চুক্তিতে পৌঁছালেন ইইউ নেতারা
২৯ জুন ২০১৮বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে ব্রাসেলসে একের পর এক বৈঠকে মিলিত হন ইইউ নেতারা৷ জার্মান চ্যান্সেলের আঙ্গেলা ম্যার্কেলের জন্য বৈঠকটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল৷ কারণ, কঠোর অভিবাসন নীতি গ্রহণের মাধ্যমে জার্মানিতে শরণার্থী আসার হার কমাতে তাঁর উপর চাপ ছিল৷ ম্যার্কেলের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্স্ট সেহোফারের কাছ থেকে এই চাপ ছিল৷
শরণার্থী প্রবেশ ঠেকাতে সেহোফার জার্মানির সীমান্ত কড়া করার পক্ষে৷ কিন্তু ম্যার্কেল এই সমস্যার একটি ইউরোপীয় সমাধানের কথা বলেছিলেন৷ তাঁর এই চাওয়ার জায়গা ছিল বৃহস্পতিবারের ব্রাসেলসের ইইউ বৈঠক৷ সেখানে ইইউ পর্যায়ে একটি চুক্তি সই করতে না পারলে ম্যার্কেলের জোট সরকার টিকিয়ে রাখা কঠিন হওয়ার আশংকা ছিল৷
এই অবস্থায় ইইউ নেতারা একটি চুক্তিতে সম্মত হয়েছেন৷ সেহোফারের দলের এক উচ্চ পর্যায়ের নেতা এই চুক্তিকে ইতিবাচক বলে মন্তব্য করেছেন৷
কী আছে চুক্তিতে?
- ইইউতে পৌঁছানো শরণার্থীদের ভাগ করে নিতে রাজি হয়েছেন নেতারা৷ তবে এটি হবে স্বেচ্ছা ভিত্তিতে৷
- ইইউতে ‘নিয়ন্ত্রিত কেন্দ্র' খোলা হবে, যেখান থেকে আশ্রয়ের আবেদন যাচাই করা হবে৷
- ভূমধ্যসাগরে উদ্ধার করা নৌকায় থাকা শরণার্থীদেরও বিভিন্ন দেশ স্বেচ্ছাভিত্তিতে নিতে রাজি হয়েছে৷ এটি ইটালির অন্যতম প্রধান দাবি ছিল৷ সম্প্রতি ইটালি শরণার্থী বোঝাই দুটি জাহাজ তাদের উপকূলে ভিড়তে দেয়নি৷ পরে সেগুলোর একটি গ্রহণ করতে রাজি হয় স্পেন, অন্যটি গ্রহণ করে মাল্টা৷
- অভিবাসীদের ইউরোপগামী জাহাজে চড়তে নিরুৎসাহিত করতে ইইউ'র বাইরে, বিশেষত উত্তর আফ্রিকায় ‘জাহাজ অবতরণ প্ল্যাটফর্ম' স্থাপন করতে সম্মত হয়েছেন ইইউ নেতারা৷
- ইউরোপে শরণার্থী আসা ঠেকাতে তুরস্ককে আরও তিন বিলিয়ন ইউরো দিতে সম্মত হয়েছেন নেতারা৷ ২০১৬ সালে তুরস্কের সঙ্গে ইইউ একটি চুক্তি সই করেছিল৷ তার আওতায় প্রথমবারও তিন বিলিয়ন ইউরো পেয়েছিল তুরস্ক৷
- ম্যার্কেল জানিয়েছেন, আশ্রয়প্রার্থীরা যেন নিজেদের ইচ্ছামতো ইইউ'র বিভিন্ন দেশে ঘুরতে না পারেন, সে বিষয়টি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে রাজি হয়েছেন নেতারা৷
চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়টি একটি ‘ভালো সংকেত' বলে মন্তব্য করেছেন ম্যার্কেল৷ তবে এখনও যে মতপার্থক্যগুলো আছে, তা দূর করতে আরও অনেক কাজ করতে হবে বলেও মনে করেন তিনি৷
ইটালির প্রধানমন্ত্রী জুসেপে কন্টে চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন৷ ‘‘ইটালি আর একা নয়,'' বলে মন্তব্য করেছেন তিনি৷
অথচ বৃহস্পতিবার আলোচনার শুরুতে ইটালি জানিয়ে দিয়েছিল যে, ভূমধ্যসাগরে উদ্ধার হওয়া শরণার্থীদের গ্রহণে অন্য দেশগুলো ইটালিকে সহায়তা না করলে, বাণিজ্য ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত ইইউ'র কোনো চুক্তিতে সই করবে না তারা৷ পরে ইইউ নেতারা ইটালির দাবি মেনে নেন৷
জেডএইচ/এসিবি (রয়টার্স, এএফপি, এপি, ডিপিএ)