যে মৃত্যু মুসলিম ও জার্মানদের এক করেছে
৩ ডিসেম্বর ২০১৪নিহত তরুণীর নাম টুচে৷ ১৪ই নভেম্বরের রাত গড়িয়ে ভোরের দিকে ফ্রাংকফুর্টের কাছে একটি এলাকার ম্যাকডোনাল্ড রেস্টুরেন্টে গিয়েছিলেন তিনি৷ হঠাৎ বাথরুম থেকে চেঁচামেচি শুনতে পেয়ে সেখানে যান তিনি৷ গিয়ে দেখেন একদল তরুণ দুই স্কুল ছাত্রীকে হয়রানি করছে৷ টুচে এই ঘটনার প্রতিবাদ করেন৷
এর কিছুক্ষণ পর রেস্টুরেন্টের বাইরে গাড়ি রাখার জায়গায় একজন তরুণ টুচের মাথায় জোরে আঘাত করেন৷ এতে টুচে নীচে পড়ে পান৷ সেই থেকে তিনি হাসপাতালে কোমায় ছিলেন৷ দুই সপ্তাহ পর ২৮শে নভেম্বের চিকিৎসকরা টুচে-র আর কোমা থেকে ফিরে আসা সম্ভব নয় বলে ঘোষণা দিলে তাঁর লাইফ সাপোর্ট খুলে ফেলা হয়৷
টুচে-কে আঘাতের ভিডিও সোমবার প্রকাশ করে জার্মানির সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক বিল্ড৷ ঐ এলাকায় থাকা ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা থেকে ভিডিওটি সংগ্রহ করেছে বিল্ড৷ পুলিশ অবশ্য এই ভিডিও-র সত্যতা স্বীকার করে নি৷
টুচে-কে আঘাত করার অভিযোগে ১৮ বছরের এক তরুণকে আটক করেছে পুলিশ৷ সে টুচে-কে মারার ঘটনা স্বীকার করলেও তার দাবি, ওটা ছিল ‘একটা চড় মাত্র'৷
এদিকে, টুচে-কে জার্মানির সর্বোচ্চ বেসামরিক খেতাব দেয়ার দাবি উঠেছে৷ চেঞ্জ ডট অর্গ ওয়েবসাইটে এই দাবির সপক্ষে চালু করা একটি পিটিশনে বুধবার পর্যন্ত প্রায় পৌনে দুই লাখের মতো মানুষ স্বাক্ষর করেছেন৷ মুসলিম সম্প্রদায় থেকে শুরু করে সাধারণ জার্মানরাও পিটিশনে স্বাক্ষর করছেন৷
জার্মানির প্রেসিডেন্ট ইওয়াখিম গাউক এই ঘটনায় শোক প্রকাশ করে বলেন, ‘টুচে সবসময়ের জন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে৷'
জার্মান ফুটবল লিগ বুন্ডেসলিগার এক খেলায় করা একটি গোল টুচে-কে উৎসর্গ করেছেন ফ্রাংকফুর্টের এক খেলোয়াড়৷
নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন বলছে, টুচে-র ঘটনা বহু সংস্কৃতি আদর্শের সঙ্গে খাপ খেতে জার্মানির সংগ্রাম ফুটিয়ে তুলেছে৷
বুধবার মুসলিম রীতিতে টুচে-র শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হয়েছে৷
জেডএইচ/এসবি (ডিপিএ, এএফপি)