মোসুলের ঐতিহাসিক মসজিদ ধ্বংস
২২ জুন ২০১৭মধ্যযুগে নির্মিত আল-নুরি মসজিদ ইরাকেরমোসুল শহরের অন্যতম দ্রষ্টব্য ছিল৷ তিন বছর আগে সেখানেই তথাকথিত ইসলামিক স্টেট নেতা আবু বকর আল বাগদাদি খিলাফত ঘোষণা করেন৷ ২০১৪ সালের জুন মাস থেকে শহরে আইএস-এর কালো পতাকা উড়ছিল৷ বুধবার রাত সাড়ে নয়টা নাগাদ ইরাক ও সিরিয়ায় কোণঠাসা আইএস সেই মসজিদ ও তার বিখ্যাত হেলানো আল হাদবা মিনার বিস্ফোরণে উড়িয়ে দিল৷
মিনারটি প্রায় ৮৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে শহরের প্রতীক হয়ে ছিল৷ উল্লেখ্য, ২০১৪ সালেই আইএস যোদ্ধারা সেই মিনার ধ্বংস করার চেষ্টা করেছিল৷ কারণ, তাদের কট্টর মৌলবাদী ভাবধারার সঙ্গে সেটি খাপ খাচ্ছিল না৷ কিন্তু শহরবাসী মানব-শৃঙ্খল সৃষ্টি করে সে যাত্রা মিনারটি রক্ষা করতে পেরেছিল৷ এবার পবিত্র রমজান মাসের এক বিশেষ দিনে এই স্থাপনা ধ্বংস হয়ে গেল৷
গত প্রায় ৮ মাস ধরে শহরের দখল নিতে যুদ্ধরত ইরাকি সেনাবাহিনী এই খবর দিয়েছে৷ তারা আকাশ থেকে তোলা মসজিদের ধ্বংসাবশেষের ছবিও প্রকাশ করেছে৷ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘটনার একটি ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে৷ উল্লেখ্য, ইরাকের এলিট সন্ত্রাস দমন বাহিনী সিটিএস মোসুল শহরের পুরোনো অংশের অনেকটাই দখল করে ফেলেছে৷ ইরাকি বাহিনীর দাবি, তারা মসজিদের প্রায় ৫০ মিটার কাছে চলে এসেছে৷ বুধবারই তারা মসজিদ দখলের তোড়জোড় করছিল বলে জানিয়েছে৷
ইরাকের প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল আবাদি তাঁর টুইট বার্তায় বলেছেন, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে আইএস কার্যত তাদের পরাজয় মেনে নিয়েছে৷ মোসুল শহর হাতছাড়া হয়ে গেলে ইরাকে আইএস-এর খিলাফত কার্যত শেষ হয়ে যাবে বলে পর্যবেক্ষরা মনে করছেন৷ আইএস নেতা শহর ছেড়ে ইরাক-সিরিয়া সীমান্তে আত্মগোপন করে আছেন বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷
আইএস অবশ্য তাদের আমাক সংবাদ সংস্থার মাধ্যমে মসজিদ ধ্বংসে তাদের জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে৷ তথাকথিত জঙ্গি সংগঠনটির পালটা অভিযোগ, কোয়ালিশন বাহিনীর এক মার্কিন যুদ্ধবিমানের হামলায় মসজিদ ধ্বংস হয়ে গেছে৷
কোয়ালিশন বাহিনীর মুখপাত্র জন ডরিয়ান সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে টেলিফোনে জানিয়েছেন, সেই এলাকায় কোনো হামলা চালানো হয়নি৷ কোয়ালিশন স্থলবাহিনীর প্রধান মার্কিন মেজর জেনারেল জোসেফ মার্টিন বলেন, এটা মোসুল শহরের মানুষের বিরুদ্ধে অপরাধের ঘটনা৷ এই দৃষ্টান্ত নৃশংস এই সংগঠনকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার উদ্যোগের অন্যতম কারণ৷
এসবি/এসিবি (রয়টার্স, এপি)