রাশিয়ায় পাঁচ হাজার নাভালনি সমর্থক আটক

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনের বিরোধিতা করার জন্য সবচেয়ে পরিচিত ৪৪ বছর বয়সি আলেক্সি নাভালনি৷ গত আগস্টে পুটিন ও অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা এফএসবি তাকে বিষ দিয়ে হত্যার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ তার৷ জার্মানিতে প্রায় পাঁচ মাস চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরলে গত ১৭ জানুয়ারি মস্কো বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ নাভালনির মুক্তির দাবিতে দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে৷

রবিবার রাশিয়ার একশ’র বেশি শহরে নাভালনির মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ হয়েছে৷ এদিন পাঁচ হাজার তিনশ’র বেশি ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছে পর্যবেক্ষক সংস্থা ‘ওভিডি ইনফো’৷ বিরোধী পক্ষের সমাবেশ থেকে কতজনকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, সে হিসেব রাখে ওভিডি৷ এই সংস্থার হিসেবে মস্কো থেকে প্রায় ১,৮০০ জন ও সেন্ট পিটার্সবার্গ থেকে প্রায় ১,২০০ জনকে আটক করা হয়৷

ওভিডি বলছে, ৩১ শহর থেকে সর্বোচ্চ ৯০ জনের মতো সাংবাদিককে আটক করা হয়েছে৷ আটক বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ৫০ জনেরও বেশি জনকে আটক অবস্থায় মারধর করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি৷

ওভিডি সংস্থা ৯ বছর আগে কার্যক্রম শুরু করে৷ এই সময়ের মধ্যে রবিবারই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ব্যক্তিকে আটক করা হয় বলে জানিয়েছে তারা৷ এর আগের সপ্তাহান্তে প্রায় চার হাজার বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছিল৷ উপরের ছবিটি ২৩ জানুয়ারির৷ এতে এক বিক্ষোভকারীকে ধরে নিয়ে যেতে দেখা যাচ্ছে৷

বিক্ষোভ আয়োজনের অনুমোদন না থাকায় আটক ব্যক্তিদের জরিমানা কিংবা কারাদণ্ড হতে পারে৷

রবিবারের বিক্ষোভে অনেক গুণ্ডা ও উসকানিদাতা অংশ নিয়েছে বলে সোমবার দাবি করেছেন ক্রেমলিনের এক মুখপাত্র৷ তাদের সঙ্গে আলোচনা অসম্ভব বলে জানিয়েছেন তিনি৷

২০১৪ সালে এক মামলায় নাভালনির বিরুদ্ধে সাসপেন্ডেড রায় দেয়া হয়েছিল৷ সম্প্রতি সেটিকে বাস্তবে পরিণত করার আবেদন করেছে জেল কর্তৃপক্ষ৷ মঙ্গলবার সেই আবেদনের উপর রায় দেয়া হবে৷ তবে জেনারেল প্রসিকিউটরস অফিস সোমবার জানিয়েছে, তারা জেল কর্তৃপক্ষের আবেদন সমর্থন করছে৷ ফলে নাভালনির আড়াই বছরের জেল হতে পারে৷

নাভালনিকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে রাশিয়ার সঙ্গে একটি গ্যাসলাইন প্রকল্প থেকে সরে আসতে জার্মানির প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে বলে সোমবার জানান ফ্রান্সের ইউরোপ বিষয়ক মন্ত্রী ক্লেম বোন৷ যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপের অনেক দেশ ‘নর্ড স্ট্রিম ২’ নামক এই প্রকল্পের সমালোচনা করেছে৷ তাদের অভিযোগ, এর ফলে গ্যাস পেতে রাশিয়ার উপর জার্মানি ও ইউরোপের নির্ভরতা বাড়ছে৷