হিন্দু অধিবাসীদের ওপর হামলা
২৩ মে ২০১৮সংস্থাটির মতে, সন্ত্রাসীরা এই হামলা চালায় গত বছরের ২৫ আগস্ট৷ একইদিনে তারা কয়েকটি পুলিশ পোস্টেও হামলা চালিয়েছিল, যেখান থেকে এবারের সংকট শুরু৷
এই ঘটনার পরই মিয়ানমারের সেনা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী খুবই নিষ্ঠুরভাবে সাধারণ রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন শুরু করে, যার ফলে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন, যারা বহু বছর ধরে সে দেশে বৈষম্য ও নির্যাতনের শিকার৷
জাতিসংঘ সেনাবাহিনীর এই ক্র্যাকডাউনকে ‘জাতিগত নিধন’ বলে আখ্যায়িত করে৷ কিন্তু নানা অপরাধের সঙ্গে রোহিঙ্গা জঙ্গিদেরও যোগসাজশের প্রমাণ মিলেছে, যার মধ্যে রাখাইনের উত্তরতম অঞ্চলে হিন্দুদের ওপর হামলার ঘটনাও আছে৷
গত সেপ্টেম্বরে মিয়ানমার সেনারা এএফপিসহ বেশ কিছু গণমাধ্যমকে সেখানে নিয়ে যায়, এবং কবর খুড়ে বের করে আনা পঁচা গলা মৃতদেহগুলো দেখায়৷ সে সময় আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) এই ঘটনার দায় স্বীকার করেনি৷
তবে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের রিপোর্ট বলছে, নতুন একটি তদন্তে নিশ্চিত হয়েছে যে, উত্তর মংডুতে খ মওঙ সেইক গ্রামে রোহিঙ্গা জঙ্গিরা ৫৩ জনকে হত্যা করেছে, যাদের বেশিরভাগই শিশু৷
‘‘এই নৃশংসতা ততটাই ভয়াবহ, যতটা মিয়ানমারের সেনা রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর চালিয়েছে,’’ মন্তব্য করেছেন অ্যামনেস্টির ক্রাইসিস রেসপন্স ডিরেক্টর তিরানা হাসান৷
এই ঘটনায় বেঁচে যাওয়া আটজনের জবানবন্দী থেকে মানবাধিকার সংস্থাটি যে প্রতিবেদন তৈরি করেছে, তাতে বলা হয়, মাস্ক পরা অনেকগুলো লোক হিন্দু অধিবাসীদের চোখ বন্ধ করে হাঁটিয়ে শহরের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়৷
‘‘তারা পুরুষদের জবাই করে৷ আমাদের বলা হচ্ছিল আমরা যেন সেদিকে না তাকাই৷ তাদের হাতে ছুরি ছিল৷ কারো কারো হাতে কোদাল ও লোহার রড ছিল,’’ ১৮ বছর বয়সি রাজ কুমারি এ সব কথা অ্যামনেস্টিকে জানায়৷
আরেকজন অভিযোগ করে বলেন যে, মানুষের যতটা আগ্রহ রোহিঙ্গা নিধনের বিষয়ে, ততটা আগ্রহ তাদের ওপর যে নির্যাতন হয়েছে তাতে নেই৷
অন্যদিকে, মিয়ানমার সরকারেরও অভিযোগ, আন্তর্জাতিক অঙ্গন রোহিঙ্গাদেরই কেবল চোখে দেখছে, অন্য সম্প্রদায়ের মানুষ যে কতটা সহিংসতার শিকার সেটি দেখছে না৷
ডেভিড ম্যাথিসন নামের এক বিশ্লেষক বলেছেন, যেহেতু এ ধরনের ঘটনাও ঘটেছে, তাহলে তো মিয়ানমার সরকারের অবশ্যই নিরপেক্ষ তদন্ত করতে দেয়া উচিত৷
এএফপিকে তিনি বলেন, ‘‘সাহায্যকারী সংস্থাগুলোকে, বিশ্লেষকদের ও সাংবাদিকদের না প্রবেশ করতে দিলে সবাই তো মিয়ানমারকেই দোষারোপ করবে৷’’
জেডএ/ডিজি (এএফপি)