ম্যার্কেল-মাক্রোঁর প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ক্ষোভ
২০ মে ২০২০জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ করোনা সংকটের মুখে ইউরোপের অর্থনীতি চাঙ্গা করতে সোমবার এক যৌথ উদ্যোগ শুরু করেছেন৷ অতীতের মতপার্থক্য ভুলে তাঁরা ইইউ কমিশনের মাধ্যমে পাঁচ লাখ কোটি ইউরোর ঋণ গ্রহণের প্রস্তাব রেখেছেন৷ ইইউ বাজেটের মাধ্যমেই সেই অর্থ অনুদান হিসেবে বিতরণ করা হবে৷ এমন আপোশের ফলে বিশেষ করে ইউরোপের দক্ষিণের সংকটে জর্জরিত দেশগুলি আশার আলো দেখলেও উত্তরের অনেক দেশ ঋণের বোঝা ভাগ করে নেওয়ার বিরোধিতা করে চলেছে৷ এবার এই গোষ্ঠী একটি পাল্টা প্রস্তাব পেশ করতে চলেছে৷
অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর সেবাস্টিয়ান কুয়র্ৎস মঙ্গলবার জানিয়েছেন, নেদারল্যান্ডস, ডেনমার্ক ও সুইডেনের সঙ্গে তাঁর দেশও ইইউ সদস্য রাষ্ট্রগুলির ঋণের বোঝা ভাগ করে নেবার বিষয়ে গভীর সংশয় প্রকাশ করছে৷ সংকটের ফলে বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলির প্রতি সংহতি দেখানোর প্রশ্নে একমত হলেও এই গোষ্ঠী অনুদানের বদলে ঋণ দেবার পক্ষে৷ কুয়র্ৎস বলেন, এই চারটি দেশের শীর্ষ নেতা পারস্পরিক সমন্বয়ের মাধ্যমে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বিকল্প প্রস্তাব পেশ করতে চলেছেন৷ তাঁর মতে, ঋণের বোঝা ভাগ না করেও ইউরোপের অর্থনীতি চাঙ্গা করা সম্ভব৷
শেষ পর্যন্ত ঐকমত্যের ভিত্তিতেই ইইউ দেশগুলিকে অর্থনীতি চাঙ্গা করার কর্মসূচি স্থির করতে হবে৷ হয় দুই শিবিরের প্রস্তাবের মধ্যে একটিকে ঘিরে সমর্থন দানা বাঁধবে, অথবা দুইয়ের সমন্বয়ে একটি আপোশ প্রস্তাবকে ঘিরে মতৈক্য তৈরি হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে৷ সব দেশ রাজি হলে ইইউ নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনে বিষয়টি চূড়ান্ত হবে৷ ইইউ সরকার পরিষদের প্রধান শার্ল মিশেল-কে সেই অসাধ্যসাধন করতে হবে৷ উল্লেখ্য, আগামী ২৭শে মে ইইউ কমিশন আনুষ্ঠানিকভাবে করোনা সংকট-পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনর্গঠন পরিকল্পনা পেশ করতে চলেছে৷ তারপর জুন মাসে ইইউ নেতারা বিষয়টি চূড়ান্ত করতে সদস্য দেশের জাতীয় সংসদগুলিকেও সেই প্রস্তাব অনুমোদন করতে হবে৷ ফলে আরও জটিলতা ও বিলম্বের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না৷
শুধু করনো সংকটের কারণেই নয়, দীর্ঘমেয়াদী ইইউ বাজেট নিয়ে ঐকমত্যের পথেও দুই শিবিরের মধ্যে সংঘাত চালু রয়েছে৷ ইটালি ও স্পেনের মতো ঋণভারে জর্জরিত দেশ সংহতির দাবি করে এলেও অস্ট্রিয়া, নেদারল্যান্ডস, ডেনমার্ক ও সুইডেনের মতো দেশ নীতিগতভাবে ঋণের বোঝা বণ্টনের ঘোর বিরোধী৷ জার্মানিও এতকাল সেই শিবিরকে শক্তিশালী করে রেখেছিল৷ ফ্রান্সের সঙ্গে মিলে আঙ্গেলা ম্যার্কেল সরকার এখন কিছুটা সুর নরম করেছে৷
এসবি/কেএম (রয়টার্স, এএফপি)