লিবিয়ার নতুন প্রধানমন্ত্রী আব্দেল রহিম আল-কিব
১ নভেম্বর ২০১১লিবিয়ার নতুন প্রধানমন্ত্রী আল-কিব
আব্দেল রহিম আল-কিব লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলির বাসিন্দা৷ তিনি একজন শিক্ষাবিদ এবং ধনী ব্যবসায়ী৷ মুয়াম্মার গাদ্দাফির বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ায়, কিব'কে দীর্ঘ সময় বিদেশে কাটাতে হয়েছে৷ তবে গাদ্দাফিকে উৎখাত আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন তিনি৷ সোমবার রাতে লিবিয়ার অন্তর্বর্তী প্রশাসন এনটিসি আব্দেল রহিম আল-কিব'কে প্রধামন্ত্রী নির্বাচিত করে৷ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে লিবিয়ায় মানবাধিকার প্রতিষ্ঠাকে অন্যতম দায়িত্ব হিসেবে মনে করছেন কিব৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা নিশ্চিতভাবে বলতে পারি যে, আমরা এমন একটি জাতি গড়তে যাচ্ছি যারা মানবাধিকারকে সম্মান করবে এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনকে বরদাস্ত করবে না৷ তবে এজন্য আমাদের সময়ের প্রয়োজন''৷ কিব অর্ন্তবর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী মাহমুদ জিব্রিল'এর স্থলাভিষিক্ত হলেন৷ গত ২০ অক্টোবর গাদ্দাফির মৃত্যুর পর পদত্যাগ করেন জিব্রিল৷
অস্ত্র লুটের খবরে উদ্বেগ
ক্ষমতায় থাকাকালীন মুয়াম্মার গাদ্দাফি যেসব অস্ত্র জমা করেছিলেন, সেগুলোর ভাগ্যে কি ঘটছে - তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ৷ শোনা যাচ্ছে লিবিয়া এবং সেদেশের প্রতিবেশিদেরকে এই বিষয়ে সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে পরিষদ৷ বিশেষ করে বিধ্বংসী এসব অস্ত্র যাতে সন্ত্রাসী, চরমপন্থীদের কাছে না পৌঁছায় - সেই ব্যবস্থা নিতে বলেছে জাতিসংঘ৷ আল-কায়েদা এবং অন্যান্য জঙ্গিগোষ্ঠীর কাছে এসব অস্ত্র পৌঁছালে তা বিপদজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে৷ ধারণা করা হচ্ছে, গাদ্দাফির ভাণ্ডারে এমন কিছু ক্ষেপণাস্ত্র ছিল যেগুলো ভূমি থেকে যাত্রীবাহী বিমানে আঘাত সক্ষম৷ জঙ্গি গোষ্ঠীর কাছে এধরনের অস্ত্র পৌঁছালে তার পরিনাম ভয়াবহ হতে পারে৷ এছাড়া, লিবিয়ায় থাকা রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংস করতে সেদেশের নতুন প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ৷
কোথায় সাইফ আল-গাদ্দাফি?
সাইফ আল-গাদ্দাফিকে লিবিয়াতেই বিচারের কাঠগড়ায় হাজির করতে চায় এনটিসি৷ সেদেশের বিচারমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-আলাগী জানিয়েছেন, সাইফ'এর বিরুদ্ধে হত্যা, দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে৷ এসবের বিচার লিবিয়ার মাটিতেই হবে এবং তিনি বিচার প্রক্রিয়ার বাইরে যেতে পারবেন না৷ সাইফ'এর পরিণতি তাঁর বাবার মতো হোক, এমনটা অবশ্য চান না বিচারমন্ত্রী৷ বলাবাহুল্য, গাদ্দাফিকে সির্ত শহরে আহতাবস্থায় আটকের পর নির্যাতন এবং গুলি করা হয়৷ যদিও এনটিসি দাবি করেছে, গাদ্দাফি ক্রসফায়ারে নিহত হয়েছে৷ কিন্তু সেসময়ের বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজে গাদ্দাফি'কে নির্যাতনের এবং গুলি করার প্রমাণ পাওয়া যায়৷
সাইফ আল-ইসলাম এই মুহূর্তে কোথায় আছেন, সেটা নিয়ে অবশ্য সঠিক কোন তথ্য পাওয়া যায়নি৷ অনেকেই মনে করেন, তিনি লিবিয়ার মরুঅঞ্চলে অবস্থান করছেন এবং নাইজারের তুয়ারেগ সম্প্রদায় তাঁকে সহায়তা প্রদান করেছে৷ তবে দ্য হেগ-এর আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সঙ্গে পরোক্ষভাবে যোগাযোগ করেছেন সাইফ৷ তিনি আন্তর্জাতিক আদালতে আত্মসমর্পণে আগ্রহী বলেও খবরে প্রকশ৷ কোনো কোনো পক্ষ অবশ্য দাবি করছে, আফ্রিকার কোনো একটি নিরাপদ দেশে পালিয়ে যেতে চেষ্টা করছেন গাদ্দাফি পুত্র৷
প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ