1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‌রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত তুঙ্গে

শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা
২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র–ছাত্রীদের অবরোধে আটক বিজেপি সাংসদ ও মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে উদ্ধার করতে যান পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়৷ সেই নিয়ে রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে তাঁর বিরোধ বাধল৷

https://p.dw.com/p/3Pwa9
Indien Protest gegen Vandalismus an der Jadavpur Universität
ছবি: DW/S. Bandopadhyay

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজেপির ছাত্র সংগঠন এবিভিপি আয়োজিত নবীন বরণ অনুষ্ঠানে ‘‌গায়ক'‌ হিসেবে আমন্ত্রিত ছিলেন আসানসোলের বিজেপি সাংসদ, কেন্দ্রের মোদি সরকারের রাষ্ট্রমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়৷ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাবুল যাদবপুর গেলে তাঁর রাস্তা আটকান বিশ্ববিদ্যালয়ের বামপন্থী ছাত্র-ছাত্রীরা৷ দীর্ঘ সময় ছাত্র অবরোধে আটক থাকেন বাবুল৷ তাঁকে উদ্ধার করতে যাদবপুর যান রাজ্যপাল জগদীশ ধনখড়৷ তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব এবং রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, রাজ্যপালকে যাদবপুরে না যেতে অনুরোধ করেছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী৷ তার পরেও রাজ্যপাল ধনখড় সরকারকে কিছু না জানিয়ে যাদবপুরে যান৷

শুক্রবার কড়া ভাষার এক বিবৃতিতে সেই বক্তব্যের বিরোধিতা করল রাজভবন৷ রাজ্যপালের পক্ষ থেকে জানানো হলো, রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং পুলিশের ডিজি-কে জানিয়েই তিনি যাদবপুর গিয়েছিলেন৷ মুখ্যমন্ত্রীও জানতেন যে তিনি যাচ্ছেন৷ কাজেই তৃণমূলের মহাসচিব সত্যি কথা বলছেন না৷

রাজ্য সরকারের সঙ্গে এই সরাসরি বিরোধিতার রাস্তাই নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতৃত্ব৷ যাদবপুরের ঘটনায় তারা বাম ছাত্র সংগঠন এসএইআই, নকশালদের সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসেরও ষড়যন্ত্র দেখছে৷ শুক্রবার বিজেপির রাজ্য দপ্তর থেকে একটি প্রতিবাদ মিছিল এসপ্ল্যানেডে এসে প্রতিবাদ সভা করে৷ সেখানে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস-এর ইস্তফা দাবি করা হয়৷ যে উপাচার্যকে বৃহস্পতিবার হাঙ্গামার সময় বাবুল সুপ্রিয় আঙুল তুলে ধমক দেন, যে কেন একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে তিনি উপস্থিত ছিলেন না!‌

বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে যদিও বলা হয়, বাবুল আসবেন, সেটা কর্তৃপক্ষের আদৌ জানা ছিল না৷ তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো অনুষ্ঠানেও আসেননি৷ এবিভিপি-র ছাত্ররাও এদিন মেয়ো রোডে আলাদা বিক্ষোভ অবস্থান করে উপাচার্যের ইস্তফা দাবি করে৷ বাবুলকে অবরোধের জেরে বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ভাঙচুর হয়েছে, তারও দায় এড়িয়ে এবিভিপি জানিয়েছে, নকশাল এবং তৃণমূল মিলেই ওই কাণ্ড ঘটিয়েছে৷ এই ভাঙচুরের প্রতিবাদে এসএফআইও এদিন দক্ষিণ কলকাতায় প্রতিবাদ মিছিল করে। এবং ঘটনা হচ্ছে, সব পক্ষই হাঙ্গামা বাড়তে দেওয়ার জন্য পুলিসি নিষ্ক্রিয়তাকে দায়ী করেছে৷

রুদ্রাঞ্জন মুখোপাধ্যায়

কিন্তু বৃহস্পতিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ছাত্ররা বাবুলের অবরোধে সামিল ছিলেন, তাঁদের একজন, রুদ্রাঞ্জন মুখোপাধ্যায় ডয়চে ভেলেকে জানালেন, বিজেপি এবং এবিভিপির অন্তত তিন-চারশ লোক বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে মজুত ছিল৷ ওরা আগে থেকেই হাঙ্গামা করবে বলে তৈরি হয়ে এসেছিল, যেটা বোঝা যায়নি৷ আর সে তুলনায় পুলিসকর্মী ছিলেন হয়ত জনা তিরিশেক৷ রাজ্যপাল আসছেন খবর পেয়ে পুলিস এসেছে, কিন্তু সে অনেক দেরিতে৷

কেন যাদবপুরেই বার বার এ ধরনের হাঙ্গামা হয়, সে প্রশ্ন উঠছে সোশ্যাল মিডিয়ায়৷ পাঁচ বছর আগে এই যাদবপুরে যে ‘‌হোক কলরব' আন্দোলন রাজ্যজুড়ে সাড়া ফেলেছিল, তার অন্যতম নেতা উদ্দালক ভট্টাচার্য কিন্তু মনে করেন, ঠিক করেছে যাদবপুর৷ বাবুল সুপ্রিয় যে বিজেপি দলের প্রতিনিধিত্ব করেন, সেই দল, বা তাদের নীতির যাদবপুরে কোনও ঠাঁই নেই৷ এমনকি যদি নরেন্দ্র মোদি বা অমিত শাহ আসেন, তাঁদেরকেও বাধা দেওয়া হবে৷ ‘‌যত বড় নেতা, তত বড় প্রতিরোধ'‌, বলেছেন উদ্দালক৷

এদিকে বাবুল সুপ্রিয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবি এবং ভিডিও দেখে, তাঁর ওপর যাঁরা হামলা করেছে, নিজেই তাঁদের চিহ্নিত করার দায়িত্ব নিয়েছেন৷বাবুলের টুইট-দেখা যাক, মমতা ব্যানার্জির সরকার এই দুষ্কৃতিদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়৷বিজেপি এখন এই কথাই প্রচার করছে, যে যাদবপুরের ঘটনা প্রমাণ করছে, পশ্চিমবঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা বলে কিছু নেই!‌

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য