ফরাসি যুদ্ধবিমান
১ ফেব্রুয়ারি ২০১২পাঁচ বছরের লম্বা দৌড়ের পর নিকটতম প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী ইউরোফাইটার টাইফুনকে হারিয়ে শেষ পর্যন্ত বাজি জিতে নিল ফ্রান্সের দাসো বিমান নির্মাণ সংস্থার মাঝারি পাল্লার মাল্টি-রোল জঙ্গি বিমান রাফাল৷ ভারতীয় বিমান বাহিনীর জন্য ১২৬টি রাফাল যুদ্ধ বিমান কেনার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়৷ এর চুক্তি মূল্য হবে ১১০০ কোটি মার্কিন ডলার অর্থাৎ ৫৫ হাজার কোটি টাকা৷ সামরিক সওদায় এত বড় অঙ্কের চুক্তি এর আগে আর হয়নি৷
চুক্তি সই হবে মার্চের পর নতুন অর্থবর্ষে৷ চুক্তি অনুসারে প্রথম দফায় আগামী ২-৩ বছরের মধ্যে দিতে হবে ১৮টি যুদ্ধ বিমান৷ বাদবাকিগুলি তৈরি হবে প্রযুক্তি হস্তান্তর শর্ত অনুযায়ী ভারতের ব্যাঙ্গালোরের হিন্দুস্থান এয়্যারোনটিক্স কারখানায়৷
৭০-এর দশকে কেনা মিগ-২১-এর জায়গা নেবে এই যুদ্ধবিমান৷ প্রাথমিক দৌড়ে ছিল ৫টি কোম্পানি৷ দুটি মার্কিন,একটি রাশিয়ান একটি সুইডেনের এবং একটি জার্মানি, স্পেন, ব্রিটেন ও ইটালির যৌথ সংস্থা ইউরোপিয়ান কনসর্টিয়ামের৷ টেন্ডার ডাকা হয় ২০০৭ সালে৷ যোগ্যতার বিভিন্ন মাপকাঠিতে বাছাই হয়৷ যেমন প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ, দাম,প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং যন্ত্রাংশ সরবরাহ ইত্যাদি৷ ইউরোফাইটার হেরে যায় মূলত দামের মাপকাঠিতে৷ চারটি দেশের যৌথ সংস্থা বলে যন্ত্রাংশ পেতে হয়ত অসুবিধা হতে পারে যেটা ভারতের হয়েছিল মিগ বিমানের যন্ত্রাংশ পেতে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়া পর৷
পর্যবেক্ষকদের ধারণা, এই চুক্তির ফলে দাসো কোম্পানির আর্থিক সঙ্কট কাটবে এবং সামগ্রিকভাবে ফ্রান্সের অর্থনীতি পাবে নতুন অক্সিজেন৷ ভারতের সঙ্গে ফ্রান্সের সম্পর্ক হবে মজবুত ৷ প্রশ্ন উঠেছে,এটা কি শুধুই বাণিজ্যিক কারণ? রাজনৈতিক কারণ হলো জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যপদের জন্য ফ্রান্সকে পাশে পাবে ভারত৷ ২০১০ সালে ভারতে এসে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নিকোলা সারকোজি ভারতকে প্রতিশ্রুতিও দিয়ে গেছেন৷ পর্যবেক্ষকরা অবশ্য এর ফলে দক্ষিণ এশিয়ায় অস্ত্র প্রতিযোগিতা বাড়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুনদিল্লি
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন