1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নতুন আচরণ বিধিমালা

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪

সরকারি চাকরিজীবীদের স্ত্রী বা স্বামী সক্রিয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না – এমন বিধান করে নতুন বিধিমালার খসড়া তৈরি হচ্ছে৷ এছাড়া সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রাজনীতিতে যুক্ত হলে তা হবে গুরুতর অসদাচরন৷

https://p.dw.com/p/1DJmQ
Symbolbild Arbeitsmigration
প্রতীকী ছবিছবি: picture-alliance/dpa

সরকারি চাকরিতে থেকে সরাসরি রাজনীতিতে অংশগ্রহণ বাংলাদেশে বিরল কোনো ঘটনা নয়৷ তাছাড়া রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নেয়া আজকাল স্বাভাবিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে৷ আবার সরকারি চাকুরে পেশাজীবীরা রাজনৈতিক আদর্শের নানা সংগঠনের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন৷ বিষয়টি এতটাই বাড়াবাড়ি পর্যায়ে পৌঁছেছে যে সরকারও এটা নিয়ে বিব্রত৷ তাই সরকারি চাকরিজীবীদের আচরণ বিধিমালা সংশোধনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে৷

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. কামাল আব্দুল নাসের সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘‘সরকারি কর্মচারীদের আচরণ বিধিমালা সংশোধনের কাজ চলছে৷ এরই মধ্যে মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কাছে মতামত জানতে চওয়া হয়েছে এবং তারা মতামত দিয়েছে৷ এ নিয়ে কয়েক দফা বৈঠকও হয়েছে৷ তাই শীঘ্রই এটা চূড়ান্ত হবে৷''

প্রচলিত সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালায় সরকারি কর্মচারীদের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হওয়ায় নিষেধাজ্ঞা থাকলেও, পরিবার পরিজনের বিষয়ে কিছু বলা নাই৷ শুধু বলা আছে যে, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্ত্রী বা স্বামী রাজনীতিতে জড়িত থাকলে তা সরকারকে জানাতে হবে৷ কিন্তু এই বিধান বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মানা হচ্ছে না৷ মন্ত্রী এমপিসহ অনেক রাজনৈতিক নেতার স্বামী বা স্ত্রী সরকারি চাকরি করলেও তাঁরা সরকারকে তা আনুষ্ঠানিকভাবে জানাচ্ছেন না৷ এমনকি সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিজেরাও রাজনীতিতে জড়াচ্ছেন৷ নিজের এলাকায় রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন, প্রভাব বিস্তার করছেন৷

এ রকম অনেক অভিযোগ জমা পড়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে৷ আর সরকারি চাকুরেদের রাজনীতিতে এই অতি উত্‍সাহের লাগাম টেনে ধরতেই নতুন নীতিমালা কঠোর করা হচ্ছে৷ তবে নতুন এই নীতিমালা প্রযোজ্য হবে নীতিমালা তৈরির পর যাঁরা সরকারি চাকরিতে ঢুকবেন, তাঁদের জন্য৷

এ নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সাবেক সচিব আলি ইমাম মজুমদার ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘সরকারি চাকরিজীবীরা রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না – এই নীতিমালা আগে থেকেই আছে৷ কিন্তু এটা কেউ কেউ মানছেন না৷ তবে সরকারি চাকরিজীবীদের স্বামী বা স্ত্রী সক্রিয় রাজনীতি করতে পারবে না – এ ধরণের বিধিমালা করা সঠিক হবে না৷ কারণ এতে ব্যক্তির নাগরিক অধিকার খর্ব হবে৷ প্রত্যেক ব্যক্তিরই স্বাধীনভাবে বৈধ পেশা বা কাজ বেছে নেয়ার অধিকার আছে৷ তাই কেউ সরকারি চাকরি করলে তাঁর স্বামী বা স্ত্রী রাজনীতি করতে পারবেন না, তা হতে পারে না৷''

তিনি বলেন, ‘‘আসল সমস্যা অন্য জায়গায়৷ আর সেটা হলো স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার প্রশ্নে৷ কোনো সরকারি চাকুরে যেন তাঁর রাজনীতিবিদ স্বামী বা স্ত্রীর ক্ষমতা ব্যবহার করে বাড়তি বা অবৈধ সুবিধা নিতে না পারেন, তা নিশ্চিত করতে হবে৷ এছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রাজনীতি থেকে দূরে রাখার সিদ্ধান্ত নিতে হবে৷ কারণ যাঁরা সরকারে যান, তাঁরা প্রশাসনকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করেন৷ এর সুবিধা নিয়ে কিছু অতি উত্‍সাহী, সুবিধাবাদী সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন৷''
আলি ইমাম মজুমদার বলেন, ‘‘আমি আমার চাকরি জীবনের দীর্ঘ অভিজ্ঞতায় দেখেছি যে, অধিকাংশ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী রাজনীতি থেকে দূরে থাকতে চান৷ কিন্তু কখনো কখনো তাঁরা বাধ্য হয়ে রাজনৈতিক হয়ে ওঠেন৷ দলবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারী হাতে গোনা৷''

জানা গেছে, নতুন বিধিমালায় সরকারের অনুমতি ছাড়া কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ইচ্ছেমতো সম্পদের মালিক হতে পারবেন না৷ প্লট, ফ্ল্যাট বা গাড়ি কিনতে হলে অর্থের উত্‍স সম্পর্কে জানিয়ে সরকারের অনুমতি নিতে হবে৷ আর উত্‍স হতে হবে বৈধ এবং অবশ্যই গ্রহণযোগ্য৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য