নারী কোথায় নিরাপদ?
২১ জুন ২০১৫বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় এক নারী পুলিশ কর্মীকে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করেছে তাঁর সাবেক স্বামী৷ ধর্ষক নিজেও পুলিশ কর্মকর্তা৷ কর্মকর্তা সাহেব ধর্ষণটা একা করেননি, সমমনাদের সঙ্গে মিলেমিশে করেছেন৷ সাবেক সহধর্মিনীর যন্ত্রণাকে যতটা সম্ভব নারকীয় করতে বন্ধুদেরও সঙ্গে রেখেছিলেন৷ যেমন পুলিশ কর্মকর্তা, তেমনি তার বন্ধুরা৷ ধর্ষণের ‘সুযোগ' নাকি একজনও ছাড়েননি৷
‘অতীত' সম্পর্ক যত তিক্তই হোক, সব কিছুর শেষেও তলানিতে সৌজন্যবোধটুকু তো থাকে, থাকতে হয়৷ সেই বোধ থেকেই প্রাক্তন স্বামীর আহ্বানে এক নারী গিয়েছিলেন খিলগাঁওয়ের তিলপাপাড়ায়৷ বিশ্বাস করে গিয়ে তাঁকে ফিরতে হলো কতগুলো নরপশুর যৌন লালসার শিকার হয়ে!
ভারতের একটি পরিবেশ সংস্থাতেও নরপশুরা সংঘবদ্ধ৷ বেসরকারি সংস্থাটির নামটা বড় হৃদয়-ছোঁয়া – ‘গ্রিনপিস'৷ আহা, সবুজ শ্যামলিমায় যেন এক শান্তির নীড়৷ সেই ‘গ্রিনপিস'-এ কাজ করতে গিয়ে অনেক নারীই জীবনের অনেকটা ‘পিস', অর্থাৎ শান্তি খুইয়েছেন, যৌন হয়রানি, এমনকি ধর্ষণের শিকার হয়েও পাননি সুবিচার৷ বুঝি না, সেখানে পুরুষ কি শুধু দু'রকমের? প্রত্যক্ষ ধর্ষক, যৌন নিপীড়ক এবং তাদের বিরুদ্ধে রুখে না দাঁড়িয়ে প্রকারান্তরে ধর্ষণের মদতদাতা? গ্রিনপিস ইন্ডিয়ার কর্মকর্তাদের যৌন কেলেঙ্কারির খবর পড়ে তো সেরকমই মনে হলো৷
খোদ জাতিসংঘকেও নারীদের জন্য ‘গ্রিনপিস'-এর চেয়ে নিরাপদ মনে করি কী করে? অজপাড়াগাঁয়ে কোনো কিশোরীকে কোনো নিরক্ষর ‘বর্বর' ফুসলিয়ে নিয়ে ধর্ষণ করলে তাকে ‘লম্পট' তো কমপক্ষে বলিই আমরা৷ হাইতিতে নাকি ২৩১ জন নারী জাতিসংঘের শান্তি মিশন কর্মীদের যৌন লালসার শিকার হয়েছেন৷ স্থানীয়দের সাহায্য-সেবা করাটা যাদের শুধু মানবিক দায়িত্ব নয়, চাকরির অবশ্য পালনীয় শর্তও, তারা কিভাবে এক বেলার খাবার, কিংবা রোগাক্রান্ত শিশুকে ওষুধ দেয়ার কথা বলে নারীর দেহে লালসার থাবা বসাতে পারেন? তাহলে হাইতির জাতিসংঘ শান্তি মিশন কি ‘লাম্পট্য সংঘ' হয়ে উঠেছিল?
এমন প্রশ্ন খুব যৌক্তিক হলেও আশার কথা, পরিবর্তন আসছে৷ ভারত, বাংলাদেশ, এমনকি হাইতিতেও ধীরে ধীরে হলেও নারীদের মাঝে পরিবর্তন আসছে৷ অনেক নারীই আর মুখ বুঁজে সব না সয়ে ধর্ষক, নিপীড়কের মুখোশ খুলে দিচ্ছেন৷ এমন সাহসিনীদের সেলুট আর ধর্ষক, নিপীড়কদের জন্য অফুরন্ত ঘৃণা এবং করুণা...