রসরাজের মুক্তি দাবি করলেন মা
২ ডিসেম্বর ২০১৬রসরাজ দাস ফেসবুকে ধর্ম অবমাননাকর ছবি পোস্ট করেছেন – এমন অভিযোগ তুলে গত ৩০ অক্টোবর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে হিন্দুদের ১৫টি মন্দির এবং বেশ কিছু বাড়িঘরে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে৷ সেদিনের পরও সেখানে কয়েকবার হিন্দুদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে৷
অথচ ঘটনার পরই গণমাধ্যমের খবরে রসরাজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সত্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়৷ স্থানীয়ভাবে জানা যায়, যে সময় কথিত ছবিটি ফেসবুকে পোস্ট করা হয় তখন রসরাজ নিজের মোবাইল ফোনের কাছে ছিলেন না৷ তখন মোবাইল ছিল বাড়িতে আর তিনি বিলে মাছ ধরছিলেন৷
আরো জানা যায়, লেখাপড়া না জানা রসরাজ ফটোশপে এমন ছবি তৈরি করে ফেসবুকে দিতে পারেন কিনা এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক সন্দেহ রয়েছে৷
অবশ্য হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা শুরুর আগেই রসরাজকে আটক করে পুলিশ৷ তারপর তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়৷ নাসিরনগরের হরিণবেড় গ্রামের ৩০ বছর বয়সি জেলে রসরাজ এখনো কারাগারে৷
এদিকে তদন্ত শেষে পুলিশ জানিয়েছে, ধর্ম অবমাননাকর ছবি পোস্ট করার সঙ্গে রসরাজের সম্পৃক্ততার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি৷ বরং গত ২১ নভেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সংবাদ মাধ্যমকে জানান, জাহাঙ্গীর আলম নামের এক ব্যক্তি নিজের সাইবার ক্যাফে থেকে রসরাজের ফেসবুক আইডি ‘হ্যাক' করে ‘ধর্মীয় অবমাননার' ছবি পোস্ট করেন৷ ইতিমধ্যে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে৷
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালত রসরাজের মুঠোফোনের ফরেনসিক প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে৷
শুক্রবার ডয়চে ভেলের কন্টেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানায়, রসরাজের মা নমিতা রানী দাস ঢাকায় অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তার ছেলেকে ‘নির্দোষ' দাবি করে বলেছেন, রসরাজ লেখাপড়া জানে না; তার পক্ষে ফেইসবুকে কোনো কিছু লেখাও সম্ভব নয়৷
বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব)-এর কার্যালয়ে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের উপস্থিতিতে নমিতা রানী দাস বলেন, ‘‘আমার ছেলে পড়াশুনা জানে না৷ কোনোদিন ইস্কুলে যায়নি৷ বড় ভাই আর বাবার সঙ্গে বালিঙা বিলে মাছ ধরত৷'' এ সময় তিনি নাসিরনগরের ঘটনার জন্য দায়ীদের শাস্তি ও হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণও দাবি করেন তিনি৷
এসিবি/ডিজি (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)