‘ডনবাস নরকে পরিণত হয়েছে'
২০ মে ২০২২বৃহস্পতিবার রাতে দেশবাসীর উদ্দেশে এক ভাষণে তিনি বলেন, রুশ জবরদখলকারীরা দেশের পূর্বাংশে ডনবাস অঞ্চলে মানুষের উপর আরও চাপ সৃষ্টি করছে৷ তার মতে, অত্যুক্তি না করেও বলা যায়, অঞ্চলটি নরক হয়ে উঠেছে৷ ওডেসা এলাকা ও ইউক্রেনের কেন্দ্রভাগের শহরগুলির উপর ক্রমাগত হামলা চলছে৷ ডনবাস পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে, বলেন জেলেনস্কি৷
মারিউপোল শহরে মারাত্মক সংঘর্যের পর ইউক্রেন আপাতত পিছু হটার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ রুশ সূত্র অনুযায়ী এখনো পর্যন্ত ১,৭৩০ জন ইউক্রেনীয় যোদ্ধা আত্মসমর্পণ করেছে৷ তবে আজভ রেজিমেন্টের উপ প্রধান সভিয়াতোস্লাভ পালামার একটি ভিডিও প্রকাশ করে দাবি করেছেন, যে তিনি এবং বাকি কমান্ডাররা এখনো ইস্পাত কারখানার মধ্যেই রয়েছেন৷ তিনি এক গোপন অভিযানের উল্লেখ করেন৷ কিয়েভ সরকার রাশিয়ার হাতে আটক যোদ্ধাদের মুক্তির জন্য বন্দি বিনিময়ের চেষ্টা চালাচ্ছে৷
এদিকে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের আর্থিক সহায়তার জন্য আন্তর্জাতিক স্তরে আরও নতুন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে৷ মার্কিন সংসদের উচ্চ কক্ষ বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতার সঙ্গে সে দেশের জন্য প্রায় ৪,০০০ কোটি ডলার অংকের নতুন সহায়তার প্রস্তাব অনুমোদন করেছে৷ মার্কিন ইতিহাসে এর আগে অন্য কোনো দেশকে এত বড় অংকের সহায়তা দেওয়া হয়নি৷ শিল্পোন্নত দেশগুলির গোষ্ঠী জি-সেভেনও ইউক্রেনের জন্য ১,৮৪০ কোটি ডলার বরাদ্দ করতে রাজি হয়েছে৷ এই দেশগুলির মতে, অস্ত্র সরবরাহের মতো আর্থিক সহায়তাও রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের আরও দ্রুত জয় নিশ্চিত করবে৷
ইউক্রেনের জন্য আরও ভারি অস্ত্রের জোগানও অব্যাহত রয়েছে৷ রাশিয়া সে দেশের উপকূল অবরোধ করে রাখায় মার্কিন প্রশাসন ইউক্রেনকে জাহাজ-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র পাঠানোর তোড়জোড় করছে৷ মার্কিন পররাষ্ট্র অ্যান্টনি ব্লিংকেন মস্কোর বিরুদ্ধে খাদ্য সরবরাহকে ‘জিম্মি' হিসেবে অপব্যবহার করার অভিযোগ এনেছেন৷ শুধু ইউক্রেনের মানুষ নয়, গোটা বিশ্বের লাখ লাখ মানুষ এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে তিনি মন্তব্য করেন৷ উল্লেখ্য, ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হবার পর বিশ্বব্যাপী শস্য, রান্নার তেল, জ্বালানি ও সারের মূল্য অস্বাভাবিক মাত্রায় বেড়ে গেছে৷ অবরোধ তুলে নেওয়ার শর্ত হিসেবে রাশিয়া সে দেশের রপ্তানির উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবার দাবি করেছে৷
রাশিয়ার উপর আরও চাপ বাড়াতে পশ্চিমা দেশে রুশ শিল্পপতিদের সম্পদ কাজে লাগিয়ে ইউক্রেনের পুনর্গঠনের কথাও ভাবা হচ্ছে৷ বিদেশে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সম্পদও সেই কাজে লাগানোর জন্য চাপ বাড়ছে৷ কুয়াইতের উপর হামলার শাস্তি হিসেবে সাদ্দাম হুসেনের ইরাকের তেল বিক্রির অর্থ যেভাবে অধিকৃত এলাকার পুনর্গঠনের কাজে লাগানো হয়েছিল, সেই মডেল রাশিয়ার উপর প্রয়োগ করার দাবি উঠছে৷ রাশিয়া থেকে পেট্রোলিয়াম আমদানি করলে কোনো দেশের উপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার সম্ভাবনাও আর উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না৷ ইউরোপীয় ইউনিয়ন তেল আমদানি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷
এসবি/জেডএইচ (রয়টার্স, ডিপিএ)