভপাত হয়ে যায় এবং ৪৭ জন সুস্থ শিশুর জন্ম দেন৷
কিন্তু গবেষণাটি স্বল্প সংখ্যক মানুষের উপর করায় গবেষকরা এখনই এর সত্যতা সম্পর্কে শতভাগ নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না৷
লাথি জানান, এমনও হতে পারে, যে নারীটির রক্তে বিপিএর মাত্রা বেশি ছিল, তাঁর অন্য কোনো ধরনের সমস্যা থেকে থাকতে পারে, যার কারণে গর্ভপাত হয়েছে৷ এই গবেষণাটির উদ্দেশ্য হলো নারীদের জানানো, যাতে তাঁরা বিপিএ সম্পর্কে সচেতন হন৷
বিপিএ-র মাত্রা কমাতে কয়েকটি পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে৷ প্লাস্টিকের বাসনে খাবার গরম না করা৷ কেননা তাপের কারণে প্লাস্টিক থেকে বিপিএ নিঃসৃত হয়৷ পানির বোতল সূর্যের আলোতে না রাখা, টিনের খাবার কম খাওয়া৷ এমনকি দোকান থেকে যে রশিদ দেয়া হয়, তা গ্রহণ না করা, কেননা রশিদগুলি এমন একটি জিনিস দিয়ে তৈরি, যাতে বিপিএ থাকে৷ লাথি এও জানান যে, বিপিএ থেকে পুরোপুরি দূরে থাকা আজকের বিশ্বে আর সম্ভব নয়৷
এপিবি/ডিজি (এপি)