গণহত্যার শিকার রোহিঙ্গারা?
১ মার্চ ২০১৮জার্মানির রাজধানী বার্লিনের ইহুদি জাদুঘরে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নেন গণহত্যা বিষয়ক একাধিক গবেষক, অধ্যাপক, রোহিঙ্গা অ্যাক্টিভিস্ট এবং আইনজীবীরা৷ ‘বার্লিন কনফারেন্স অন রোহিঙ্গা জেনোসাইড' শীর্ষক সম্মেলনে বক্তারা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য মিয়ানমারে নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় পর্যাপ্ত উদ্যোগ নিচ্ছে না বলে মত দেন৷
বার্লিন সম্মেলনের আহ্বায়ক ড. মারিয়া দো মার কাস্ত্রো ভ্যারেলা এই বিষয়ে বলেন, ‘‘অনেকে বলেন, আমাদের গণহত্যার কথা বলা উচিত নয়৷ কেননা, গণহত্যার মানদণ্ড পূর্ণ হয়নি৷ কিন্তু আমরা মনে করি, সেটা হয়েছে৷ মিয়ানমারে গণহত্যা হচ্ছে৷ তাই রোহিঙ্গাদের রক্ষায় আন্তর্জাতিক সুশীল সমাজ এবং বিভিন্ন রাষ্ট্রের উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি৷''
বিশেষজ্ঞরা রাখাইনে গণহত্যা হচ্ছে বললেও জাতিসংঘ সেটা মনে করছে না৷ এর একটি ব্যাখ্যাও দিয়েছেন বার্লিন সম্মেলনে অংশ নেয়া বক্তারা৷ তাঁরা মনে করেন, কোনো দেশে গণহত্যা পরিচালিত হচ্ছে স্বীকার করা হলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য সেটা বন্ধে উদ্যোগ নেয়ার দায়িত্ব তৈরি হয়৷ রাখাইন অঞ্চলের সঙ্গে যেহেতু চীনসহ একাধিক শক্তিশালী রাষ্ট্রের ব্যবসায়িক স্বার্থ জড়িত আছে, তাই তাদের চাপে কঠোর হতে পারছে না জাতিসংঘ৷
বার্লিনে ইহুদি জাদুঘরের কাছেই হলোকস্ট মেমোরিয়াল অবস্থিত৷ চট্টগ্রাম থেকে আসা রোহিঙ্গা আইনজীবী সুলতানা রাজিয়া সম্মেলনের ফাঁকে মেমোরিয়াল পরিদর্শন করেন৷ তিনি মনে করেন, রোহিঙ্গাদের নির্মূলের শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছে মিয়ানমার৷
তবে তথ্য-উপাত্ত যা-ই থাক, রাখাইনে গণহত্যা বা নির্বিচারে রোহিঙ্গা হত্যা হচ্ছে বলে মানতে রাজি নয় মিয়ানমার৷ সেদেশের সরকারের এক মুখপাত্র বলেন, ‘‘রাখাইনের ঘটনা প্রবাহের সঙ্গে ‘জাতিগত নির্মূল' বা ‘গণহত্যার' মতো শব্দ ব্যবহারে আপত্তি জানাচ্ছে সরকার৷''
উল্লেখ্য, মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার প্রায় দশ লাখ রোহিঙ্গা বর্তমানে বাংলাদেশে শরণার্থী হিসেবে অবস্থান করছেন৷ তাঁরা শীঘ্রই নিজেদের দেশে ফিরে নিরাপদে জীবনযাপন করতে পারবেন, এমন সম্ভাবনা দেখছেন না বিশেষজ্ঞরা৷
এ সংক্রান্ত ভিডিও প্রতিবেদনটি দেখতে ক্লিক করুন এখানে৷