ইটালির পাশে দাঁড়াবে জার্মানি
১৯ জুন ২০১৮ইইউ বাইরে থেকে বিপুল সংখ্যক শরণার্থী ইটালিতে অনুপ্রবেশের বিষয়টি সীমিত রাখতে দেশটিকে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে জার্মানি৷
সোমবার জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা ম্যার্কেল ইটালির প্রধানমন্ত্রী জুসেপে কন্টের সঙ্গে এক বৈঠকে এই প্রতিশ্রুতি দেন৷
বার্লিনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ম্যার্কেল বলেন, ‘‘আমরা ইটালির পারষ্পরিক সংহতির মনোভাবকে সহযোগিতা করতে চাই এবং জার্মানি শরণার্থী সংকটের ক্ষেত্রে ইউরোপের সংহতির ব্যাপারটি বোঝে৷''
বৈঠকে ম্যার্কেল এবং কন্টে দু'জনই ইইউ-এর সীমানারেখার পুলিশ বিভাগ ‘ফ্রন্টেক্স' আরও শক্তিশালী করার ব্যাপারে একমত হন৷
এছাড়া আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলো একযোগে আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্য থেকে ইউরোপে অভিবাসনের কারণ চিহ্নিত করে সেটি প্রতিরোধেরও চেষ্টা চালানো হবে বলে উল্লেখ করেন ম্যার্কেল৷
তিনি বলেন, ‘‘অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ইইউ-এর পুরো অঞ্চলে প্রবেশাধিকারের অনুমোদন পাওয়ার আগে আশ্রয় প্রার্থনার আবেদন নিজ দেশ কিংবা ট্রানজিট দেশ থেকে প্রক্রিয়াকরণ করা উচিত৷''
গত কয়েক বছরে ইইউতে আশ্রয় নিতে লাখ লাখ শরণার্থী ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়েছে৷শরণার্থীদের ভিড়ে ইটালিতে অভিবাসনবিরোধী মনোভাব তৈরি হয়েছে, কেননা, ভূমধ্যসাগর হয়ে আসা ওই অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বেশিরভাগই ইটালিতে নেমে ইইউতে প্রবেশের চেষ্টা করে৷ আর এদের অনেকের শেষ পর্যন্ত গন্তব্য হয় জার্মানি৷
চলতি জুনেই প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পর কন্টে প্রথমবারের মতো জার্মানি সফর করছেন৷ ইটালি ইইউ-এর অভিবাসন আইন পরিবর্তন করতে চায়৷ কারণ, দেশটি চাচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাকি দেশগুলো যেন শরণার্থীদের চাপ সমানভাবে বন্টন করে নেয়৷ বর্তমান অভিবাসন আইনে বলা হয়েছে, ইইউ- এর ক্ষেত্রে প্রথম যে দেশে তারা পৌঁছাবেন, সেদেশেই তারা অভিবাসনের জন্য আবেদন জমা দেবেন৷
কন্টে বলেন,‘‘ইটালির সীমান্তই ইউরোপের সীমান্ত৷''
অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় ম্যার্কেলের দলসিডিইউ গত সাধারণ নির্বাচনে অত্যন্ত খারাপ ফল করেছিল৷ অক্টোবর মাসে বাভেরিয়ায় রাজ্য নির্বাচন৷ অভিবাসন নীতির প্রশ্নে অত্যন্ত কড়া অবস্থান নিয়ে ভোটারদের মন জয় করে হারানো সমর্থন ফিরে পেতে মরিয়া সিএসইউ, যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্স্ট সেহোফার৷
ম্যার্কেলের জোটের শরিক দলের নেতা সেহোফার নিজ উদ্যোগেই অভিবাসন নীতির এক খসড়া প্রস্তুত করেছেন, যাতে বলা হয়েছে কোনো শরণার্থী অন্য দেশে নিজেকে নথিভুক্ত করে জার্মানিতে প্রবেশের চেষ্টা করলে তাঁকে সীমান্ত থেকেই বহিষ্কার করা হবে৷
ম্যার্কেল এই নীতির ঘোরতর বিরোধী৷ তিনি ইউরোপীয় স্তরে সমাধান খুঁজতে কিছুদিন সময় চেয়েছেন৷ বেআইনি অনুপ্রবেশ বন্ধ করার প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করে তিনি ইউরোপের মধ্যে পারস্পরিক সমন্বয় গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর৷
এই নিয়ে দ্বন্দ্বে এ মাসে ম্যার্কেলকে সরকারের নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর মতো হুমকির মুখোমুখি হতে হয়েছে৷ শেষ র্পযন্ত অবশ্য ম্যার্কেল ও সোহোফার একটি মীমাংসায় এসেছেন৷
এইচআই/এসিবি (রয়টার্স, ডিপিএ, এপি, এএফপি)