1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সংসদে ঝড়ের সংকেত

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি৬ ডিসেম্বর ২০১৩

এবারেও কী সংসদের শীতকালীন অধিবেশন অচল করবে বিরোধীপক্ষ? এ প্রশ্নই এখন সংসদ চত্বরে৷ সাধারণ নির্বাচনের আগে এক ঝুড়ি বকেয়া বিল পাশ করাতে সরকার যেমন মরিয়া, তেমনি বিরোধীপক্ষও মরিয়া সরকারকে কোণঠাসা করতে৷

https://p.dw.com/p/1ATYe
ছবি: DW/A. Chatterjee

২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনের আগে সম্ভবত এটাই সংসদের শেষ অধিবেশন৷ মনমোহন সিং সরকার ডজন খানেক গুরুত্বপূর্ণ বিল পাশ করাতে যেমন মরিয়া, তেমনি বিরোধীপক্ষও কোমর বেঁধেছে সেই সব বিতর্কিত বিল নিয়ে সরকারকে কোণঠাসা করতে৷ ফলে সংসদের উভয়কক্ষেই ঝড় উঠতে পারে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষক মহল৷ দ্বিতীয়ত, সদ্য শেষ হওয়া পাঁচটি রাজ্যের বিধানসভা ভোটের ফলাফলের বুথ ফেরত সমীক্ষা যদি সঠিক হয়, তাহলে সরকারকে ফেলতে পারে আরো বিপাকে৷

বিতর্কিত বিলগুলির মধ্যে আছে, সাম্প্রদায়িক হিংসা প্রতিরোধ বিল, মহিলা সংরক্ষণ বিল, লোকপাল বিল, বিমা ক্ষেত্রে বিদেশি বিনিয়োগের ঊর্ধ্বসীমা বিল এবং ভারত-বাংলাদেশ স্থলসীমা চুক্তি বাস্তবায়নে ১১৯তম সংবিধান সংশোধনী বিল৷ বিজেপি, অসম গণপরিষদ এবং তৃণমূল কংগ্রেস এই সংবিধান সংশোধনী বিলের তীব্র বিরোধীতা করবে বলে ঘোষণা করেছে৷ বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব সংবাদমাধ্যমের কাছে বলেছেন, বিল পেশে আপত্তি না থাকলেও বিল পাশে আপত্তি আছে৷ যেহেতু বিষয়টি জটিল, স্পর্শকাতর এবং আবেগজড়িত৷ তাই আসাম ও পশ্চিমবঙ্গসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা জরুরি৷ সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় বিলটি পেশ হয়ে থাকলে আগামী বছরের সংসদীয় নির্বাচনের পর নতুন সরকারের পক্ষে তা পাশ করাতে অসুবিধা হবে না৷ বিজেপি বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের সঙ্গে মৈত্রী সম্পর্ক বজায় রাখতে আগ্রহী৷ অর্থাৎ, মনমোহন সিং সরকারকে এই ঐতিহাসিক চুক্তি বাস্তবায়নের কৃতিত্ব দিতে নারাজ বিজেপি৷

তৃণমূল কংগ্রেসেরও অবস্থান সংসদের বর্তমান অধিবেশনে সরকার যদি সংবিধান সংশোধনী বিল পাশ করাবার চেষ্টা করেন, তাহলে তৃণমূল তাতে বাধা দেবে৷ এ জন্য আরো আলোচনা হওয়া দরকার৷ তৃণমূল সাংসদ মুকুল রায়ের বক্তব্য, রাজ্য সরকারের সঙ্গে বিশদ আলোচনা না করে কীভাবে পাশ হবে এই বিল?

এর আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেছিলেন, ভারত-বাংলাদেশ স্থলসীমা চুক্তি অনুযায়ী ১৬১টি ছিটমহল হস্তন্তরিত হবার কথা৷ ঐ অঞ্চলে যাঁরা বাস করেন তাঁদের সম্মতি আছে কিনা – সেটা দেখতে হবে আগে৷ এ কথা রাজ্য সরকার আগেই জানিয়ে রেখেছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী সালমান খুরশিদকে৷ কারণ ছিটমহল হস্তান্তরিত হলে পশ্চিমবঙ্গ পাবে ৭ হাজার একর আর বাংলাদেশ পাবে ১৭০০০ একর, বলেন তৃণমূল নেত্রী৷

Indien - Premierminister Manmohan Singh und Präsidentin Indischen Kongresspartei Sonia Gandhi
মনমোহন সিং সরকার ডজন খানেক গুরুত্বপূর্ণ বিল পাশ করাতে মরিয়াছবি: dapd

কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে পররাষ্ট্রসচিব সুজাতা সিং ঢাকায় গিয়েছিলেন ক'দিন আগে, বাংলাদেশ সরকারকে এটাই বোঝাতে যে, ভারত সরকার সংসদের শীতকালীন অধিবেশনেই স্থলসীমা চুক্তি বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ৷ উল্লেখ্য, সংসদের গত অধিবেশনে অসম গণপরিষদ এবং তৃণমূলের বাধাদানে রাজ্যসভায় বিল পেশ করা যায়নি৷ দু'দেশের ৪০৯৬ কিলোমিটার অভিন্ন সীমান্ত চিহ্নিত করতে স্থলসীমা চুক্তি হয়েছিল ১৯৭৪ সালে৷ ২০১১ সালে তা সই করেন দু'দেশের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং এবং শেখ হাসিনা৷ ভূখণ্ড হস্তান্তরের জন্য সংবিধান সংশোধন করতে হয় এবং তা পাশ করাতে দরকার হয় সংসদের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের সমর্থন৷ বিপক্ষদলগুলিকে সহমতে আনতে না পারলে সেক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের মতে, হালে পানি না পাওয়া মনমোহন সিং সরকারের পক্ষে এই বিল পাশ করানো কতটা সম্ভব হবে বলা মুশকিল৷

এছাড়া আরো একটি বিতর্কিত বিল নিয়ে সরকার ও বিপক্ষদলের সংঘাতের ইঙ্গিত স্পষ্ট৷ সেটি হলো, সাম্প্রদায়িক হিংসা প্রতিরোধ বিল৷ বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদের প্রার্থী নরেন্দ্র মোদী মনে করেন, এই বিলের খসড়া ত্রুটিপূর্ণ৷ এর ফলে দেশ বিভাজিত হবে৷ সাম্প্রদায়িক হিংসা বাড়বে বই কমবে না৷ কাজেই এই বিলের খসড়া নিয়ে আরো আলোচনা দরকার৷ তাঁর অভিযোগ, আসন্ন সংসদীয় ভোটের দিকে তাকিয়ে কংগ্রেস ঐ বিল পেশ করতে চাইছে৷ তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, এতে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো লঙ্ঘিত হবে৷ কাজেই তা মেনে নেয়া যায় না৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য