1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

যুক্তরাষ্ট্র কি থেমে গেল?

৩০ ডিসেম্বর ২০২৩

বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে বিদেশি বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান কি পরিবর্তন হয়েছে। তারা যে এখন কিছুটা চুপচাপ আছে সেটা কিসের ইঙ্গিত দেয়? তারা কি থেমে গেল?

https://p.dw.com/p/4ajHK
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিদেশিদের নতুন কোনো তৎপরতা এখন তেমন দৃশ্যমান নয়
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিদেশিদের নতুন কোনো তৎপরতা এখন তেমন দৃশ্যমান নয়ছবি: Habibur Rahman/Zumapress/picture alliance

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহবিদেশিদের নতুন কোনো তৎপরতা এখন তেমন দৃশ্যমান নয়। আর মাত্র এক সপ্তাহ পর নির্বাচন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ (ইইউ) আরো দেশ এবং আর্ন্তাতিক সংগঠন বাংলাদেশে নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের কথা বলে আসছে আগে থেকেই।

কিন্তু এই নির্বাচনে বিএনপিসহ তাদের সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো অংশ নিচ্ছেনা।

কিন্তু তফসিল ঘোষণার আগ পর্যন্ত বিদেশিরা সুষ্ঠু এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিয়ে যতটা সরব ছিলো এখন ততটা নয়।

'যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান পরিবর্তন হয়েছে বলে মনে করি না'

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন  গত সপ্তাহে বলেছেন,"নির্বাচন নিয়ে বিদেশিদের নানা ধরনের কথা এখন কমে গেছে।” তিনি আরো বলেন," ওরাও দেখেছে, সন্ত্রাসীদের প্রোমোট করলে ওদের বারোটা বাজবে। সুতরাং তারা চুপসে গেছে। তারাও বলেছে, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আসো। এটাই সরকার পরিবর্তনের একমাত্র পথ।”

তবে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বৃহস্পতিবার বলেছেন," নির্বাচনের পর কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা আসলে তা মোকাবেলা করবে বাংলাদেশ।” তবে তিনি এও বলেন," আমরা সবচেয়ে খারাপটা চিন্তা করবো কেন। একটা সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। আমরা সবাই সেই চেষ্টা করছি।”বাংলাদেশের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নতুন ভিসা নীতি করেছে। তার ভিত্তিতে তারা তাদের নীতি অনুযায়ী ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেয়ার কথা আগেই বলেছে।  ইইউ এই নির্বাচনে তাদের পর্যবেক্ষক দল পাছাচ্ছেনা। জাতিসংঘও পাঠাবেনা। 

তবে মার্কিন পর্যবেক্ষক দল এখন ঢাকায় আছে। আর ইইউ'র ছয় সদস্যের একটি নির্বাচন বিশেষজ্ঞ দল ঢাকা সফর করছে।যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত  এম হুমায়ুন কবীর বলেন," তারা এখন  চুপচাপ থাকলেও তাদের অবস্থানের কোনো পরিবর্তনহয়েছে বলে আমি মনে করিনা। বছরের মাঝামাঝি পর্যন্ত তাদের অনেক লোকজন এসেছে। আমরা  সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তাদের সঙ্গে গিয়ে দেখা করেছি। তারা এখনো বলছে সুষ্ঠু এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের কথা। তবে সেটা আগের মতো বেশি বলছেনা কারণ হলো তারা তো তাদের অবস্থান জানিয়েই দিয়েছে। আর তারা বুঝতে পেরেছে তাদের কথার তেমন গুরুত্ব দেয়া হয়নি।  তারা যেহেতু এটা বুঝতে পেরেছে তাই তারা তাদের জাতীয় স্বার্থের নিরিখে পরবর্তী ব্যবস্থা হয়তো নেবে।”

তার কথায়," এনগেজমেন্ট লেভেল। অ্যাকশন লেভেল শুরু হয়ে গেছে। আমরা আমাদের দিক থেকে অ্যাকশন লেভেলে চলে গেছি। এখন তারা তাদের লেভেল থেকে অ্যাকশনে যাবে। তারা মূল্যায়ন করে আনুপাতিক হারে অ্যাকশনে যাবে।”

সাবেক রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল(অব.) এম শহীদুল হক বলেন," মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমারা যখন কেনো পলিসি তৈরি করে তার কতগুলো অপশন থাকে। অপশন এ, বি, সি এরকম। ওরা যে সব পর্যায়ে ঢোল পিটিয়ে সব করে তা নয়। একটা পর্যায় পর্যন্ত তারা ভিজিবল রাখে। ওটা যখন কাজ না করে তখন প্ল্যান বি-তে চলে যায়। ওটা আমরা বাইরে থেকে নাও দেখতে পারি। ওটা এন্ড লেভেলে বোঝা যায়।”

'পশ্চিমারা ঢাকঢোল পিটিয়ে সব পলিসি করে না'

তিনি বলেন," এখন নিশ্চয়ই বিভিন্ন পর্যায়ে কথা হচ্ছে। আমরা সেটা হয়তো জানিনা। নয়তো পররাষ্ট্র সচিব নিষেধাজ্ঞা মোকাবেলার প্রস্তুতির কথা কেন বলবেন।”

তার কথা," পিটার হাস আগে যা বলেছেন এবং করেছেন তা মার্কিন নীতিরই অংশ। ওটা হয়তো বা প্ল্যান এ ছিলো। এখন প্ল্যান বি চলছে বলে ধারণা করি।”

আর সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মো. তৌহিদ হোসেন বলেন," তারা তফসিলের আগে নির্বাচন নিয়ে  অনেক কথা বলেছে এখন তফসিল ঘোষণার পর তারা চুপচাপ হয়ে গেল বলে তাদের অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়েছে বলে আমি বিশ্বাস করিনা। আর আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ভালোভাবে হ্যান্ডেল করতে পারিনি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পৃথিবীর এক নম্বর  শক্তি। তাদের সঙ্গে আমাদের বিরোধপূর্ণ কথাবার্তা, তাদের সঙ্গে শক্ত কথা বলা এটা আমি মনে করি ঠিক হয়নি। ”

'আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে ভালোভাবে হ্যান্ডেল করতে পারিনি'

 ৭ জানুয়ারি যে নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে সেটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চোখে গ্রহণযোগ্য হবে কি না? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন," ২০১৪ সালের চেয়ে এবার হয়তো ভোটারদের উপস্থিতি একটু বেশি হবে। তাতে যে নির্বাচনের মান উন্নত হবে তা নয়। কারণ নির্বাচনে যারা আছে তারা তো প্রায় সবাই আওয়ামী লীগ। নৌকা, স্বতন্ত্র, বিদ্রোহী সবাই। এলাকায় হয়তো প্রতিযোগিতা হবে কারণ সবাই এমপি হতে চায়। কিন্তু ফলাফল তো পূর্ব নির্ধারিত। প্রায় সব সিটেই তো আওয়ামী লীগ জিতবে।”