সন্দেশখালি, যেখানে নারীরা বিক্ষোভের নেতৃত্বে
দক্ষিণ ২৪ পরগনার সন্দেশখালি বিক্ষোভে উত্তাল। সেই বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিচ্ছেন নারীরা। অভিযোগ, শাসক দলের মদতপুষ্ট নেতারা অত্যাচার করছেন।
শিবু হাজরার পোলট্রি ভাঙচুর
সন্দেশখালিতে শিবু হাজরার তিনটি পোলট্রি ফার্মে ভাঙচুর করা হয়। আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। নারীরা হাতে লাঠি, দা, কাটারি নিয়ে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখান। নারীদের অভিযোগ, তারা আর অত্যাচার সহ্য করতে পারছেন না।
কে এই শিবু হাজরা?
তার পুরো নাম শিবপ্রসাদ হাজরা। তবে এলাকায় তিনি শিবু হাজরা নামেই পরিচিত। সন্দেশখালির বেতাজ বাদশা হলেন তৃণমূলের যুব নেতা শেখ শাহজাহান। তার বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়ে ইডি কর্মকর্তারা মার খেয়েছিলেন। শাহজাহান এখন পলাতক। শিবু হাজরা সেই শাহজাহানের ডান হাত বলে পরিচিত।
কী অভিযোগ?
নারীদের অভিযোগ, শাহজাহান, শিবু হাজরা, উত্তম সর্দাররা এলাকার ত্রাস। তারা নারীদের উপর অত্যাচার করে, লাঞ্ছনা করে, জোর করে জমি দখল করে। নোনা জল চাষের জমিতে ঢুকিয়ে দিয়ে, সেগুলিকে মাছের ভেড়ি করে দেয়া হয়। জোর করে জবরদখল জমিতে চাষ করানো হয়। সাধারণ মানুষকে মারধর করা হয়। তাদের গুণ্ডাবাহিনী বাইকে করে এলাকায় ঘোরে।
কেন টার্গেট শিবু, উত্তমরা?
শিবু হাজরা ও উত্তম সর্দারের পরিচিতি হলো তারা শাহজাহানের ডান ও বাঁ হাত। শাহজাহান এখন পলাতক। তাই এখন মানুষের রাগ গিয়ে পড়েছে শিবু ও উত্তমের উপর। তাদের জায়গা-জমিতে গিয়ে ভাঙচুর হচ্ছে।
রাজ্যপালের কাছে নারীরা
পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সোমবার সন্দেশখালি গেছিলেন। তাকে সামনে পেয়ে নারীরা তাদের ক্ষোভ উগড়ে দেন। নারীরা বলেন, রাজ্যপাল চলে গেলে আবার পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে। তারা তাদের সুরক্ষা নিয়ে চিন্তিত।
পুলিশের উপর ভরসা নেই
নারীরা পোস্টার হাতে ধরে দাঁড়িয়ে আছেন। তাতে লেখা পুলিশের উপর তাদের বিশ্বাস নেই। সাংবাদিকরা কথা বলতে চাইলেই নারীরা বলছেন, তারা মুখ ঢেকে কথা বলবেন। না হলে, পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করতে পারে।
নারীদের ক্ষোভ
সন্দেশখালিতে পুলিশকে নিয়ে তো বটেই, এমনকী পুলিশমন্ত্রীর বিরুদ্ধেও নারীদের ক্ষোভ সামনে এসেছে। নারীর হাতে ধরা এই পোস্টার সেই ক্ষোভের সাক্ষী।
উত্তম সর্দার গ্রেপ্তার
উত্তম সর্দারকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল। বসিরহাট কোর্ট তাকে জামিন দেয়। তাকে আবার পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। উত্তমকে তৃণমূল দল থেকেও বহিষ্কার করেছে।
প্রচুর পুলিশ
সন্দেশখালিতে এখন প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সহিংসতা বরদাস্ত করা হবে না। বিরোধীদের প্রশ্ন, সাধারণ মানুষের উপর যখন অত্যাচার হচ্ছিল, তখন কেন পুলিশের সক্রিয়তা দেখা যায়নি।
সন্দেশখালি থেকে রাজ্যপাল দিল্লিতে
সন্দেশখালি থেকে কলকাতা ফিরেই রাজ্যপাল দিল্লিতে চলে গেছেন। তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সন্দেশখালি নিয়ে কথা বলতে পারেন।
স্মৃতি ইরানির হুঁশিয়ারি
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি সোমবার তৃণমূল কংগ্রেস ও রাজ্য সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, সন্দেশখালির ঘটনা চুপচাপ বসে দেখা হবে না। তিনি দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক করে বলেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করা হোক, শেখ শাহজাহান কোথায়? কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেছেন, সংবাদমাধ্যমের কাছে গ্রামের মেয়েরা তাদের উপর লাঞ্ছনার কথা বলেছেন।
মুখ্যমন্ত্রী বললেন, নারী কমিশন গেছে
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ''সন্দেশখালিতে অশান্তি নিয়ে একাধিক গ্রেপ্তার হয়েছে। রাজ্য নারী কমিশনের টিম পাঠানো হয়েছে। সন্দেশখালিতে যে কেউ যেতে পারেন। তা নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই।''