1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
বিচার ব্যবস্থাভারত

রামদেবকে ভর্ৎসনা সুপ্রিম কোর্টের, ক্ষমার আবেদন খারিজ

১১ এপ্রিল ২০২৪

সর্বোচ্চ আদালতের তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়লেন বাবা রামদেব ও আচার্য বালকৃষ্ণ। তাদের ক্ষমাপ্রার্থনাও খারিজ করা হলো।

https://p.dw.com/p/4eeYP
আমেদাবাদে য়োগ প্রদর্শন করছেন বাবা রামদেব।
পতঞ্জলির ওষুধ নিয়ে বিভ্রান্তিকর দাবির জন্য সুপ্রিম কোর্ট ঊর্ৎসনা করলো বাবা রামদেবকে। ছবি: Sam Panthaky/AFP/Getty Images

পতঞ্জলি ও বাবা রামদেবের বিভ্রান্তিকর দাবি ও তাতে সাধারণ মানুষের বিভ্রান্ত হওয়া নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছে ইন্ডিয়ান মেডিক্য়াল অ্যাসোসিয়েশন। তাদের মামলায় অত্যন্ত কড়া অবস্থান নিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত।

কী বলেছেন বিচারপতিরা?

বিচারপতি হিমা কোহলি ও বিচারপতি আসাদুদ্দিন আমানুল্লাহের বেঞ্চ বলেছে, ''যে অসুখ ভালো হয় না, তা পতঞ্জলির ওষুধে তা ভালো হওয়ার দাবি করা হয়েছিল। যারা সেই ওষুধ খেয়েছিলেন, সেই সব মানুষদের কী হবে?''

বাবা রামদেব ও আচার্য বালকৃষ্ণ গোটা ঘটনার জন্য ক্ষমা চেয়েছিলেন। কিন্তু দুই বিচারপতি জানিয়ে দেন, তারা এই ক্ষমাপ্রার্থনা খারিজ করে দিচ্ছেন। ১৬ এপ্রিল তারা এই মামলার রায় দেবেন।

বিচারপতি কোহলি বলেন, ''অভিযুক্তরা তাদের হলফনামা আদালতের কাছে না পাঠিয়ে আগে মিডিয়ার কাছে পাঠিয়েছে। স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, তারা শুধু প্রচার চায়।''

রামদেবের পক্ষে সওয়াল করেছেন খ্যাতনামা আইনজীবী মুকুল রোহাতগি। তিনি বলেন, ক্ষমাপ্রার্থনা সংক্রান্ত হলফনামা আদালতে জমা দেয়া হয়েছে।

বিচারপতি আমানুল্লাহ তখন প্রশ্ন করেন, ''এই ক্ষমাপ্রার্থনা কি অনুতাপের পর এসেছে? এই ধরনের ক্ষমাপ্রার্থনা যথেষ্ট নয়। আদালতের নির্দেশ ভঙ্গ করার ফল আপনাদের পেতে হবে। আমরা এই মামলায় ক্ষমাশীল হতে পারছি না।''

নয়াদিল্লিতে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের ভবন।
রামদেব ও পতঞ্জলির ওষুধ নিয়ে বিভ্রান্তিকর দাবি নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট কড়া মনোভাব দেখিয়েছে। ছবি: picture-alliance/NurPhoto/N. Kachroo

উত্তরাখণ্ড ড্রাগ লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ

বিচারপতিরা উত্তরাখণ্ড ড্রাগ লাইসেন্স কর্তৃপক্ষকে বলেছেন, ''নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও আপনারা কেন পতঞ্জলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেননি?''

উত্তরাখণ্ড সরকারের খাদ্য ও ওষুধ সংক্রান্ত বিভাগের জয়েন্ট ডাইরেক্টর মিথিলেশ কুমার আদালতে হাতজোড় করে ক্ষমাপ্রার্থনা করেন। তিনি বলেন, ''আমি ২০২৩ সালের জুন মাসে এই পদে এসেছি। ঘটনা তার আগে ঘটেছে। তাই আমাকে ছেড়ে দিন।''

বিচারপতিরা বলেন, ''কেন ছাড়ব? আপনাদের সাহস কী করে হয়, এরকম কাজ করার? আপনারা কী ব্যবস্থা নিয়েছিলেন? যারা ওই ওষুধ খেয়েছেন তাদের কী হবে?''

বিচারপতিরা বলেন, এখন উত্তরাখণ্ড সরকারের ড্রাগ অফিসের কর্মকর্তাদের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গেছে। তারা এখন পতঞ্জলিকে সাবধান করছে। কিন্তু আইনে সাবধান করে দেয়ার ব্যবস্থা নেই। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হতো। ২০২১ সালে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় উত্তরাখণ্ড সরকারকে ব্যবস্থা নিতে বলেছিল।

বিচারপতিরা বলেন, ''আপনারা কি আইন পড়েন?  আপনাদের কি মনে হয়, সাবধান করে দেয়া যথেষ্ট? কেন আপনারা ব্যবস্থা নেননি? এখন কয়েকদিনের জন্য বাড়িতে বসে থাকুন বা অফিসে গিয়ে চিঠি লিখুন। আপনারা মানুষের স্বাস্থ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছেন।''

গত ফেব্রুায়ারিতেও কেন্দ্রীয় সরকারকে শীর্ষ আদালত বলেছিল, কেন্দ্রীয় সরকার চোখ বন্ধ করে বসে আছে।

অভিযোগ কী?

২০২১ সালে করোনার ডেল্টা ভাইরাস আসার আগে রামদেব পতঞ্জলির পক্ষে করোনিল ওষুধ ভারতের বাজারে ছাড়েন এবং দাবি করেন,  এটা কোভিড ১৯-এর প্রথম তথ্যপ্রমাণ ভিত্তিক ওষুধ।  সেই অনুষ্ঠানে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধনও উপস্থিত ছিলেন। সেখানে দাবি করা হয় বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থার সার্টিফিকেট তাদের সঙ্গে আছে।

পরে আইএমএ জানায়, মিথ্যা দাবি করা হচ্ছে।  বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা জানিয়ে দেয়, তারা এরকম সার্টিফিকেট কাউকে দেয়নি।

এরপর ২০২২ সালের অগাস্ট মাসে পতঞ্জলি একটা বিজ্ঞাপন দেয়। সেখানে বলা হয়, অ্যালোপ্যাথি ভুল ধারণা ছড়াচ্ছে। এর থেকে নিজেকে বাঁচান। দেশকে বাঁচান। দাবি করা হয়, পতঞ্জলির ওষুধ খেয়ে ডায়বেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, থাইরয়েড, লিভার সিরোসিস, বাত, ও শ্বাসকষ্টের মতো রোগ নিরাময় হয়ে গেছে।

আইএমএ বলে পতঞ্জলি ও রামদেব আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচার করছেন। তারা মামলা করে। ২০২৩ সালে সুপ্রিম কোর্ট বলে, কেন পতঞ্জলি এরকম বিভ্রান্তিমূলক বিজ্ঞাপন প্রচার করছে? তাদের বড় আংকের জরিমানার কথাও বলা হয়।

আগামী ১৬ এপ্রিল এই মামলার রায় দেবে সর্বোচ্চ আদালত।

জিএইচ/এসজি(পিটিআই, এনডিটিভি)