লাদাখের গালওয়ানে চীনের পতাকা, বিতর্ক
৩ জানুয়ারি ২০২২২০২০ সালের জুন মাসে লাদাখের গালওয়ানে মুখোমুখি সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছিল ভারত এবং চীনের সেনা। দুইপক্ষের হাতাহাতিতে মৃত্যু হয়েছিল বেশ কিছু ভারতীয় সেনা জওয়ানের। চীনের সেনা অফিসারের মৃত্যুর খবরও শোনা গেছিল। যার জেরে দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিন স্ট্যান্ডঅফ চলে। অর্থাৎ, দুই দেশের সেনা ওই অঞ্চলে মুখোমুখি অবস্থান করতে শুরু করে। পরে একাধিক বৈঠকের পর দুই দেশে সেনা সরাতে সম্মত হয়। এবার সেই গালওয়ান নিয়েই নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত নতুন বছরের প্রথম দিন।চীনের একটি সরকারি সংবাদমাধ্যমের টুইটার হ্যান্ডেলে একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়। যেখানে দেখা যায়, গালওয়ান উপত্যকায় চীনের পতাকা তুলে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাচ্ছে সেনা। ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যায় ভারতে। সোমবার ওই ভিডিও দেখিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জবাব চেয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী।
চীনের ওই ভিডিও-র ক্যাপশনে বলা হয়েছে, যে পতাকাটি তোলা হয়েছে, তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর আগে বেজিংয়ের তিয়েনআনমেন স্কোয়্যারে ওই পতাকা তোলা হয়েছিল। নববর্ষের শুভেচ্ছা জানানোর জন্যই ওই পতাকা ওখানে তোলা হয়েছিল বলে ভিডিও-তে দাবি করা হয়।
গালওয়ান নিয়ে ভারত এবং চীনের মধ্যে বিতর্ক দীর্ঘদিনের। গালওয়ানে ভারতীয় ভূখণ্ডের বেশ কিছু অঞ্চল চীন দখল করে রেখেছে বলে ভারতের দাবি। যা নিয়ে ২০২০ সালে সংঘাত হয়। এরপর একাধিক বৈঠক হয় দুই দেশের সেনা পর্যায়ে। কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়নি। শেষপর্যন্ত দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক হয়। তারপর ঠিক হয়, সংঘাতের অঞ্চল থেকে দুই দেশে দুই কিলোমিটার করে পিছিয়ে যাবে। এলাকাটি সেনামুক্ত করা হবে। গত বছর তা বাস্তবায়িত হয়।
ভিডিও দেখে বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, সংঘাতের ওই অঞ্চলেই পতাকা তোলা হয়েছে। তবে ভারতীয় সেনার সূত্র ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছে, সংঘাতের এলাকায় পতাকা তোলা হয়নি। স্যাটেলাইট ছবি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গালওয়ান নদীর বাঁক থেকে বেশ খানিকটা দূরে পতাকা তোলা হয়েছে। যেখানে এখন চীন অবস্থান করছে। বিতর্কিত অঞ্চলের দুই কিলোমিটারের মধ্যে পতাকা তোলা হয়নি।
প্রশ্ন হলো, বিতর্কিত অঞ্চলে পতাকা তোলা না হলেও, চীন যেখানে এ কাজ করেছে, তা কি চীনেরই এলাকা? ভারতীয় বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, ওই এলাকাও চীন 'দখল' করে রেখেছে। অন্য অংশের বক্তব্য, ওই এলাকাটিও বিতর্কিত অঞ্চল। কিন্তু তা দীর্ঘদিন ধরে বিতর্কে রয়েছে। সাম্প্রতিক বিতর্কিত এলাকার মধ্যে ওই অঞ্চলটি পড়ে না।
তবে বিষয়টি নিয়ে রাজনীতির জল যে আরো ঘোলা হতে পারে, রাজনৈতিক মহলের একটি বড় অংশ মনে করছে। উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনের আগে কংগ্রেস বিষয়টি নিয়ে আরো সরব হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
এসজি/জিএইচ (চীনের টুইট, এনডিটিভি)