1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

লাদাখ সংঘাত নিয়ে বিস্ফোরক অস্ট্রেলিয়ার সংবাদপত্র

৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২

২০২০ সালে গালওয়ানে ভারত-চীন সংঘাতে বহু চীনা সেনার মৃত্যু হয়েছিল। দাবি অস্ট্রেলিয়ার সংবাদপত্র 'ক্ল্যাক্সনে'র।

https://p.dw.com/p/46VCN
ভারত-চীন
ছবি: Yawar Nazir/Getty Images

গালওয়ান সংঘাতের পর ভারত জানিয়েছিল সেনা অফিসার কর্নেল সন্তোষ বাবু-সহ তাদের ১৯ জন সেনা নিহত হয়েছেন। উল্টোদিকে চীন প্রাথমিকভাবে তাদের কোনো ক্ষয়ক্ষতির কথা জানায়নি। পরে অবশ্য জানানো হয় একজন সেনার জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছে। নিহত সেনার নাম জুনিয়র সার্জেন্ট ওয়্যাং জুওরান।

সংবাদপত্র ক্ল্যাক্সনের দাবি, ২০২০ সালের ১৫ জুন রাতে লাদাখের সীমান্তবর্তী অঞ্চল গালওয়ান উপত্যকায় ওই সংঘাতের পর তারা একটি দল তৈরি করে ঘটনার তদন্ত শুরু করে। যে দলে একাধিক সোশ্যাল মিডিয়া বিশেষজ্ঞ ছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে অনুসন্ধান করে তারা চীনের সোশ্যাল মিডিয়া থেকে এই সংক্রান্ত বেশ কিছু তথ্য পান। যার সঙ্গে চীনা সেনা বা প্রশাসনের দাবি মেলে না। সংবাদপত্রটির দাবি, ওই ঘটনায় অন্তত ৪২ জন চীনা সেনার মৃত্যু হয়েছিল। যার অধিকাংশই গালওয়ান নদীর জলে ভেসে গেছেন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ক্ল্যাক্সনের সম্পাদক অ্যান্টনি ক্ল্যান জানিয়েছেন, ''ওই দিন রাতে ভারতীয় সেনা কর্নেল সন্তোষ বাবুর নেতৃত্বে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। বিতর্কিত অঞ্চলে চীন ছাউনি বানিয়েছে কি না, তা দেখতেই তারা সেখানে যায়। চীনের সেনা সেখানে আগে থেকেই ছিল। তাদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এলাকা ছেড়ে ফেরার সময় বহুচীনের সেনা গালওয়ানের জলে ভেসে যায়।''

ক্ল্যানের দাবি, তারা যে তথ্য প্রকাশ করেছেন, তার অধিকাংশই প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান থেকে পাওয়া। চীনের সোশ্যাল মিডিয়ায় যা প্রকাশ হয়েছিল এবং পরে মুছে ফেলা হয়। গোটা ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা রয়েছে ক্ল্যাক্সনের রিপোর্টে। যেখানে বলা হয়েছে, কর্নেল সন্তোষ বাবু যখন ঘটনাস্থলে পৌঁছান, তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন চীনের কর্নেল কি ফ্যাবাও। তার সঙ্গে ছিল পিএলএ-এর অন্তত ১৫০ জন সেনা। সন্তোষ বাবু পিএলএ-এর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন। কিন্তু কি ফ্যাবাও ততক্ষণে চীনের সেনাদের নিয়ে আক্রমণাত্ম ফর্মেশন বানিয়ে ফেলেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা ভারতীয় সেনার উপর হামলা চালায়। দুই তরফে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। কর্নেল সন্তোষ বাবুর মৃত্যু হয়। দুই তরফের সেনাই প্রবল ঠান্ডা জলে পরে যায়। এর মধ্যেই কর্নেল ফ্যাবাও মাথায় আঘাত পান। তিনি ঘটনাস্থল থেকে পিছোতে শুরু করেন। পিএলএ-এর এক ব্যাটেলিয়ন কম্যান্ডার এবং এক সেনা কর্নেলকে গার্ড করে লড়তে থাকেন। বেশ কিছুক্ষণ লড়াই চলার পর ওই দুই সেনার মৃত্যু হয়।

ফ্যাবাও চলে যাওয়ার পর তিন সেনা অফিসারের মৃতদেহ দেখতে পায় চীনা সেনা। এরপরেই তারা দ্রুত পিছোতে শুরু করে। সে সময় ওয়াটার প্যান্ট পরার সুযোগও তারা পায়নি। সে সময় গালওয়ানের প্রবল ঠান্ডা জলে অন্তত ৩৮ জন সেনা ভেসে যায়। তাদের সকলেরই মৃত্যু হয়েছে।

ওই দিনের সংঘর্ষে গুরুতর আহত হয়েছিলেন কর্নেল ফ্যাবাও। এবারের বেজিং উইন্টার অলিম্পিকে তিনি ছিলেন অন্যতম মশালবাহক। চীনে তাকে হিরোর সম্মান দেওয়ান দেওয়া হয়েছে। যদিও অ্যামেরিকা এর বিরোধিতা করেছে। তারা বলেছে, ফ্যাবাওকে মশালবাহক করে চীন অলিম্পিকে রাজনীতি ঢোকানোর চেষ্টা করছে।

অস্ট্রেলিয়ার সংবাদপত্রের এই খবর নিয়ে চীন এখনো পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি। ভারতীয় প্রশাসনের তরফেও এখনো পর্যন্ত কোনো সরকারি বিবৃতি দেওয়া হয়নি। তবে ঘটনার পরেই ভারত দাবি করেছিল, ভারতীয় সেনার পাশাপাশি বহু চীনের সেনারও মৃত্যু হয়েছে।

এসজি/জিএইচ (ক্ল্যাক্সন, পিটিআই, এনডিটিভি)