লোকপাল বিল নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলির ঘোলা অবস্থান
১ জুলাই ২০১১লোকপাল বিলের যে সব বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে নাগরিক সমাজের মতভেদ রয়ে গেছে, সেবিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলির মতামত জানতে তেসরা জুলাই বসছে সর্বদলীয় বৈঠক৷ রাজনৈতিক দলগুলির মত নিয়েই বিলটি চূড়ান্ত করা হবে৷ নাহলে সংসদে তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের সন্মুখীন হতে হবে৷ তাই শুরু হয়ে গেছে আলোচনা প্রক্রিয়া৷ শুরু করেছে একদিকে সরকার অন্যদিকে আন্না হাজারেব নেতৃত্বে নাগরিক সমাজ৷ উদ্দেশ্য, রাজনৈতিক দলগুলির সমর্থন আদায় করা৷
আন্না হাজারে আজ নতুনদিল্লিতে প্রধান বিরোধী দল বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে ৯০ মিনিট ধরে বৈঠক করেন৷ ব্যাখ্যা করেন নাগরিক সমাজের তৈরি করা খসড়া লোকপাল বিলের বিভিন্ন ধারা৷ বিজেপি বলেছে, তারা কড়া লোকপাল বিলের পক্ষে৷ লোকপাল সংস্থার সদস্যদের থাকতে হবে পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি৷ তবে বিজেপি শরিক দলগুলির বৈঠকের পরই তাদের অবস্থান চূড়ান্ত হবে বলেছেন বিজেপি নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদ৷এক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলি দ্বিধাবিভক্ত৷ বামদল বলেছে, নখদন্তহীন বিলকে তারা সমর্থন করবেনা৷
সরকার ও নাগরিক সমাজের মধ্যে যে সব জায়গায় মতভেদ, সেগুলি হলো এক, প্রধানমন্ত্রী, বিচার বিভাগ, সাংসদ, ভিজিলেন্স শাখা, কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো ঐ বিলের আওতায় থাকবে কিনা৷ সরকার বলছে না৷ দুই, লোকপালের সদস্যদের বাছাই করবে কে ? সরকার বলছে সে দায়িত্ব সরকারের৷ তিন, লোকপালের বিরুদ্ধেই যদি দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে তদন্তের দাবি কে জানাবে ? সরকার বলছে সে ক্ষমতা থাকবে সরকারের৷ এজন্য সরকার ও নাগরিক সমাজ দুটি পৃথক পৃথক খসড়া বিল তৈরি করেছে৷
এবিষয়ে ইন্দিরা গান্ধী মুক্ত বিশ্ববিদ্যালের সমাজ বিজ্ঞানের অধ্যাপক স্বরাজ বসু ডয়চে ভেলেকে বললেন, লোকপালের ক্ষমতা হবে সর্বব্যাপী৷ সেই কাঠামোর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী বা বিচার বিভাগ বা গোয়েন্দা বিভাগ তার আওতায় আসতেই পারে৷ লোকপালের সদস্য যাঁরা হবেন তাঁরা সৎ হবেন ধরে নেয়া যেতে পারে৷ কিন্তু তার গ্যারান্টি কে দেবে ? রাজনৈতিক দলগুলির সরাসরি সমর্থন না করার কারণ সম্পর্কে অধ্যাপক বসু বলেন, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির জায়গাটা নাগরিক সমাজকে ছেড়ে দিতে তারা রাজি নয়৷ সংসদীয় গণতন্ত্রে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাই আইন পাশ করবেন মানুষের ভালমন্দের কথা ভেবে৷ তবে কড়া আইন করলেই সমাজ থেকে দুর্নীতি দূর হয়ে যাবে একথা মনে করার কারণ নেই৷ যদিনা মানুষের ভোগবাদী মানসিকতার পরিবর্তন হয়৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুনদিল্লি
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক