যেন ফাঁসির হুকুম
১৯ জানুয়ারি ২০১৩আর্মস্ট্রং'এর সাইক্লিস্ট সাথীদের ছ'মাস করে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, কিন্তু আর্মস্ট্রং নিজে আর কোনোদিন প্রতিযোগিতামূলক সাইক্লিং'এ অংশ নিতে পারবেন না৷ ওপ্রা'র সঙ্গে সাক্ষাৎকারে আর্মস্ট্রং সে'কথা উল্লেখ করতে ভোলেননি৷ তিনি আবার প্রতিযোগিতায় নামতে চান, বলেন ৪১ বছর বয়সি আর্মস্ট্রং, তবে তাঁর এই স্বীকারোক্তি সে কারণে নয়৷ তাঁর উপর সারা জীবনের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হবে বলেও তিনি মনে করেন না৷
শুক্রবার দেখা যায় অন্য এক ল্যান্স আর্মস্ট্রং'কে৷ খেলাধুলায় ডোপিং'এর যে একটা ব্যক্তিগত, মানবিক, পারিবারিক দিক আছে, সেটাই যেন স্পষ্ট হয়ে ওঠে যখন আর্মস্ট্রং চোখে জল নিয়ে সেই কাহিনি শোনান, কিভাবে তিনি তাঁর ১৩ বছরের ছেলে লিউক'কে তাঁর ডোপিং'এর কথা বলেছেন: ‘‘আমি লিউক'কে বলেছি, ‘ কারুর কাছে আমার সাফাই গাওয়ার চেষ্টা কোরো না... যদি কেউ কিছু বলে, আমাকে বাঁচানোর চেষ্টা কোরো না৷ শুধু বোলো, আমার বাবা বলেছেন তিনি দুঃখিত৷''
বলতে কি, লিউক যে না জেনেই তার বাবার পক্ষ সমর্থন করার চেষ্টা করছে, সমবয়সিদের বলছে, ‘তোমরা আমার বাবার সম্বন্ধে যা বলছ, তা সত্যি নয়' - এটা দেখার পরেই নাকি আর্মস্ট্রং বুঝতে পারেন, তাঁর লিউক'কে পুরো সত্যটা বলা দরকার৷ এবং সেই সঙ্গে বাকি দুনিয়াকেও৷ দুনিয়ার লোকে কিন্তু যা মনে রাখবে, তা' হল এই যে, ল্যান্স আর্মস্ট্রং ওডাবলিউএন'এ তাঁর সাক্ষাৎকারের প্রথম পর্বে স্বীকার করেছেন, তিনি ডোপিং করে সাত-সাতবার ত্যুর দ্য ফ্রঁস জিতেছেন৷ অথচ সে স্বীকারোক্তি করেছেন ভাবলেশহীন মুখে৷ নিজের ছেলের কথা বলতে গিয়ে কিন্তু সেই পোড়-খাওয়া পেশাদারেরই চোখে জল এসে যায়৷ এরই নাম মনুষ্যচরিত্র, হিরো টু জিরো ল্যান্স আর্মস্ট্রং'ও যার ব্যতিক্রম নন৷
তাঁর নিজের সৃষ্ট আর্মস্ট্রং ক্যানসার চ্যারিটি থেকে সরে দাঁড়ানোটাও নাকি সে'রকম একটা মুহূর্ত ছিল৷ তার কারণটা, আর্মস্ট্রং'এর ভাষায়: ‘‘ঐ ফাইন্ডেশনটা আমার ষষ্ঠ সন্তানের মতো৷'' সন্তানই বটে৷ ডোপিং কেলেঙ্কারির এক দিনে নাকি সেই ‘সন্তানের' আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ৭৫ মিলিয়ন ডলার - সে'কথা জানিয়েছেন আর্মস্ট্রং নিজেই, ওপ্রা'র সাক্ষাৎকারে৷
এসি / এআই (ডিপিএ, এএফপি, রয়টার্স)