‘বিরোধী দলীয় নেত্রী রওশন '
৮ জানুয়ারি ২০১৪চেয়ারম্যান থাকতে তিনি কেন বিরোধী দলীয় নেতা হচ্ছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে রওশন এরশাদ বলেন, ‘‘উনি রাষ্ট্রপতি ছিলেন, তাই বিরোধী দলীয় নেতা হচ্ছেন না৷'' আর বিএনপি ছাড়া এই নির্বাচনকে কিভাবে দেখছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘সব দলের সমঝোতা হলে মধ্যবর্তী একটা নির্বাচন তো হতেই পারে৷''
এদিকে সদ্য শেষ হওয়া দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ীদের (এমপিদের) নামের গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে৷ বুধবার ৩০০টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ২৯০টি আসনের এই গেজেট প্রকাশ করা হয়৷ সহিংসতার কারণে ৮টি আসনের নির্বাচন স্থগিত রয়েছে৷ এছাড়া, নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘনের কারণে যশোরের দু'টি আসনের গেজেট প্রকাশ স্থগিত রেখেছে নির্বাচন কমিশন৷ সংবিধান অনুযায়ী, গেজেট প্রকাশের পরবর্তী তিন দিনের মধ্যে নবনির্বাচিত এমপিদের শপথ নিতে হবে৷ তবে দেরি না করে বৃহস্পতিবারই নতুন এমপিদের শপথ অনুষ্ঠান হবে বলে ডয়চে ভেলেকে নিশ্চিত করেছেন নবনির্বাচিত একজন সংসদ সদস্য৷
জানা গেছে, সরকারের পক্ষ থেকে ফোন করে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় তাঁকে শপথ নেয়ার জন্য উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে৷ কিন্তু প্রশ্ন হলো, বর্তমান সংসদ বহাল রেখে নতুন এমপিরা কিভাবে শপথ নেবেন? তাহলে কি একটি আসনে দু'জন করে সংসদ সদস্য হবেন? কিভাবে এই সমস্যার সমাধান হবে? এ সব ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে পরিষ্কার করে কিছুই বলা হয়নি৷
ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জেল হোসেন চৌধুরী বীরবিক্রম বলেছেন, বৃহস্পতিবারই শপথ নেবেন নতুন এমপিরা৷ তার আগে নবম সংসদের এমপিরা পদত্যাগ করবেন, না সংসদ ভেঙে দেয়া হবে – সে ব্যাপারে পরিষ্কার করে কিছু বলেননি তিনি৷ জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সচিব জয়নাল আবেদীনও বৃহস্পতিবার নতুন এমপিদের শপথ নেয়া কথা বলেছেন৷ তবে কিভাবে শপথ নেয়া হবে সে ব্যাপারে তিনিও কিছু বলেননি৷
অবশ্য আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, ‘‘আমি তো কোনো আইনি জটিলতা দেখছি না৷ আওয়ামী লীগের একজন সিনিয়র নেতা বলেছেন, বৃহস্পতিবার শপথ হতে কোনো আইনি বাধা নেই৷ কারণ, শপথ অনুষ্ঠানের কিছুক্ষণ আগে নবম জাতীয় সংসদ ভেঙে দেবেন রাষ্ট্রপতি৷ আর নতুন সংসদ গঠনের জন্য সংখ্যাগরিষ্ট দলের প্রধানকে আনুরোধ জানাবেন৷ তাহলেই আর জটিলতা থাকবে না৷''
সাবেক নির্বাচন কমিশনার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, কোনো জটিলতা না থাকলেও সরকারের পক্ষ থেকে আইনগত একটা ব্যাখার প্রয়োজন রয়েছে৷ কারণ বিষয়টি ব্যাখা করে পরিষ্কার না করা পর্যন্ত এক ধরণের বিভ্রান্তি থেকে যাবে৷ বিভ্রান্তি দূর করেই শপথ অনুষ্ঠান করা উচিত বলে মনে করেন তিনি৷
এদিকে ৩০০টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ২৯২টি সংসদীয় আসনের ফলাফল চূড়ান্ত হলেও গেজেট হয়েছে ২৯০টি আসনের৷ এর কারণ, যশোরের দু'টি আসনের গেজেট প্রকাশ স্থগিত রেখেছে কমিশন৷ নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ বলেছেন, আচরণবিধি লঙ্ঘনের কারণে ঐ দু'টি আসনের গেজেট প্রকাশ করা হয়নি৷ ঐ আসন দু'টিতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী জয়ী হয়েছে৷ যশোর-১ আসনের নির্বাচিত সংসদ সদস্য হলেন মনিরুল ইসলাম এবং যশোর-২ আসনের শেখ আফিল উদ্দীন৷ তাঁদের কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়েছে নির্বাচন কমিশন৷ দুই প্রার্থীকে আলাদাভাবে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে৷ তাছাড়া, আগামী ১০ দিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশনে জবাব দিতে বলা হয়েছে তাঁদের৷ এছাড়া তাঁরা ইসির সামনে ব্যক্তিগতভাবে শুনানি দিতে চান কিনা, তাও জানাতে বলেছে কমিশন৷
প্রসঙ্গত, বিরোধী দল ছাড়া অনুষ্ঠিত দশম সংসদ নির্বাচনে ২৯২টি আসনের ফল ঘোষণা করা হয়েছে৷ এর মধ্যে আওয়ামী লীগ ২৩২টি, জাতীয় পার্টি ৩৩টি, ওয়ার্কার্স পার্টি ৬টি, জাসদ ৫টি, জাতীয় পার্টি (জেপি) ১টি, তরীকত ফেডারেশন ১টি, নবগঠিত রাজনৈতিক দল বিএনএফ ১টি এবং স্বতন্ত্র ও বিদ্রোহী প্রার্থীরা ১৩টি আসনে জয়ী হয়েছে৷