লিবিয়ায় মিশরীয় বিমান হানা
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫মিশরীয় বিমান বিভিন্ন ‘দায়েশ' – আর্বি ভাষায় ইসলামিক স্টেটের আদ্যক্ষর – শিবিরের উপর হানা দেয়৷ দৃশ্যত এগুলি প্রশিক্ষণ শিবির এবং সেই সঙ্গে অস্ত্রভাণ্ডারও বটে৷ মিশরের সামরিক বাহিনীর তরফ থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে স্পষ্ট বলা হয়েছে যে, কপটিক খ্রিষ্টানদের হত্যার প্রতিশোধ হিসেবেই এই আক্রমণ চালানো হয়েছে৷
সোমবারের এই বিবৃতি গুরুত্বপূর্ণ, কেননা মিশর লিবিয়ায় সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার কথা এই প্রথম প্রকাশ্যভাবে স্বীকার করল৷ গতবছর মিশর এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহী লিবিয়ায় এক পর্যায় রহস্যময় বিমান হানায় অংশ নেয়, বলে মার্কিন কর্মকর্তারা সে'সময় জানিয়েছিলেন৷
লিবিয়ার জঙ্গিরা গত ডিসেম্বর এবং জানুয়ারি মাসে মোট ২১ জন বহিরাগত শ্রমিককে সির্তে শহর থেকে অপহরণ করে৷ এরা ছিলেন মিশর থেকে আগত কপ্টিক খ্রিষ্টান৷ তাদের শিরশ্ছেদের যে দৃশ্য এবার ইন্টারনেটে দেখানো হয়েছে, তা থেকে প্রমাণ হয় যে, জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের একটি প্রশাখা ইটালির দক্ষিণতম প্রান্ত থেকে মাত্র ৮০০ কিলোমিটার দূরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে৷ এমনকি ঐ ভিডিও-তে একজন জঙ্গিকে বলতে শোনা গেছে যে, তারা এবার ‘‘রোম জয়'' করার পরিকল্পনা করছে৷
সিরিয়া এবং ইরাকের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ এখন ইসলামিক স্টেটের দখলে৷ তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকার বাইরে এ ধরনের শিরশ্ছেদের ঘটনা এই প্রথম৷ এবং সেই শিরশ্ছেদের ভিডিও ছবি তোলা হয়েছে সর্বাধুনিক সরঞ্জাম এবং উচ্চমানের প্রক্রিয়া ব্যবহার করে৷
কপ্টিক খ্রিষ্টানদের হত্যাকাণ্ডের জন্য সাতদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন কায়রো সরকার৷ সেই সঙ্গে মিশরীয়দের লিবিয়া যাত্রা আপাতত নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷ মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাতাহ আল-সিসি রবিবার সন্ধ্যায় জাতির প্রতি ভাষণে বলেছেন: ‘‘মিশর তথা সারা বিশ্ব আজ বিভিন্ন চরমপন্থি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে তীব্র যুদ্ধে লিপ্ত৷ এ সব জঙ্গি গোষ্ঠীর মতাদর্শ এবং লক্ষ্য একই৷''
আল-সিসি টেলিফোনে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রঁসোয়া ওলঁদ-এর সঙ্গে কথা বলেছেন এবং উভয় নেতা বিষয়টি পুনরায় বিশ্বনিরাপত্তা পরিষদে উত্থাপন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন৷ বিষয় বলতে: লিবিয়ায় ইসলামিক স্টেটের কার্যকলাপ ও সম্প্রসারণ, যা রেখার পন্থা বিবেচনা করা প্রয়োজন৷ প্রসঙ্গত, ফ্রান্স মিশরকে ২৪টি রাফাল জঙ্গিজেট বিক্রয় করতে চলেছে৷ এই সর্বাধুনিক জঙ্গি বিমান এই প্রথম কোনো বিদেশি রাষ্ট্রকে বিক্রয় করা হচ্ছে৷
এসি/ডিজি (এপি, রয়টার্স, এএফপি)