1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
সমাজইউক্রেন

রাশিয়ার তেল: নিষেধাজ্ঞা জারির ভাবনা ইইউ-র

২৪ মে ২০২২

কয়েকদিনের মধ্যে রাশিয়ার তেলের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হতে পারে বলে জানিয়েছেন জার্মান অর্থমন্ত্রী।

https://p.dw.com/p/4BlfN
ইউক্রেন
ছবি: Kirill Kukhmar/TASS/dpa/picture alliance

সোমবার একটি জার্মান টেলিভিশন চ্যানেলকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন জার্মান অর্থমন্ত্রী রবার্ট হ্যাবেক। সেখানে তিনি বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবিষয়ে সহমত হয়েছে। ২৭ দেশের ব্লক স্থির করেছে কয়েকদিনের মধ্যেই রাশিয়ার তেল আমদানির ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে।

বস্তুত, ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই রাশিয়ার তেল এবং গ্যাসের উপর নিষেধাজ্ঞা জারির আলোচনা চলছিল। অ্যামেরিকা দ্রুত সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলেও ইইউ তা নিতে পারছিল না। কারণ, অধিকাংশ ইউরোপীয় দেশ রাশিয়ার তেল এবং গ্যাসের উপর ভীষণভাবে নির্ভরশীল। হাঙ্গেরি, পর্তুগাল এবং জার্মানি প্রাথমিকভাবে এই নিষেধাজ্ঞা জারির বিরোধী ছিল। কিন্তু ইউক্রেনের যুদ্ধ চার মাস গড়িয়ে যাওয়ার পর জার্মানিও নিষেধাজ্ঞা জারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এবিষয়ে বার্লিনের উপর সহযোগী দলগুলির চাপও ছিল যথেষ্ট।

তবে হাঙ্গেরি এখনো নিষেধাজ্ঞা জারির পক্ষে নয়। জার্মান অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ''হাঙ্গেরি এবং পর্তুগাল একটু বেশিমাত্রায় রাশিয়ার দিকে ঝুঁকে।'' তবে হাঙ্গেরির বিরোধিতা সত্ত্বেও ইউরোপীয় ইউনিয়ন নিষেধাজ্ঞার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পেরেছে বলে জার্মান অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন। পূর্ব ইউরোপের দেশগুলির জন্য সর্বোচ্চ দুই বিলিয়ন ইউরো ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। কারণ, তেলের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হলে পূর্ব ইউরোপের দেশগুলি সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। গ্যাস ও তেলের বিষয়ে তারা সম্পূর্ণভাবে রাশিয়ার উপর নির্ভরশীল।

কিন্তু এরপরেও কী ক্রেমলিনকে যথেষ্ট চাপে ফেলা যাবে? রবার্টের ধারণা, যাবে না। কারণ, ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরে অ্যামেরিকা রাশিয়ার উপর কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। তাতে রাশিয়ার গ্যাস এবং তেলের রপ্তানি খানিকটা কমেওছিল। কিন্তু কম তেল বিক্রি করেও বেশি লাভের রাস্তা বার করে ফেলেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন।

রাশিয়ার প্রতিক্রিয়া

রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী লাভরভ জানিয়েছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন 'রাশিয়াফোবিয়া'য় ভুগছে। রাশিয়া তাদের সিদ্ধান্ত নিয়ে চিন্তিত নয়। কারণ ক্রেমলিন স্থির করেছে পশ্চিমা দেশগুলির সঙ্গে সম্পর্ক কমিয়ে বেজিংয়ের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি ঘটাবে। বস্তুত, চীনের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে একটি অ্যামেরিকা এবং ইউরোপ বিরোধী ব্লক তৈরি করতে চাইছে রাশিয়া। লাভরভ জানিয়েছেন, পশ্চিম যদি নতুন করে বন্ধুত্বের কথা ভাবে, তাহলেই একমাত্র রাশিয়া বিষয়টি বিবেচনা করবে।

জেলেনস্কির বক্তব্য

সোমবার দাভোসের বৈঠক শুরু হয়েছে। সেখানে প্রথম বক্তৃতা করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভালোদিমির জেলেনস্কি। সেখানে তিনি রাশিয়ার উপর আরো কড়া নিষেধাজ্ঞা জারির দাবি জানিয়েছেন।

এদিন রাতে দৈনিক ভিডিওবার্তায় জেলেনস্কি জানিয়েছেন পূর্ব ইউক্রেনে গণহত্যা চালাচ্ছে রাশিয়া। তার দাবি, কিয়েভ থেকে ৫৫ কিলোমিটার দূরে দেসনায় লাগাতার বোমাবর্ষণ করে চলেছে রাশিয়া। যার জেরে এখনো পর্যন্ত ৮৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। নিহতদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক। তার দাবি, গত চার মাসে ইউক্রেনে এক হাজার ৪৭৪টি মিসাইল হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। ইউক্রেনে টোটাল ওয়ার বা পুরোপুরি যুদ্ধে নেমে পড়েছে রাশিয়া।

যুদ্ধে প্রথম শাস্তি

এই প্রথম রাশিয়ার এক সেনার বিরুদ্ধে যুদ্ধপরাধের শাস্তি ঘোষণা হলো। ইউক্রেনের আদালতে মাত্র চারদিনে ওই সেনার বিচার সম্পূর্ণ হয়। রাশিয়ার ওই সেনার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি অস্ত্রহীন এক বেসামরিক ব্যক্তিকে ঠান্ডা মাথায় খুন করেছেন। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের শাস্তি দেওয়া হয়েছে ওই সেনাকে। প্রথম দিনই অভিযুক্ত সেনা অপরাধ স্বীকার করেছিলেন। যে ইউক্রেনের আইনজীবী তার হয়ে আদালতে দাঁড়িয়েছিলেন, তিনি ওই সেনার মুক্তি দাবি করেছিলেন। তার বক্তব্য ছিল, ওই সেনা অফিসার উপরের নির্দেশ পালন করেছিলেন মাত্র।

অন্যদিকে জেনেভায় জাতিসংঘে রাশিয়ার এক কাউন্সিলর পদত্যাগ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, রাশিয়ার সাম্প্রতিক যুদ্ধের বিরোধী তিনি। সে কারণেই পদত্যাগ করছেন।

এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি, এএফপি, ডিপিএ)